ফ্ল্যাশ ইন। দৃশ্য-১০। রাত। সবুজের রুম। (সবুজ বেড হতে পড়ে যায়। সেই সাথে ঘুম ভেঙ্গে যায়। সিস্টার সিস্টার বলে চিৎকার করে।) সবুজঃ সিস্টার, সিস্টার, আপনি কোথায়? আমার জন্য পানি নিয়ে আসুন। (অসি'র হয়ে ওঠে) ডাক্তার নার্স এরা সবাই ডাইনী, সবাই আমাকে মেরে ফেলতে চায়, কিন্তু আমি মরব না, আমি কখনই মরব না---। দৃশ্য-১১। রাত। হসপিটালের করিডোর। (সবুজের চিৎকারে ডাক্তার আইরিনের জ্ঞান ফিরে আসে। ডাক্তার আইরিন সিস্টার সিস্টার বলে করিডোরের দিকে এগিয়ে যায়।) ডাক্তারঃ সিস্টার! সিস্টার!! এ কি? কি হয়েছে তোমার? (ধরাধরি করে ডাক্তার নার্সকে সবুজের রুমে নিয়ে যায়।) সবুজঃ কি হয়েছে উনার? ডাক্তারঃ জানি না কি হয়েছে? পানির বোতলটা আমার কাছে দেন। সবুজঃ বোতলে পানি নেই। ডাক্তারঃ আপনাকে বলছি না, পানি কম করে খাবেন। আপনি আমার কথা শুনতে চান না কেন? ডাক্তার কে, আমি না আপনি? সবুজঃ আপনি। (ডাক্তার বক বক করতে করতে অন্য রুম থেকে পানি নিয়ে আসে এবং নার্সের চোখে মুখে পানি দেয়ার পূর্বেই নার্স জ্ঞান ফিরে পায়। অপলক দৃষ্টিতে ডাক্তার আইরিনের দিকে তাকিয়ে থাকে। নিচু গলায় মিন মিন করে বলে)। নার্সঃ ম্যাডাম, কে জানি আমার সাথে কথা বলল। ডাক্তারঃ কেউ তোমার সাথে কথা বলে নি। তুমি রেষ্ট নাও। সব ঠিক হয়ে যাবে। নার্সঃ আমি এখানে রেষ্ট নিব না। আমি আমার রুমে চলে যাব। ডাক্তারঃ চল তোমাকে তোমার রুমে দিয়ে আসি (দু’জন রুম থেকে বের হয়ে যায়, সবুজ হা করে তাকিয়ে থাকে)। দৃশ্য-১২। রাত। হসপিটালের অফিস রুম। (ডাক্তার আইরিন ভয়ে ভয়ে অফিস রুমে ঢুকে অগোছালো কাগজ-পত্র ঠিকঠাক করে রেখে সাথীর ডেথ সার্টিফিকেট যত্ন সহকারে হাতে নিয়ে দেখতে দেখতে সবুজের রুমের দিকে এগিয়ে আসে।) দৃশ্য-১৩। রাত। হসপিটাল সবুজের রুম। (সবুজ বেডে শুয়ে থাকে।) ডাক্তারঃ (মৃত্যুর সনদ হাতে নিয়ে) অনেক খোঁজাখুঁজি করে সাথীর ডেথ সার্টিফিকেট বের করলাম। সবুজঃ কেন? সাথীর ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে আপনি কি করবেন? ডাক্তারঃ আচ্ছা, সাথীর প্রেতাত্মা কতদিন যাবৎ আপনাকে ডিস্টার্ব করে? সবুজঃ সাথীর মৃত্যুর সপ্তাহ খানিক পর থেকে। ডাক্তারঃ সাথীর সাথে আপনার কতদিনের সম্পর্ক ছিল? সবুজঃ প্রায় ছয় বৎসরের। ডাক্তারঃ আপনি কি এখনও সাথীকে নিয়ে ভাবেন? সবুজঃ অবশ্যই ভাবি। ডাক্তারঃ কি ভাবেন? সবুজঃ ভাবি সাথীর প্রেতাত্মা যেন আর আমার কাছে না আসে। আমাকে কোন প্রকার ডিস্টার্ব না করে। আমি আমার হারিয়ে যাওয়া অতীতকে ভুলে যেতে চাই। ডাক্তারঃ আপনার বিষয়টা খুব সিরিয়াস। নিজের চোখে না দেখলে কখনই আমি বিশ্বাস করতাম না। এসব ভূত-প্রেতে আমার কখনই কোন প্রকার বিশ্বাস ছিল না। কিন্তু আজ? আজ নিজের চোখে যা দেখলাম তা অস্বীকার করার কোন উপায় নেই। সবুজঃ আপনি নিজে চোখে দেখলেন বলেই বিশ্বাস করলেন। কিন্তু অনেকেই এই বিষয়টা বিশ্বাস করতে চায় না। ডাক্তারঃ অনেকের বিশ্বাস না করাটাই স্বাভাবিক। তবে আমি বিষয়টা অত্যন- গুরুত্ব সহকারে দেখব, ভূত-প্রেতের বিষয়টা নিয়ে নতুন কিছু করব। কিন্তু আপনি ভয় পাবেন না। সবুজঃ কি করবেন? ডাক্তারঃ ভূত নিয়ে আমার যে কৌতুহল আছে তা বাস-বে রূপদান করার চেষ্টা করব।------------------। দৃশ্য-১৪। রাত। নার্সের রুম। (ডাক্তার আইরিন নার্সের রুমে প্রবেশ করে এবং তারা ভূত নিয়ে কথাবার্তা বলে।) ডাক্তারঃ শিরিন----- তুমি করিডোরে কি দেখেছিলে? নার্সঃ দেখলাম ইয়া লম্বা সাদা পোশাক পড়া একজন মানুষ করিডোরে দাঁড়িয়ে আছে। আমি বললাম, কে ওখানে? কে ওখানে? ডাক্তারঃ তারপর! তারপর কি হলো? নার্সঃ তারপর! তারপর সাদা পোশাক পড়া মানুষটি দু‘হাত নেড়ে কর্কশ গলায় বলল আমি রক্ত পিপাসু। আমি রক্ত খাব। আমি সবুজের সাথী। ডাক্তারঃ তারপর? নার্সঃ তারপর লোকটি বিকট শব্দে হাসি দিয়ে বাতাসের সাথে মিলিয়ে গেল। এরপর কি হলো, আমি আর বলতে পারি না। ডাক্তারঃ শিরিন, তুমি কি এর আগে কখনও এমন কিছু এই হসপিটালে দেখেছিলে? নার্সঃ না ম্যাডাম, দেখি নি। ডাক্তারঃ তুমি কি ভূত-প্রেত বিশ্বাস কর? নার্সঃ হ্যাঁ, করি। ডাক্তারঃ তুমি যে রকম ভূত বিশ্বাস করো, আর আজ যে ভূত দেখলে তার মাঝে কি মিল আছে? নার্সঃ হ্যাঁ, অনেক মিল আছে। (ভূত নিয়ে অবিরাম কথাবার্তা চলে) ====চলবে====