মায়ের মুখ থেকে শুনা। তখন আমি ধরাতেও আসিনি,মায়ের ইচ্ছে ছেলে হলে স্বর্ণের ঢলু(ছুরি)দিয়ে নাভী কাঁটবে।আর যখন ধরনীতে এসেছি মায়ের ইচ্ছে পূরণ করা হল।সেই ছোট বয়সে সাধারণত সবারি জটিল কঠিন রোগে ভুগতে হয়।ধারাবাহিকতায় এই রোগ আমাকেও ছাড় দেয়নি,পাকড়াও করলো কঠিন রোগে। নিত্য হই আমি অসুস্ত,পৌঁছি প্রায় মৃত্যুর দোয়ারে।সে যুগের ময়-মুরব্বীর মস্তভর্তি জ্ঞানের সিদ্ধান্তে স্বর্ণের ঢলু খানা মা-জননী দান করিল কুন্চুম্মারে(কুলচুমার মাকে)।হোমেওপ্যাথিক ডক্তর তমিজ চাচার অস্ত্রপাচারে পঁচন ধরা জটিল রোগ থেকে রক্ষা পায় আমার দেহখানি। জগতে বিচরণ করাতে মোরে সৃষ্টিকর্তা লিখিয়াছিল বলে বেঁচে ওঠি মৃত্যুর পথ হতে। মায়ের কুলজগতের কুলকাহিনী বর্ণনা দেয় মাজননী-যখন আমি হাঁসতে শিখি,হাঁটতে শিখি,বুঝি ধরনীর ধারা।সেই অবুঝ বেলায় দুস্ট আমি মিষ্টি ভাষায়,দাদী কুন্চুম্মারে নিত্য জালায়-আমার স্বর্ণের ঢলু আমায় দিতে,যা কখনো সম্ভব না। একদা দাদীরে আমার বাড়ীর সামনে মুরগির চানা হাতে পথ চলিতে দেখি।বাঙ্গালীর সেই পূর্বের সাহস বাড়ীর পাশে পেলে ধরা,সেই সংস্কৃতি কাজে লাগিয়ে দাদীর হাতে থাকা মুরগির চানা আমায় দিতে বললে দাদী একটা শর্ত দেয়।শর্ত হল দাদীকে একটা নারিকেল দেওয়া,খালের পাড়ের নারিকেল গাছ থেকে একটি নারিকেল দিলাম। সেই থেকে শুরু হল শখে পালন মুরগি। একটি মাত্র মুরগির চানা,চানাটি বুঝিত আমার আওয়াজ।আমি বাড়ী থাকলে আমার সাথে থাকত। লাল টুকটুকে ডানা,বেড়ে ওঠলে দেখি চানাটি মুরগ হল,সে যেন গর্জনে বাঘ।মনে বড় আশা ছিল চানাটি বড় হয়ে বাঁচ্চা দেবে,আসলে জানতাম না মুরগ যে ডিমও দেয় না। একদিন ড়ম্মার বুদ্ধিতে(বড় আম্মু)১৩৫ টাকা(একশত পঁয়ত্রিশ)মূল্যে শখে পালন মুরগটি বিক্রি করি,১২০ টাকা(একশত বিশ)দামে অন্য একটি মুরগি ক্রয় করি চকিনাব্বুর কাছ হতে(চকিনা আপা)। যেদিন ক্রয় করিলাম সেদিন হতেই ডিম দিচ্ছিল মুরগিটি। কিছু দিন যেতে না যেতেই শুধু হল মুরগির বংশ বিস্তার। হৃদয়ের অথৈ সাগরে বিশাল একটা আশা ছিল মুরগি/মুরগ বিক্রি করে ছাগল পালন,ছাগল বিক্রি করে গরু। গরু দ্বারা গরুর গাড়ী চালন,সে গরুর গাড়ীতে গুরুত্বের সাথে গুরুর কন্যা মোর সমশ্রেণীতে পড়ুয়া অপমানকে নিয়ে গহিন বনে ঘুরা। অবশেষ,জীবন সংগ্রামে লিপ্ত হয়ে ক্ষয়িল সব স্বপ্ন।