এই পৃষ্ঠা প্রিন্ট করুন
শনিবার, 31 মার্চ 2018 20:23

ফেইসবুক ফ্রেন্ড

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(1 ভোট)
                ফেইসবুক ফ্রেন্ড
                             মোঃ মোশাররফ হোসেন

একটু আকটু লেখালেখি করি।ছোট বেলা থেকেই আমি কিন্তু লিখতে চাইতাম। জানিনা ইচ্ছা,না স্বপ্ন বলবো।তবে হ্যা লিখতে ভালবাসতাম।বড় ভাইয়ের মুখে তার বন্ধুদের লেখালেখির গল্প শুনেই আমার লেখালেখির আগ্রহ।আর তাই সেই দ্বারা বজায় রেখে সবেমাত্র  দুই একটা লেখা প্রকাশের চেষ্টা করতে লাগলাম।আর এর প্রেক্ষিতেই ফেইসবুকে তুফান সাহিত্য সভা নামে একটি গ্রুপ পেয়ে সেখানে কবিতা আপ করি।ঐ সভা থেকে যখন একটি ভার্চুয়াল সার্টিফিকেট পাই তখন যেন উৎসাহ আরো বেড়ে গেল।এরপর থেকে প্রায়ই কবিতা, ছড়া আপ দিতাম।এবং সেখান থেকে তিনটি বিজয়ী ভার্চুয়াল সার্টিফিকেট কপি পাই। ইতিমধ্যে মনের অজানতেই আমি সাহিত্য রস নামের একটি সংগঠনের সাথে যুক্ত হই।একটা কথা বলে রাখি ভাল লেখি না,তা আমি নির্দ্বিধায় বলতে পারি।কিন্তু আমি তাও বলতে গিয়ে বাধা প্রাপ্ত হই।কেননা আমি যে বাঙালি আমরা নিজের প্রশংসা করতেই ভালবাসি।তাছাড়া আমি অন্য দশজনের মত অত ভালও নয় বটে তাই নিজের টাকে আমি সর্বদা সেরা হিসেবে বিবেচনা করি।আবার একেবারে যে অযোক্তিক তাও বলি না কারন নিজের উপর যদি ভরসাই করতে না পারলাম।তাহলে অন্যে আমার উপর ভরসা রাখবে কি করে।যা হোক আসল কথায় আসি আমাদের সম্পাদক সাহেব একটি যৌথ কবিতা তৈরি করতে পোষ্ট দিলেন।একটি লাইন দিলেন"আমি বাতাসে ভেসে যাত্রা শুরু করব"
আমিও চেষ্টা করলাম।ঐ একটি লাইন নিয়ে আমি একটি কবিতা লিখলাম।লেখাটি ছিল..

            #ইচ্ছেঘুড়ি

আমি বাতাসে ভেসে যাত্রা শুরু করব
আকাশে আমার তরী থামাবো,
মেঘের সাথে মিতালী করে গল্প শুনিবো
আসুক যত প্রলয় শিখা রুখে দাঁড়াবো।

ইচ্ছেটাকে ঘুড়ি বানিয়ে নীল আকাশে উড়াবো
আত্মপ্রত্যয় সুতা হবে,আপন হস্তে নাটাই ঘুরাবো;
বলে বলুক মন্দ লোকে,তাতে কিবা হবে
আমার জয় আমাকে ছিনিয়ে আনতে হবে।

হাসুক লোকে,দেখুক আখি মেলে
ছিঃ ছিঃ বলে থু ফেলুক মাটির তরে,
থেমে থাকার পাত্র নয় আমি
যুদ্ধ করতে শিখেছি,যুদ্ধ করতে জানি..।

নিন্দুকের নিন্দায় দোষত্রুটি যাবে মুছে
অজানা ভুলগুলো পড়বে খসে খসে।
বাংলার রক্ত আমার দেহে,ঝরা ঘামে বাংলার গন্ধ
আমি বাংলার সন্তান,আমি গর্বিত বাঙালী।

ঐ লেখাটিতে পাচজন লাইক   দেয়।এর মধ্যে সোনালী সোনালী নামের একটি আইডি ছিল।এই আইডি থেকে একটি ফ্রেন্ড রিকোয়েস্টও আসে।আমি তৎক্ষনাৎ প্রোফাইলে ঢুকে দেখি। মেয়ে আইডি এট কোন ফ্যাক আইডি নয়।তবে নামটি মনে হয় ফ্যাক।কারন সোনালী সোনালী নাম হয় না।হতে পারে সোনালী।কিন্তু আমার একটি আবার দোষ আছে তাহলো কোন রিকোয়েস্ট  আসলে ভাব দেখানোর জন্য ঝুলিয়ে রাখি না আবার মেয়ে হলেই যে একসেপ্ট করব তাও না।দোষটি হলো আমি কোন রিকোয়েস্ট আসলে আগে তার প্রোফাইল নেড়ে দেখি।কেননা কারো সাথে বন্ধুত্ত্ব করতে হলে তার সকল হিস্টোরি জানতে হয়।যার কোন কিছুই জানলাম না তার সাথে বন্ধুত্ত্ব হবে কও করে।এরপর আমি দেখতে পাই সে বাংলার কিশোরগঞ্জের একজন মুসলিম মেয়ে।তিনি আমাদের সাহিত্য রসের একজন সদস্য।তাই আমি রিকোয়েস্টটি   একসেপ্ট করলাম।একসেপ্ট করা মাত্রই টিরিং টিরিং করে বেজে উঠলো মোবাইলের নটিফিকেশন বেল।এটা ম্যাসেঞ্জারের নোটিফিকেশন।চেয়ে দেখি লেখা আছে 'অসাধারন কবিতা লিখেন'।আমি আবার উত্তর দিলাম জানি না তবে চেষ্টা করি।এভাবে কোন বিনিময়সূচক বাক্য ছাড়াই আমাদের কথা হতে থাকে।এক সময় ঐ সময়ের জন্য বিদায় নিই।এরপর আবার বিনিময় সূচক বাক্য প্রয়োগ করেই আমাদের কথা হয়।সে আমার সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে যেমন আমার জেলার নাম কি? আমিও ইত্যাদি প্রশ্ন করি।আমরা আপনি আপনি করেই কথা বলতাম।সম্ভবত সে আমার বড় হবে।যদিও বড় হবে।আমাদের বন্ধুত্ত্ব বেশ ভালই।কেননা বন্ধুত্ত্ব হচ্ছে একটি মুক্ত বন্ধন,যে বন্ধনে কোন বয়স লাগে না, যে কারো সাথে জড়ানো যায়।বন্ধত্ত্ব হচ্ছে মু্ক্ত মনে ভালবাসা,সম্পর্ক যে কারো সাথেই গড়ে উঠতে পারে মনের মিল থাকলে।বন্ধুত্ত্ব কোন বয়স মানে না।মানে না কোন ভেদাভেদ।বাবা ছেলের সাথে,ভাই বোনের সাথে,মা সন্তানের সাথে বন্ধুত্ত্ব করতে পারে । ক্রমাগত সে আমাকে ভালই বলে যেতে লাগে।আর আমিও তার বিপরীত।নিজেকে ছোট করেই বলতাম।ঐ যে একটা গুন আছে যে কেউ আমাদের প্রশংসা করলে নিজেকে বড় বড় মনে হয়।তবে সামনাসামনি ওটা মেনে নেই না। মনে মনে খুশি হলেও উপর দিয়ে একটা ভাব দেখাই। যেন আমি তাতে ফুলছি না।আমিও তাকে ভালই বলি।এভাবে আমাদের আলাপ চলতেই থাকে।আমরা এক সময় বন্ধত্ত্বে পরিণত হই।খুব ভালই সম্পর্ক হয়ে ওঠে আামদের।আমি তো একদিন তাকে বলেই ফেললাম আপু আপনি ঝগড়া করতে পারেন?সে উত্তর দিলো এটা তো সবাই পারে।তবে কেন?আমি বলি আসুন আমরা ঝগড়া করি।আমি ঝগড়াটে আপুদের বেশী ভালবাসি।তাদের মনটা ফ্রেশ থাকে।ঐ যে কথায় আছে 'রাগ গাঙে চর পড়ে তাড়াতাড়ি।আপনার সাথে প্রথমে ভাল ভাবে সম্পর্ক না হয়ে প্রথমে দুআদটু জগড়া হলে ভাল হতো কারন প্রথমে জগড়া হয়ে বন্ধুত্ত্ব হলে তা ভাল থাকে।কিন্তু প্রথমে ভাল ভাবে সম্পর্ক হলে তা খুব বেশী স্থায়ী হয় না।ও একটু মুচকী হেসেছে।যদিও আমি দেখি নাই।তবু আমার মনে হলো একথা শোনার পর ও হেসেছে।অবশ্য এ কথার কোন ভিত্তি নেই।তবে আমার বেশ সত্যি বলেই মনে হয়।আমাদের বন্ধুত্ত্বের সম্পর্ক বেশ দৃঢ় হতে লাগলো।আমরা কখনো আপনি কখনো তুমি বলেই কথা বলতাম।অবশ্য আপু আমার বড় তবু আমাদের বন্ধুত্ত্ব সেই বাধা দুরে ঠেলেই রাখতো।সে আমার দেশের পদ্মানদীর কথা শুনে তো বেশ!  আমাকে রীতি মত ভাগ্যবান বলেই আখ্যা দেয়।আসলেই আমি ভাগ্যবান বাংলার বুকে জন্মে।মাঠ ভরা সোনালী ফসল,কৃষকের গোলা ভরা ধান।নদী ভরা মাছ।বিকেল হলে নদীর পাশে গাছের নিচে বসে প্রকৃতি আবার সন্ধ্যা হলে, চাদনী রাতে তারা ভরা আকাশ দেখতে কত ভাল লাগে শুধু সেই জানে।যার এই ভাগ্য হয়েছে।আমার এলাকার প্রতি তার ভালবাসা দেখে আমি সোনালীকে আমার এলাকায় থেকে বেড়িয়ে যেতে আমন্ত্রন জানাই। জানতে পাই তাসমিয়ার মামা বাড়ি মেঘনা নদীর কাছে জীবনে সে একবার তার মামা বাড়ি বেড়াতে এসেছিল।তখন মেঘনা নদী দেখে সে খুব উপভোগ করেছিল।তাসমিয়া সোনালীর ডাক নাম।কিন্তু আমি ডাকতাম তাকে পাগলী আপু বলে।পাগলি শব্দটা আমার বেশ পছন্দ।কারন তো পূর্বেই বলেছি আমি একটু অন্য রকম পাগলি/ঝগড়াটে মেয়েদের ভালবাসি।এদের মনটা ভাল হয়।যারা ভালবেসে মাতিয়ে রাখে সবকিছু।অল্পতেই সকলকে আপন করে নেয়।আর ইচ্ছামতো আনন্দে মাতে।তাইতো এদের পাগলি বলে।আর তার ডাক নামটা আমি পরে জানতে পেড়েছিলাম।আমি জেনে নিয়ে ছিলাম।এভাবে দুই প্রান্ত থেকে চলতে থাকে আমাদের বন্ধুত্ত্ব। আমাদের বন্ধুত্ত্ব এমন ভাবেই দৃঢ় হয় যে আমরা একদিন কথা না বললে ভাল লাগত না।খুব দুষ্টুমীও হতো।দুজন দুজনের মনের কথাও শেয়ার করতাম।মনেই হতো না যে আমরা কোন এক দেশের দুই প্রান্তে দুরের কথা দুই স্থানে আছি।মনে হতো পাশাপাশি বসেই দুজন গল্প করছি।হঠাৎ একদিন কি হলো বুঝতে পারলাম না।সোনালী অনলাইনে আসছে না।কোন যোগাযোগ নেই মনটা কেমন যেন আনচান আনচান করছে।বন্ধুটির আর দেখা পেলাম না।সেই যে দুরে চলে গেল আর কোন খবর পেলাম না।মনে হয় সোনালী আমার উপর রাগ করেছে।নিজেকে ছোট মনে হতে লাগলো।কি এমন দোষ করলাম যাতে বন্ধু আমাকে ভুলে আছে।মনে হয় ঐ যে ভাল সেই ভালই আজ আমার জন্য কাল হয়েছে।না হয় কেন?যদি তার বাড়ি আমার জানা থাকতো অথবা আমার কাছেই হতো তাহলে না হয়।তার কাছে গিয়ে হাত জোর করে ক্ষমা চেয়ে নিতাম।তার পছন্দের কিছু দিয়ে তার রাগ ভাঙাতাম।কিন্তু তাও তো সম্ভব নয়।আবার ভাবছি মনে হয় ওর বিয়ে হয়েছে।জামাই,শশুর-শাশুড়ী নিয়ে নতুন সংসারে বেশ সুখেই আছে।মাঝে মধ্যে কি বন্ধুটার কথা মন পড়ে না?মনে পড়লেও হয়তো দুই ফোটা চোখের জল ঝরানো ছাড়া কোন উপায় নেই।কারন সোনালী যে মেয়ে।ছেলে হলে হয়তো কিছু একটা করতে পারতো।হয়তো এখনো বিকেল হলে বন্ধুর সাথে কথা বলে সময় কাটানোর সেই কথা মনে পড়ে।আবার হয়তো স্বামীর কাধে মাথা রেখে গল্প করতে করতে সব ভুলে যায়।যেখানে যেভাবেই থাকুক আমার বন্ধু ভাল থাকুক সুখে থাকুক।এমন আরজিই করছিলাম।আজ আবার  অনেক দিনপরে মোবাইলে নটিফিকেশন বেজে উঠলো টিরিং টিরিং।এতো দিনও বেজেছে তবে আজকেরটা একটু কেন যেন ভিন্ন মনে হচ্ছে।হ্যা আজকে আমার সেই বন্ধু সোনালী ম্যাসেজ করছে।লেখা আছে বন্ধু তুমি কেমন আছো?আমায় কি ভুলে গেছো?বিশ্বাস করো আমি তোমাকে ভুলিনি।শুধু বিধাতার দেয়া বাধা/ নিয়ম  যাই বলো ওটা ভেঙে আমি তোমার সাথে যোগাযোগ করতে পারনি।আনন্দে আমার চোখ দিয়ে অঝরে অশ্রু ঝরছে।আামার বন্ধু আমাকে মনে রেখেছে।আজ আবার আমার বন্ধুর সাথে কথা হবে....।            
            
702 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ শনিবার, 31 মার্চ 2018 20:28
শেয়ার করুন
মোঃ মোশাররফ হোসেন

আমার নাম মোঃ মোশাররফ হোসেন।পিতার নাম আঃ মান্নান বেপারী মাতার নাম মজিদা বেগম। ২৫ ডিসেম্বর শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানাধীন বি কে নগর কাজী কান্দি মাতুল আলয় জন্ম গ্রহন করি।পৈত্রিক নিবাস একই থানার পূর্ব নাওডোবা মঙ্গল খার কান্দি।ভাইবোনের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। এলাকার চরখাগুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেনি পাশ করি।পরে পূ্র্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হলেও বি কে নগর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জে এস সি এবং পূ্র্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে এস এস সি পাশ করি।বর্তমান ঢাকায় জিনজিরা পি. এম. পাইলট স্কুল এ্যান্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক চূড়ান্ত বর্ষে। পারিবারিক ও অন্যান্য কারনে পড়ালেখা বাঁধা প্রাপ্ত হয়।নিজ চেষ্টায় পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ায় পড়ালেখার গতি ধীরস্থির।এছাড়াও আমার এখন বেশি পড়তে ভাল লাগে না।তবে সাহিত্য: জীবন কাহিনী,গল্প, উপন্যাস, ছোট গল্প, স্মৃতিচারন মুলক ও স্বাবলম্বী ভাষায় লেখা বই পড়তে বেশ ভাল লাগে।আমার স্বপ্ন ছিল অনেক কিন্তু সৃষ্টি প্রদত্ত কিছু গুন ও পারিপার্শ্বিক কারনে সবার সব সম্ভব হয় না।এখন আমার স্বপ্ন সাংবাদিক হবো এবং পাশাপাশি লেখক।ছোটবেলা চাচাতো ভাইয়ের মুখে তার বন্ধুর ডাইরি ভর্তি লেখার গল্প শুনি আর স্বপ্ন দেখি আমিও লিখব।সেই স্বপ্ন থেকেই আমার কলম গতিশীল। তাছাড়া আমার লেখনির পিছনে আরো একজনের কথা না বললেই নয়, সে হলো আমার আপন বন্ধু, বন্ধু সুলভ বোন মোসাঃ রুমা আক্তার।যার উত্সাহ আমার শক্তি হিসেবে কাজ করে। মা-বাবা, বড় ভাইয়ের ভালবাসাই আমার জীবনের সম্পদ।

মোঃ মোশাররফ হোসেন এর সর্বশেষ লেখা

3 মন্তব্য