স্বীকার করছি কিছুটা বিস্মিত আমি। ঘুম ভাঙার পর যেমন বিস্মিত হয়েছিলো আসহাবে কাহাফ, নিজের জাতিকে দেখে লুত নবী এবং প্রতিপক্ষের মূর্খতায় মহাবীর অর্জুন। স্বীকার করছি কিছুটা বিস্মিত আমি, শহীদ মিনারে মানুষের চেয়ে জীবজন্তুর আধিক্য দেখে, বীরদের বুকের উপর মঞ্চায়িত প্রহসন দেখে, নিরেট নির্বোধের মতো শেখা বুলি জাবর কাটা দেখে- বিস্মিত আমি। অথচ মানুষের মতোই একজোড়া হাত ছিলো সবার, একজোড়া পা এবং স্বাভাবিক নাক-কান-চোখ ছিলো, ছিলো সর্বোচ্চ সামর্থ্যের পোশাক অবিকল মানুষের মতো। তবুও ভীষণ অবাক আমি। তাদের পায়ে দুর্বলকে থেতলে আসার রক্ত ছিলো, বাপের, বোনের, মায়ের সহায় হত্যা করার সাক্ষ্য ছিলো হাতগুলোতে। চোখের ভেতর আগুন ছিলো, নখের ডগায় লিপ্সা ছিলো, একলা পেয়ে শুদ্ধ নারীর সব হরণের চিহ্ন ছিলো ঠোটে। সত্যি ভীষণ অবাক আমি। ওদের মাঝে ধর্মাবেশে ক্ষুধার্ত সব শেয়াল ছিলো, ভীনদেশীদের দালাল ছিলো, রামের সাজে রাবণ ছিলো এক কাতারে। স্বার্থ কাছে বিবেক বেঁচা সভ্য সুশীল গাধাও ছিলো খুব নগণ্য মানুষগুলো চুপটি মেরে দেখতে ছিলো পাছে। সত্যি ভীষণ অবাক আমি। তারিখটা ঠিক একুশ হলেও একুশ যেনো সঠিক স্থানে নেই, মানুষ হবার, মুক্ত হবার, মহান হবার শিক্ষা ছুড়ে ফেলে- ক্রমান্বয়ে একুশটাকেও বানিয়ে নিছে নেহাৎ উৎসবেই।