এই পৃষ্ঠা প্রিন্ট করুন
বৃহষ্পতিবার, 20 আগষ্ট 2020 13:59

১৯৪১ সাল নির্বাচিত

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(0 টি ভোট)
                নীল সমুদ্রের ইশারা- 
অন্ধকারে ক্ষীণ আলোর ছোট ছোট দ্বীপ, 
আর সূর্যময় দিনের স্তব্ধতা; 
নিঃশব্দ দিনের সেই ভীরু অন্তঃশীল 
মত্ততাময় পদক্ষেপঃ 
এ সবের ম্লান আধিপত্য বুঝি আর 
জীবনের ওপর কালের ব্যবচ্ছেদ-ভ্রষ্ট নয় 
তাই রক্তাক্ত পৃথিবীর ডাকঘর থেকে 
ডাক এল- 
সভ্যতার ডাক 
নিষ্ঠুর ক্ষুদার্ত পরোয়ানা 
আমাকে চিহ্নিত ক'রে গেল। 
আমার একক পৃথিবী 
ভেসে গেল জনতার প্রবল জোয়ারে। 
মনের স্বচ্ছতার ওপর বিরক্তির শ্যাওলা 
গভীরতা রচনা করে, 
আর শঙ্কিত মনের অস্পষ্টতা 
ইতস্ততঃ ধাবমান। 
নির্ধারিত জীবনেও মাটির মাশুল 
পূর্ণতায় মূর্তি চায়; 
আমার নিষ্ফল প্রতিবাদ, 
আরো অনেকের বিরুদ্ধে বিবক্ষা 
তাই পরাহত হল। 
কোথায় সেই দূর সমুদ্রের ইশারা 
আর অন্ধকারের নির্বিরোধ ডাক! 
দিনের মুখে মৃত্যুর মুখোস। 
যে সব মুহূর্ত-পরমাণু 
গেঁথেছিল অস্থায়ী রচনা, 
সে সব মুহূর্ত আজ 
প্রাণের অস্পষ্ট প্রশাখায় 
অজ্ঞাত রক্তিম ফুল ফোটে।।            
            
587 বার পড়া হয়েছে
শেয়ার করুন
সুকান্ত ভট্টাচার্য

সুকান্ত ভট্টাচার্য (১৫ই আগস্ট, ১৯২৬ - ১৩ই মে, ১৯৪৭) বাংলা সাহিত্যের মার্কসবাদী ভাবধারায় বিশ্বাসী এবং প্রগতিশীল চেতনার অধিকারী তরুণ কবি। ১৯২৬ সালের ১৫ আগস্ট মাতামহের ৪৩, মহিম হালদার স্ট্রীটের বাড়ীতে,কালীঘাট,কলকাতায় তার জন্ম।। তাঁর পৈতৃক নিবাস ছিল ফরিদপুর জেলার, বর্তমান গোপালগঞ্জ জেলার কোটালীপাড়া উপজেলার, উনশিয়া গ্রামে। ১৯৪৫ সালে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে অকৃতকার্য হন। এ সময় ছাত্র আন্দোলন ও বামপন্থী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত হওয়ায় তাঁর আনুষ্ঠানিক শিক্ষার সমাপ্তি ঘটে। সুকান্তের বাল্যবন্ধু ছিলেন কবি অরুনাচল বসু। সুকান্ত সমগ্রতে লেখা সুকান্তের চিঠিগুলির বেশিরভাগই অরুনাচল বসুকে লেখা। অরুনাচল বসুর মাতা কবি সরলা বসু সুকান্তকে পুত্রস্নেহে দেখতেন। সুকান্তের ছেলেবেলায় মাতৃহারা হলেও সরলা বসু তাকে সেই অভাব কিছুটা পুরন করে দিতেন। কবির জীবনের বেশিরভাগ সময় কেটেছিল কলকাতার বেলেঘাটার ৩৪ হরমোহন ঘোষ লেনের বাড়ীতে। সেই বাড়িটি এখনো অক্ষত আছে। পাশের বাড়ীটিতে এখনো বসবাস করেন সুকান্তের একমাত্র জীবিত ভাই বিভাস ভট্টাচার্য। পশ্চিমবঙ্গের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সুকান্তের নিজের ভাতুষ্পুত্র।

সুকান্ত ভট্টাচার্য এর সর্বশেষ লেখা