দাতার প্রধান জাফর নিত্য দান করে দুঃখী জনে, তাহার তুল্য নাহি বদান্য বিশ্বাস মনে মনে | একদা সহসা উদ্যানমাঝে সান্ধ্যভ্রমণ কালে, হেরে তার দাস ক্ষুধায় কাতর বসে আছে আলবালে | দিবস শেষের তিনখানি রুটি প্রাপ্য আহার তার একে একে দিল কুকুরের মুখে,–বিচিত্র এ ব্যবহার ! কহিল জাফর, ‘ওরে কিঙ্কর, সারাদিন উপবাসী, দিবস শেষের খাদ্য তাও কুক্কুরে দিলি হাসি ? চমকি বান্দা জোড় হাতে কয়,– ‘মানুষ হয়েছি ভবে, আজিকে ভাগ্যে না হয় আহার, কালি পুনরায় হবে | খোদার এ জীবে আহার কে দিবে ? ক্ষুধায় বাঁচাবে কেবা ? মোরা যে ধরাতে এসেছি করিতে নিখিল জীবের সেবা | কহিল জাফর আঁখি ছল ছল– ‘ আবিসিনিয়ার দাস, আজিকে দর্প করিলি চূর্ণ, ছিঁড়ে দিলি মোহ-পাশ | গুরুর মন্ত্র কানে দিলি তুই, দে রে কোল, বুকে আয় ; দুর্দিনে ধীর সেরা দানবীর তুই দীন-দুনিয়ায় | রাজকোষ যে বা মুক্ত করেছে দাতা নাহি কই তারে, সেই ত্যাগ-বীর বুকের রুধির হেলায় যে দিতে পারে | রে চির বান্দা, নহিস বনদী– দিলাম মুক্তি প্রাণ, এই বাগিচার মালিক হইয়া প্রাণ ভরে কর দান |