শনিবার, 19 সেপ্টেম্বর 2020 23:20

পাক্ষিক ফলাফল-১

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(0 টি ভোট)
                (১) ভালো থাকিস মা 
মাহমুদুল হাসান সোহাগ 

হৃদয়ে লালন করছি তোকে
 পোড়া কপালে জন্ম তোর,
ঘুমিয়ে আছিস বাবার বুকে
 কখনও তোর হয় না ভোর।

মিষ্টি মুখের আলতো ডাক
 শুনতে আমার মন চাই,
বন্ধ ঘরের চার দেয়ালে
 তোর ছায়া খুঁজে বেড়াই।

ছোট্ট হাতের কোমল ছোঁয়া 
 হাতছানি দিয়ে ডাকে আমায়,
বুকে পাথর রেখেছি বেঁধে 
 নিয়তির বড় নিষ্ঠুর বাঁধায়।

তোর ছোট্ট মনের চাওয়াগুলো 
 ফুটিলো না ফুল হয়ে,
কুঁড়িতেই সব ঝরে গেল
  দুঃখ কষ্ট সয়ে সয়ে।

কল্প চোখে দেখি তোকে
 কল্পনাতেই সব কথা বলি,
নিত্য আমি তোর সাথে 
 স্বপ্নের পথে হেঁটে চলি।

তোর হাসি,তোর কান্না 
 দূরে বসে স্বপ্নে আঁকি 
আদর স্নেহের উষ্ণ পরশ
 সবকিছু তোর রইলো বাকি।

দুই বছর শেষ আজ
 কাল তিনের প্রথম ভোর
দোয়া করি প্রভুর তরে
সুখের জীবন হোক তোর।
  ===============

(২) মায়া ভরা 
মোঃ বাবুল 

ভোর বেলা করে খেলা, 
  মধুমতী গায় গান
সুর তুলে দূরে চলে, 
  মায়া ভরা কলতান, 
    মায়াবতী মায়া ছলে,
    ফুলে ফুলে মধু ঢলে, 
সুখ পাখি দলে দলে, 
  মন ঘেঁষে মারে টান,
লুকোচুরি করে ভবে, 
  কায়া দেখে বাড়ে মান।

মন পাখি হেলেদুলে,
  রঙ মাখা নিয়ে ধন,
বেলা শেষে যায় ফিরে, 
  নিজ দেশে নিয়ে মন,
    রঙ মেখে যার সনে,
    বাসা বাঁধে তার মনে,
রঙধনু রঙ ধনে, 
  পথ চলে নিজ মতে,
সুখ পাখি যায় হেসে,
  নিয়ে আশা নিজ রথে।

রঙ মাখা রঙ দেখে, 
  যায় মন ভরে দম, 
স্বাদ গুলো চোখ ভরে,
  আরো স্বাদ খোঁজে মম,
    মিছামিছি মায়া গড়া, 
    সুখ তরে আধা মরা,
খেলা টুটে বেলা ধরা, 
  হবে পাখি নিজ হারা,
শেষ দিনে শতো ঋণে,
  হবে পাখি সাথী ছাড়া। 

মায়া ভরা মোহ খানি, 
  যায় ভুলা কভু স্বাদ,
রূপে গুণে ভরা ধরা, 
  বেঁধে আছে কতো ফাঁদ,
    হরদমে--চলে গাড়ি, 
    মধু ভরা রসো হাঁড়ি, 
মন টানে ধনে কাঁড়ি,
  মায়া খানি যাবে ছাড়ি,
সব আশা মিছে হবে,
  নয়া বাসা হবে বাড়ি।
  ===============

(৩) জীবন হলো সীসা
মোঃ বাবুল 

দুঃখের মাঝে লেনাদেনা 
  সুখ পাবার ঐ আশে,
সুখের পরশ যায় না ধরা
  দুঃখগুলো হাসে।

জীবন যৌবন সবই গেলো
  পাইনি সুখের দেখা,
ভাগ্যে জানি মাওলা আমার
  লিখছে কিসের রেখা।

আশার ঘরে বাজাই বাঁশি 
  রাত্রি ঘুমের ঘরে,
গভীর রাতে দুঃখ গ্লানি 
  আঁকড়িয়ে মন ধরে। 

ধরার বুকে যাচ্ছে ক্ষয়ে
  সোনার জীবন তরী,
ভাঙ্গা নায়ে পাল উড়িয়ে 
  আর কতকাল ছড়ি। 

ধুঁকে ধুঁকে যায় গড়িয়ে 
  শূন্য যতই দিশা,
দুঃখ ব্যথায় কাতর হয়ে
  জীবন হলো সীসা।
  ===============

(৪) এক শৈশবের ছবি
ড. সালাম আকন্দ 

তাকে দেখেছিলাম শৈশবে 
বৈলাম ধানের ক্ষেতের আইলে
কি নিমগ্ন সে বই হাতে!
চারদিকে চলছে সবুজ টিয়ার 
অন্নপ্রাশন! 
আমার প্রিয় গন্তব্যের পথের পাশে
সে ছিল নিতান্তই শিশু তখন
আমি অবাক দৃষ্টিতে চেয়ে দেখলাম
আমার ঔৎসুক্য তার কাছে টেনে  নিয়ে গেল
আমি দেখলাম বিদ্যাগ্রহী এক অবুঝ অসহায় শিশুর
দুটি নিষ্পাপ চোখের ঝিলিক! 
তার সাথে অনেক কথা হ'ল
সেই থেকে আমাদের  সখ্যতা
তাকে বিদ্যার্থে উৎসাহিত করলাম।
দারিদ্র তাকে দমিয়ে রাখতে পারেনি
দিনে দিনে সে শিক্ষিত হ'ল
কর্মজীবনে সে অনেক উপরে উঠে গেল
সে হল আমার একজন আইকন!
আমি ভালবাসি সেই অজানা শিশুটিকে
কিন্তু সেই  শিশুটি কি
আমাকে মনে রেখেছে? 
আজ সে একজন বড় কবি
আমার মনে আজো গেঁথে আছে
 তার শৈশবের ছবি!
  =============

(৫) ডালকুত্তা
বিকাশ চক্রবর্তী

ওঁৎ পেতে রয় মাঠে-ঘাটে
  খেত খামার হাটবাজারে,
সবখানেই পদচারণা
  গ্রামগঞ্জ শহর বন্দরে।

সুযোগ পেলে ছোবল মারে
  চুষে খায় রক্ত-মাংস-হাড়,
কালো টাকা সাদা করে
  ভাঙ্গে মানবিকতার ঘাড়।

আপন পর নেইকো বিচার
  জ্ঞানী-গুণি-সেবক সেবিকা,
রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুরভিসন্ধি
  প্রহসন প্রহেলিকা।

স্বীয় স্বার্থ চরিতার্থ
  ডালকুত্তাদের স্বভাব,
ঢাল তলোয়াড় সঙ্গী করে
  সমাজে খাটায় প্রভাব।

যাক না সমাজ রসাতলে
  কী হবে ভাই তাতে?
ডালকুত্তাদের থাকতে হবে
  মুড়কি-ঘি -দুধ-ভাতে।

কখনও যদি আসে অভাব
  ওলট পালট সব,
আগুন জ্বেলে নৃত্য করে
  দোষররা নিরব।
  ===============

(৬) একদিন ছিল সব 
আমিনুর রহমান

একদিন ছিল সব, রঙিন রঙিন আশা
কেন যে সেইদিনগুলো আসে না
কত শত গান লেখা, অভিমানে চোখ মোছা
সেই প্রেয়সী কেন ভালবাসে না।

এলোমেলো মন যেন, খুঁজে ফেরে সেই চোখ
যেই চোখে ছিল চেনা ঠিকানা
কত রাগ-অনুরাগে, কত মান অনুভবে
সে ছিল বেঁচে থাকার প্রেরণা।

সাহারাসম তৃষা হারিয়ে ফেলি দিশা
কোথায় পালিয়ে গেল আমি জানি না
নয়নে নয়ন রাখা, মনে মিষ্টি স্বপ্ন আঁকা
চেনা পাখিটা হয়ে গেছে অচেনা।
  ===============

(৭) অন্তরে
এস.এম. ইউনুছ

ইচ্ছে যত সাধ্য তত নয়
কেমন করে পারি দেব
যদি মনে হয়...
কত কথা শত ব্যথা।

কত কিছু হয় মনে...
সারা জীবন যেন আমি
চলি তার সনে।
কে যেন আমায় ডাকে

কানে আসে ক্ষণে ক্ষণে
ভাবি আমি চিনি জানি
মনে পরে কোথায় জানি...
পাই না খুঁজে তারে আমি।

দিবানিশি তালাশ করি
একদিন তো পাব আমি...
বলবো কথা মনের ব্যথা
আছে যা অন্তরে।
  =============

(৮) অস্তিত্ব
এস.এম. ইউনুছ

ফুলদানি ও নেই
যে তোমাকে সাজিয়ে রাখবো
তুমি বলতে পারো, অনেক খুঁজেছি
কিন্তু তুমি যেখানে রেখেছিলে...

সেখানে আসতে তোমার
কোন না কোন বাঁধা ছিলো।
আমি অপেক্ষা করতে গিয়ে,
কেটে গেলো আমার সোনার যৌবন।

তুমি আর এলে না...
ভাবছি, কোথাও যদি খুঁজে
না পাও, হয়তো আসবে ফিরে
পুরোনো অস্তিত্বে।

এলে ঠিকই,
আমি আজ পথ যাত্রী...
ভালো থেকো, সুখে থেকো
কামনা রইলো আমার।
যাবেই তো...
শেষ সমাধি করে যেও।
  ===============

(৯) মানুষ 
নিলুফা ইসলাম 

মানুষ মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে 
সেবার হাতটি দাও বাড়িয়ে।
বিশ্ব ভ্রাতৃত্ব দাও ছড়িয়ে 
মায়ার বন্ধনে বিশ্বকে রাখো জড়িয়ে। 

মাঝে মাঝে মানুষ মনুষ্যত্ব ভুলে 
সভ্যতার নামে অপসংস্কৃতিতে দেশ দেয় ভরে।
মানুষ হয়ে ভাই মানুষকে যারা করে খুন
এটিই কি সত্যিকারের মানুষের গুণ?

নশ্বর পৃথিবীতে ছিলো তোমার অবস্থান, 
এমন কিছু করো যেন,মানব মনে রাখে তোমার নাম।
ঘৃণার চোখে নহে, ভালোবাসা দিয়ে
স্মরণ করে যেন তোমার নাম শ্রদ্ধা ভরে।
মৃত্যুর পরেও যেন থাকে তোমার নাম বিশ্বজুড়ে
সৎ মানুষ হিসেবে গড়ে উঠো আগুনে পুড়ে। 
মানুষ নামের সৌন্দর্য ফুটিতে তাই
সত্যিকারের মানুষের কাজ করে যাই।
বয়স দিয়ে নহে ভাই
কর্ম দিয়ে সবার মন জয় করতে চাই।
  ===============

(১০) বন্দি খাঁচার পাখি
ড. সালাম আকন্দ

বন্দি খাঁচার পাখি
ফন্দি আঁটে শুধু 
পালাবার, মুক্তি পাবার
স্বপ্ন শুধু দেখে।
ঘুরে ফিরে খাঁচার ভিতরেই
রয়ে যায় সে
মুক্তি মিলে না!
দিন যায় মাস যায় বছর কাটে
মুক্তির বার্তা আর
তার কাছে আসে না!
ঘুরতে ঘুরতে একদিন পাখি
ভীষণ ক্লান্ত হয়ে যাবে।
তারপর একদিন তার
প্রাণবায়ু বের হয়ে যাবে
অসীম আকাশে।
পড়ে রবে মরা লাশ!

এখন সে মুক্ত বিহঙ্গ 
ডানা মেলে উড়বে মুক্ত বাতাসে
আকাশের শেষ সীমানায়
নক্ষত্রের মেলায়!
  =============
(১১) এখন শেষ বিকেল
মীর আব্দুল আউয়াল 

আসমুদ্র সাহস বুকে নিয়ে
সাগরের উত্তাল তরঙ্গের 
   টুঁটি চেপে ধরে
  শত টোল সয়েও
  বীরের মত পথ চলেছি।

আজ সেই তমতমি নেই
কালের অমোঘ নিয়মে
  সব তলিয়ে গেছে
  তুলতুলে শরীর নিয়ে
  এখন বিছানায়।

তুলকালামের মত
মন আর এখন নেই 
  বসে বসে ট্যামটেমি বাজাই
  তেউনি সাধুর মত
  জীবন সায়াহ্নে এখন।

আবছা দৃষ্টিতে দুচোখ
  ছলছল করে
চারপাশ শূন্যতায় হাহাকার
  প্রাণপাখি ছটফট করে
অপ্রাপ্তি বড় কষ্ট দেয়।
  =============            
            
493 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ রবিবার, 27 সেপ্টেম্বর 2020 23:09
শেয়ার করুন
এই বিভাগে আরো: « জায়গা জমি শিক্ষা »

2 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.