এই পৃষ্ঠা প্রিন্ট করুন
রবিবার, 27 সেপ্টেম্বর 2020 22:15

নির্বাচিত কবিতা সপ্তাহ-১

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(0 টি ভোট)
                পাপ-পুণ্য
সালাম আকন্দ

জন্মিলে নিষ্পাপ তুমি
পাপী কেন হলে?
পাপে ভরা এই পৃথিবীর 
মায়া জালে কেন জড়ালে।

দুখে ভরা দুনিয়াতে
সুখের আশায় ঘোরো
সুখের দেখা আর হবে না
যদিও রক্ত পানি করো।

কষ্টে ভরা পৃথিবীতে 
কেন পাপের পথে চলো
নশ্বর এই পৃথিবী ছেড়ে
কোন অজানায় যেতে হবে বলো?

স্বর্গের নিষ্পাপ শিশু 
তুমি ভুল করে এসেছিলে
মর্ত্যের পৃথিবীতে
সময় হলে শেষ যেতে হবে চলে।

পরপারে করতে হবে
জবাবদিহি তোমার অপকর্মের 
তবে কেন তুমি কর পাপ
এ কেমন দুঃসাহস তোমার?

মৃত্যুর কাছে তোমায়
করতে হবে সমর্পণ একদিন
তুমি রবে পড়ে আঁধার ঘরে
ছিন্ন করে পৃথিবীর সব বন্ধন।

তাই তো তোমায় বলি
এসো পুণ্যের পথে চলি
সত্যেরে বক্ষে করিয়া ধারণ
যেন হয় সবার মরণ!
[]___π[]π___π[]π___[]

হিংসা
মাহমুদ হাসান

পাপী শয়তান সদা তৎপর, ভ্রান্ত পথে মানুষ
হিংসা রোষে জ্বলে পুড়ে নিত্যদিন যে ছারখার
বহুরূপী হিংসুক পুড়ে নিজ আগুনে বারবার
ভালো কথায় গায়ে আগুন মুখটা তাদের কলুষ!

সারাক্ষণ রঙ্গলীলায় তাদের কাটে বেলা
শুয়ে-বসে গপ্পোবাজী ফন্দি আঁটাই নেশা
পরনিন্দাতে মেতে ওঠা তাদের যেন পেশা
মুঠোফোনে আরও জমে দূর সখীদের মেলা!

দিনে দিনে বাড়ছে উৎপাত যেন তাঁরা রাজা!
নানা ঢংয়ে কাটায় সময় স্ব-গুণকীর্তন ধর্মে
একদিন জানবে জগৎ করতো কপটতা কর্মে
দুষ্ট কর্মের ফল বিধাতা দিবেন শুধু সাজা

নিন্দা হিংসায় জর্জরিত আপন ছাড়া পর নয়!
নিজের ভালো আজ পাগল বুঝে সবাই জানে
এতো হিংসায় সুখ কী মিলে শুনতে ইচ্ছে কানে
হিংসার করুণ এই ব্যাধিতে স্বজন শুধু পর হয়!
[]___π[]π___π[]π___[]

বিপন্ন মানবতা
মোঃ মমিনূর রহমান খন্দকার

চারিদিকে পাপাচার অবিচার অনাচার
সুদ-ঘুষ, খুনাখুন ধর্ষণে,
চরিত্র ক্ষয়ে ক্ষয়ে নৈতিক অবক্ষয়ে
পশুত্বে রূপ নেয় লালসার কর্ষণে।

দিকে দিকে শোনা যায় কতো লোক অসহায়!
নিরীহ মজলুমের শুনি আর্তনাদ!
বিপন্ন মানবতা, তবু কেন নিরবতা?
অন্যায়ের নেই কেন প্রতিবাদ?

উইঘুর আরাকানে, কাশ্মীর আফগানে
কেন ভাই মারো ধরে নিরীহ মুসলমান?
সিরিয়া ও ইয়েমেনে, ইরাক ফিলিস্তিনে
কেন ঝড়ে প্রতিদিন লাখো প্রাণ?

রক্তের স্রোতে ভেসে লাশের মিছিলে মিশে
নিষ্পাপ প্রাণের নিথর দেহগুলো পড়ে রয়,
ঘৃন্য উল্লাসে নেচে খুনিরা খুশিতে হাসে
মানবতার কেন আজ এ চরম পরাজয়?

নীতির পতনে, বিবেকের পঁচনে
মানুষ হয়ে ওঠে জানোয়ার;
হৃদয় বিদীর্ণ করে আকাশে ছড়িয়ে পড়ে
অসহায় মানুষের আর্ত-চিৎকার!

দু'কানে যখন শুনি লাখো মানুষের খুনি
শান্তিতে নোবেল পায় অংসান,
আহত হৃদয়টা ক্ষত-বিক্ষত হয়
মানবতার দেখে এই অপমান।

জ্ঞানীদের বদলে পশুদের আদলে
খুনিদের হাতে গেলে ক্ষমতার মসনদ;
সুন্দর জগতটা, হয় এক কারাগার
মৃত্যু-উপত্যাকা অসহায় জনপদ!

গুম-খুন রাহাজানি, কেন এতো হানাহানি?
ক্ষমতা ও স্বার্থের কেন এতো দ্বন্দ্ব?
জীবনটা দুদিনের, ভয় করো সেদিনের
নিঃশ্বাস যেদিন হবে চিরতরে বন্ধ।
[]___π[]π___π[]π___[]

মোনার সাথে কথা
বিকাশ চক্রবর্তী

আকাশ মেঘলা করিসনে, মেঘমুক্ত আকাশ ঢের পছন্দ করি,
জল ঘোলা করিসনে, মনুষ্যত্বের স্বচ্ছ জলে অবগাহন করি।
কলমী কুসুম ছুঁড়ে ফেলিসনে, কলমী আমার পছন্দের ফুল,
তোর ছুঁড়ে ফেলা আলপিনটাও সযত্নে রাখি
বল, এটা কী ভুল?
মনুষ্যত্বকে বিসর্জন দিসনে, মনুষ্যত্ব প্রেমের
ধারক ও বাহক,
মনুষ্যত্ব আমার পরিচয়,জ্যান্ত মানুষ আমি
তোর প্রেমের পরিব্রাজক।
কাঁদিসনে মোনা,তোর কাশফুল হাসি আমার প্রেমের সাম্রাজ্য,
প্রেম নিয়ে ছিনিমিনি খেলিনি, ছোট খাট ভ্রম একে একে ত্যাজ্য।
তোর হৃদয়টা যদি শরতের শুক্লপক্ষ হতো!
শিশির সিক্ত শিউলী, বিদায় নিত প্রবহমান কৃষ্ণপক্ষ, রুদ্ধ হতো
বেদনার নয়ানজুলি।
[]___π[]π___π[]π___[]

স্বপ্নগুলো শান্তি খোঁজে 
নাজমা সুলতানা 

স্বপ্নগুলো মেলছে ডানা
   মনেরে আজ কই
শান্তি তুমি পাচ্ছো নাকি
   ফুটছে মুখে খই?

বুকের মধ্যে কান্নাগুলো 
   কেমন পাকায় সব
ঈশ্বর তুমি রক্ষা করো 
   তুমিই আমার রব।

শান্তি গুলো যাচ্ছে উড়ে 
   আতঙ্ক আজ রই 
কি হচ্ছে দেশ বিদেশে হায় 
   লোভের বলি হই।

মহান আমার পূর্বপুরুষ 
   বরণ করেন দুখ
দেশবাসী সব থাকবে ভালো 
   পাবে সন্তান সুখ।

স্বার্থে মানুষ করলো রে ভাগ
   নিজের সোনার দেশ
ভ্রাতৃঘাতী সন্দেহে তাই  
   পাচ্ছি শুধু ক্লেশ।

মহাভারত দেখিয়েছে
   ভয়ংকর সেই রূপ 
ধর্ম নামে কর্ম নামে
   বুক করে ধুকপুক।

সন্দেহের জাল অবিশ্বাসে
   বলি হচ্ছে কেউ 
তুমি কষ্টে আমি সুখে
   জোয়ার টানে ঢেউ।

মিলেমিশে থাকতে হবে 
   তবে মিলবে সুখ
অভাব যখন দরজার গোড়ায় 
   সুযোগ খোঁজে দুখ।

বিশ্ব যতো আসছে কাছে 
   বেলাগাম সব হই
মনের কষ্ট মনেই রাখি 
   দুঃখে আমি রই।

শান্তিগুলো সুযোগ পেলেই 
   ব্যঙ্গ করে হায়! 
কেমন করে বাঁচবে মানুষ 
   সঠিক দিশা চায়।

পথটা আমরা বদলে ফেলি
   ভুলে যাই এই জাত
মানুষ আমরা সবাই আপন
   ক্ষুধায় যে চাই ভাত।

ঈশ্বর  আমার মাথায় থাকুক
   মনে রাখি আশ
আমার থেকে হয় না যেনো
   কারো জীবন নাশ।
[]___π[]π___π[]π___[]

ক্ষুধার  জ্বালা 
মোঃ শহিদুল ইসলাম গাজী 
°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°°
আমার পেটে ক্ষুধার জ্বালা 
   জ্বলে দিবা নিশিতে 
উদার পরিপূর্ণ  নিয়ে 
   তোমরা আছো খুশিতে।

ক্ষুধার জ্বালা  বড় জ্বালা 
   সইতে আমি পারি না 
কে আছো গো দয়াল বন্ধু  
   একটু কাছে এসো না।

তোমাদের তো টাকার ক্ষুধা 
    সম্পদের তো কমতি  নাই 
আমার শুধু পেটের ক্ষুধা 
   গাড়ি বাড়ি কিছুই নাই।

পেটের ক্ষুধায় কেড়ে নিচ্ছে 
   আপন স্বজন প্রিয়জন 
বেশি আঘাত  দিছে  আমার 
   ভালবাসার আপনজন।

ক্ষুধার কষ্ট দিয়ে  যদি 
   সুখে থাকতে পারো 
 কষ্টগুলো জমা করে  
   দিও আমার আরো।
[]___π[]π___π[]π___[]

শত ফুল ফুটতে দাও 
নিলুফা ইসলাম 
°°°°°°°°°°°°°°°°
কত ফুল ফোটে এই ধরণীতে
কে বা রাখে তার খবর!
কত ফুলের কুঁড়ি থেকেই
ঝরে যায় খুঁড়তে হয় কবর।
কত সুগন্ধি ফুল ফোটে রাতে
ঝরে যায় সকালে
কত ফুলের প্রাণ যায় অকালে। 
শত ফুলের ভীড়ে সেরা গোলাপ, রজনীগন্ধা
কত ফুলের আজন্মকাল নাম হয় সন্ধ্যা।
কলি থেকে ফুল হতে হায়!
সদা ডর সদা লাজ, প্রাণ বুঝি যায়।
আরো কত নিষ্পাপ ফুলকে,
জীবন দিতে হবে অবহেলায়?
ফুল দিয়ে হয় পূজার অর্ঘ
প্রকাশ করা হয় সম্মান, ভালোবাসা 
তবে কেন নষ্ট হয় ফুলের আশা!
হে পৃথিবীর মানুষ
শত ফুল ফুটতে দাও,
তবেই হবে সুন্দর এ বসুন্ধরা।
[]__π[]π__π[]π__[]            
            
481 বার পড়া হয়েছে
শেয়ার করুন
বিসাপ

বিকাশ সাহিত্যপরিষদের পাক্ষিক ও সাপ্তাহিক নির্বাচিত কবিতা সমূহ সংরক্ষণ করা হলো।

বিসাপ এর সর্বশেষ লেখা

2 মন্তব্য