চিন্তার ঘানি নয় তো আমি মহাধ্যানী কিংবা মহাজ্ঞানী, তবুও যে যাচ্ছি টেনে চিন্তা নামক ঘানি। চিন্তা করি কেমন করে সূর্য উঠে ডুবে, দিনটা কেমনে হারিয়ে যায় আঁধার রাত্রির বুকে। দিনের আলোয় কেমন করে দেখি দুনিয়াটাকে, আবার রাত্রি কেন পৃথিবীকে অন্ধকারে ঢাকে। তাঁরাগুলো কেমন করে মিঠি মিঠি জ্বলে, চাঁদটা কেমনে হেসে হেসে মনের কথা বলে। চিন্তা করি আকাশেতে মেঘের ভেলা কেমন করে ভাসে, আবার বৃষ্টি হয়ে ধরার বুকে কেমনে ফিরে আসে। প্রকৃতির মাঝে কেমন করে মিষ্টি বাতাস বয়, দমকা হাওয়া কেমন করে মনে জাগাই ভয়। চিন্তা করি মাটি থেকে বৃক্ষগুলো কেমনে মাথা তোলে, কেমন করে একটি বীজে এতো ফসল ফলে। হাজার রঙের হাজার ফুল কেমন করে ফুটে, মৌমাছিরা মধুর জন্য কেমন করে ফুলের পানে ছুটে। চিন্তা করি,পাখি কেমনে বাঁধে বাসা গাছের মগডালে, মা পাখিটা কেমন করে বাচ্চাগুলো পালে। বলাকাগুলো কেমন করে আকাশেতে উড়ে, জল থেকে মাছরাঙা কেমনে মাছ ধরে। চিন্তা করি সাগরেতে জোয়ার ভাটা কেমনে আসে যায়, ঢেউগুলো কেমন করে কল কলিয়ে উজানেতে ধায়। নৌকা জাহাজ কেমন করে পানির উপর ভাসে, মাছগুলো পানির নিচে কেমন করে বাঁচে। চিন্তা করি পাহাড়ের কান্না কেমন করে ঝর্ণা হয়ে ঝরে, রাতের কান্না শিশির হয়ে ঘাসের ডগায় পড়ে। বৃক্ষের কান্না কেমন করে কষ হয়ে ঝরে, মনের কান্না বুকের ভিতর উথালপাথাল করে। চিন্তা করি মানুষ হয়ে কেমন করে মানুষের ক্ষতি করে, পশুর মতো ব্যবহার করে মানুষের রূপ ধরে। আবার ভাইয়ে ভাইয়ে কেমন করে বুকের রক্ত ঝরায়, অন্যায় দেখলে সবাই মিলে এক সাথে ভিড় জমায়। প্রতিবাদ নাই কারো মুখে সবাই থাকি নীরব, দূরে গিয়ে আলোচনা সমালোচনায় সবাই হই সরব। এই চিন্তা সেই চিন্তা হাজারো চিন্তা এসে, মাথাটা আমার কুরে কুরে খাচ্ছে বসে বসে।