সুজয়িতা,কতদিন দেখা হয়নি? মনে হয় কালের অবক্ষয়েযুগান্তরের ঘুর্ণিপাকের সংকীর্ণতায়অনেকটা সংকোচিত হয়ে গেছি আমরা।তাই শোভনতার ছন্দে দু কলম লিখতে বসলাম।সুজয়িতা, তোমার প্রতি এ আমার শেষ চিঠিজানিনা কী রকম সুমহানতায় দেখবেআমার এ অছন্দিত কিছু সংকীর্ণ লাইন।যদি ভুল ক্রটি হয়ে যায়মনে করিও এ গুলো সেই ছোট বেলারকানামাছি কিংবা চুর পুলিশ খেলার মতনকাল্পনিক একটা কিছু।ভেংগে পড়া নদীর তীরের মতন জীবন আজজানিনা কখন কালের লুকান্তরে হারাবো সব কিছুহয়তো তাই এ লিখা?সুজয়িতা দিন যতই বাড়ছেমনে হয় বুকের ভিতরের আবেগের গাছটাদিন দিন লাগামহীন ভাবে বেড়েই চলছে।কেন জানি তোমাকে এখন অনেক বেশী মনে পড়েতোমার সেই নিষ্পাপ সহজাত প্রতিমুর্তিটাআমার চোখের সামনে জীবন্ত হয়ে উঠেআগের চেয়ে অনেক কঠিণ রূপে।অনেক সময় নিজেকে সামলাতে বড় বেশী কষ্ট হয়।সুজয়িতা সেই স্বপ্নের স্মৃতিময় দিন গুলিতেযখন তুমি আমি একই সমান্তরাল পথে হেটেছি,নব সুন্দর স্বপ্নের গালিচা বিচায়েছি মাতোয়ারা মনে,বসন্তের ফুলে ফুলে সাজিয়েছি স্বপ্নের বাসর,গ্রীষ্মের দাহ্যতার মাঝে শীতল ভালবাসায় সিক্ত হয়েছি প্রতিনিয়ত,বর্ষায় বৃষ্টির ছন্দে খুনসুটির আলপনায় ভাসতাম,শরতের কাশবনে শুভ্রভালবাসায় হাটতাম সীমাহীন পথ,হেমন্তের কালকিনির দিনে স্বপ্ন দেখতাম নতুন একটা দিনের,শীতের পৌড়তায় লুকিয়ে থাকতামএকি জীবনের ভাজে ভাজে কত সময়।অথচ আজ কালের অবমহিমায়সবই যেন কল্প লোকের অজানা অধ্যায়।জানো আমাদের অভিসারের কালের স্বাক্ষীসেই পুকুরঘাট, সেই কৃষ্ণচুড়ার গাছ এখনও আছে ।কিন্তু তারা যেন আগের মতন মনহরি মনে নেইকি যেন একটা অস্মপূর্ণতার অভাবে মলিন হয়ে আছে।সেদিন নি:সংগতার তাড়নায় অন্ধকার পায়েএকা একা গিয়েছিলাম সেই আদিম চেনা স্থানে।সব কিছুর পরতে পরতে তোমার স্মৃতি খুজে পেয়েছি,তোমাকে অনুভব করেছি সেই আগের দিনের সুজয়িতার মতোন।এখানের বাতাসে পেলাম তোমার শরীরের সেই গন্ধ,ধুলি কনার পরতে পরতে পেলাম তোমার সেই অস্তিত্বকৃষ্ণচুড়ার ফুলে ফুলে পেলাম তোমার সেই অমলিন হাসিনিস্তব্দতার মাঝে পেলাম তোমার সেই অভিমানি চোখের চাহনিসব কিছুর সুকঠিন ছন্দে অনেক কাঁদলাম।বৃষ্টি আর আমার কান্নার জল এক হয়ে মিশে গেলতোমাদের কঠিন পৃথিবীর অনুর্বর বুকটা।জানো সুজয়িতা কখনও ভাবিনীজীবন থেকে পালিয়ে বেড়াবো?অথচ সেই পথটিই আজ আমার অনেক চেনা ।সুজয়িতা যে গড়ল, যে সাঁজালোআবার সেই যদি সব ভেংগে দেয়তবে ক্ষতিটা কার বেশী হল বলতে পার?যে শিল্পি তার সুনিপুন সৌখিনতায় তার সত্তাকে জাগিয়ে তুলেসে কি শুধুই তার জন্য?তুমি সব কিছু সাঁজিয়ে তুমিই সব কিছু ভেংগে দিলেআমার জন্য কী রেখে গেলে?শুধুই কী অন্ধকার প্রাপ্য ছিলাম আমি?তুমি সব কিছু অতীতের পাতায় ইতিহাস করে দিয়েচলে গেলে সাঁজানো বর্তমান আর সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য।আমার জন্য কি রেখে গেলে? আমি কী কী নিয়ে বাঁচবো ?অন্ধকারে নিমজ্জিত সেই অতীতই যেআমার বর্তমান আর ভবিষ্যতের পথেদাড়িয়ে আছে অতন্দ্রপ্রহরী হয়ে।কারণ আমার অতীতই যে আমার বর্তমান আর ভবিষ্যত।তুমি সুখি হও অনেক সুখীপ্রিয়জনের ভালবাসায় আরো সিক্ত হও।আর আমি এগিয়ে যাই তোমার সৃষ্ট অন্ধকার পথে স্বভুমিকায়।

হুমায়ুন আবিদ
হুমায়ুন আবিদ গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলাধীন তাঁতিরসোতা গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। শ্রীপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস, এস, সি, পরে শ্রীপুর ডিগ্রী কলেজ হতে এইচ, এস, সি, পরীক্ষায় পাশ করার পর সরকারী সাদ'ত বিশ্ববিদ্যালয়, করটিয়া হতে বি, কম, অনার্সসহ এম, কম সম্পন্ন করার পর বাংলাদেশ নৌ-বাহিনীতে সহকারী কস্ট একাউন্ট্যান্ট পদে যোগদান করেন। ছোট বেলা থেকেই লেখার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন। বর্তমানে তাঁর লেখা কয়েকটি গানসহ একুশের এলবাম 'বর্ণমালার বর্ণে আঁকা আধুনিক গানের এলবাম একটাইতো ছিল এবং কবিতা আবৃত্তির এলবাম ভাবনার কবিতাগুলি ' সিডি আকারে বের হয়েছে। এছাড়া 'কবিদের নীল পদ্ম' কাব্যে গ্রন্থে সমাজ সচেতনামূলক কবিতা প্রকাশিত হয়েছে।
হুমায়ুন আবিদ এর সর্বশেষ লেখা
মাধ্যম
7 মন্তব্য
- মন্তব্যের লিঙ্ক
সোমবার, 13 এপ্রিল 2015 18:05 লিখেছেন সুজন হোসাইন
ভালো লাগলো ভীষণ
- মন্তব্যের লিঙ্ক
মঙ্গলবার, 24 মার্চ 2015 08:08 লিখেছেন দ্বীপ সরকার
খুব সুন্দর।
- মন্তব্যের লিঙ্ক
সোমবার, 23 মার্চ 2015 19:42 লিখেছেন নুরুন্নবী জামশেদ
সুন্দর হয়ছে ভাই//
অনেক অনেক শুভ কামনা - মন্তব্যের লিঙ্ক
সোমবার, 23 মার্চ 2015 14:34 লিখেছেন নাহিদুর রহমান( নাহিদ)
দাদা ভাই,
আমাকে একটা চিঠি
দিও।তোমার চিঠি পড়তে আমার বড়োই স্বাদ লাগে।
মন্তব্য করুন
Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.