রবিবার, 19 এপ্রিল 2015 10:56

ধর্ম, সভ্যতা ও আমি (নাট্য-কাব্য)

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(3 টি ভোট)
                ধর্ম, সভ্যতা ও আমি
(নাট্য-কাব্য)


প্রথম দৃশ্যঃ
মৃদু আলো-ছায়া, সুসজ্জিত রং বে-রঙের বাতি দূর থেকে 
পর্দা ভাঙ্গতে ভাঙ্গতে এগিয়ে আসছে, কিম্ভূত-কিমাকার 
মুখোশ পরা এক দন্ডধারী শৃগাল চোখে মুখে বিদ্ঘুটে হাসি, 
মৃদু আবহ সঙ্গীত, গা ছমছম করছে, অন্য কোন শব্দ নেই। 

মঞ্চের মাঝখানে আসতেই দেখা গেল, পেছনে আর এক মূর্তি 
দেখতে প্রায় মানুষের মত হাতে শৃগালের লাগাম, বুকে 
কৌশলী মানচিত্র, মুখোশ পরা সিগার ফুঁকছে, কেমন যেন
ধোঁয়াটে আবেস, দেমাগী চুল উড়ছে।

আমরা ক’জন ধর্ম, সভ্যতা ও আমি বুক পকেটে 
গোলাপ এঁটে সামনের দিকে পাশাপাশি বসে; চোখ জ্বলছে 
এবং মগজে মঞ্চের সমগ্র পরিবেশ আছড়ে আছড়ে পড়ছে,
সকল চোখগুলো পাথর, নড়ছে না------
মঞ্চসহ ওরা হঠাৎ এগোতে এগোতে খুবই কাছে এসে 
ছোঁ মেরে আমাদের আদরের স্বযত্নে সাজানো 
বুক পকেটের ফুলগুলো পকেট শুদ্ধ নিয়ে উধাও 
চেয়ে দেখি, মঞ্চ ঠিকঠাক যথাস্থানে পরে আছে—
আবার আবহ সঙ্গীত, সুর বিদ্রুপাত্তক।

দ্বিতীয় দৃশ্য
নিজেকে কেমন যেন অসহায় মনে হোল, পা নড়ছে না, 
আটকে আছে; চেয়ে দেখি বুক থেকে ঝরে পড়া রক্তে 
পা ভিজে গেছে; শরীর বেয়ে একটি আরসোলা 
ছুটোছুটি করছে, মঞ্চেও অনেকগুলো আরসোলা।

তৃতীয় দৃশ্য
ধর্মের মুগ্ধকর সুন্দর ফুলের পাপড়ীগুলো রং হীন, 
ফ্যাকাশে ম্লান বিচ্ছিন্ন, ওর চোখ শান্ত স্থির দৃঢ় 
অপেক্ষা কাতর, ওর ফুল দিয়ে কারা যেন মঞ্চকে
ধার করা রং মেখে খামখেয়ালী ইচ্ছার
ফরমায়েসী দোকান রুপে সাজিয়ে রেখেছে।

চতুর্থ দৃশ্য
সভ্যতার ফুল উধাও, ভালোভাবে তাকিয়ে দেখা গেল, 
মঞ্চের উপর হাস্যোজ্জল বসে থাকা শৃগালের মাথায় 
ওগুলো আঠালো ভাবে যেন আটকে আছে এবং
দেখা গেল ওরা মঞ্চে একটি আসনের পাশে করজোড়ে 
হাঁটুগেড়ে বসে আছে তবে শৃঙ্খলাবদ্ধ।

শেষ দৃশ্য
কতগুলো শিশু মঞ্চের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে--- 
মঞ্চের মৃদু আলো, নেপথ্যের ছায়া-মুখোশ এবং শৃগাল 
অন্ধকারে একাকার------
আমরা ক’জন ধর্ম, সভ্যতা ও আমি এবং আরো ক’জন 
দর্শক নয় যেন পাথর, হলরুম ভর্তি পাথর স্থির হয়ে আছে।
আলোর অভিনব আবহ সঙ্গীত বেজে উঠলো
বালার্ক স্পর্শে আমরা ক’জন আলোকিত মঞ্চে---

‪#‎বরিশাল‬,১৩০৪১৫            
            
1011 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ বুধবার, 25 নভেম্বর 2020 21:50
শেয়ার করুন
কে এম আলাউদ্দীন

কে এম আলাউদ্দিন বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামে পহেলা মে ১৯৫৩ ইং সনে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল হামিদ মিয়া, মাতা মরহুমা রাবেয়া খাতুন। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সকলের বড় । শৈশবকাল হইতেই তিনি লেখা প্রতি ঝোঁক ছিল। তিনি বরিশাল এপেক্স হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডি.এইস.এম.এস. ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ৫০ সহস্রতমিক পদ্ধতিতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে আসছেন। সদা হাস্যোজ্জল ব্যক্তি তিনি। আলোর মুখোমুখি নামে তার একটি কবিতার বই ১৯৮৫ সনে প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমানেও তিনি নিয়মিত ভাবে লিখে চলেছেন, সাহিত্যের একজন সেবক হিসেবে এখনও তিনি সক্রিয়। তিনি বর্তমানে ৭৭৫, সদর রোড, শাকুর ম্যানসন (ক্যাপ্টেন নজিব উদ্দিন ক্লিনিক সংলগ্ন) বরিশাল শহরে বসবাস করছেন।

7 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.