বোবা পৃথিবীর বুকে ভেতরটা জ্বলে পুড়ে, দুমড়ে-মুচড়ে খান খান হয়ে, ঝোড়ো ঝড়ের কবলে পাখীর ডানার কষ্ট হয়ে গুলিবিদ্ধ ছটফট করা রাজ পথের নিরন্ন অসহায় মানুষের কাতর-মুখের কোঁচকানো ভাঁজপড়া যন্ত্রণা হয়ে.......... না, বোঝানো যাবেনা, ভেতরের অবুঝ সহজ কথা কোন ভাবেই যেন বোঝানো যাচ্ছেনা। না না, কবিতা নয়, অব্যক্ত হৃদয়ের কয়েকটি হাবাগোবা শব্দমাত্র---- বর্ণের ব্যকুলতা, মাত্রা-বর্ণ-চরণের নকশী কাঁথা, ছন্দের সুর-তাল, অলংকার, শৈল্পিক জ্যোতিচ্ছটা, সাজগোজ নাকের নোলক-বিছা চুড়ি-ফিতা, আই-ভ্রূ, রং খেলা চোখের রঙিন ভাষা কিছুই এখানে নেই। পড়ে আছে আকাশের কোল জুড়ে লৌকিক তবু যেন অলৌকিক ছবি, মনে হয় নিষ্প্রভ আলো হয়ে সেখানে হৃদয়ের হাতগুলো দূরে ছুঁতে চায় স্মৃতি, কেবলই ছুঁতে চায় দীর্ঘ থেকে দীর্ঘ হয়ে ধরতে চায়, পারেনা নিরবে কাতরায় লক্ষ্যের দিকে ; মনে হয় চেনা চেনা দূর থেকে দূরে, সু-সমান তালে সরে সরে নিজেকে আড়াল করে পালিয়ে বেড়ায়। এখন এখানে শুধু ভেতরের দুর্বোদ্ধ নগ্নতা আর কাতরতা, অস্থিরতা অব্যক্ত অসহায়ত্বের, ঘোড় দৌড়, হোঁচট খাওয়া ইচ্ছার হলুদ বোঁটা; বিষাক্ত সাপের ছোবলে ছোবলে রক্তাক্ত, পিঞ্জিরাবদ্ধ জীবনকে দেখতে থাকা--- এ ছাড়া কিইবা করার থাকে। আমি এবং আমার ভেতরটা আলাদা, বশ্যতা মানেনা কিছুতেই ধরা ছোঁয়ার বাইরে, নির্মম পাসন্ড, নির্বোধ, স্বার্থপর, খামখেয়ালী, অভিমানী, প্রচন্ড আবেগী। তুমি দূরে আত্মমগ্ন আত্ম জ্যোতির ঝলক আড়াল করে অপ্রকাশ্য সুরে কোথায়, কোন দূর অসীমে শান্তির সুধাপাত্র নিয়ে জেগে আছো! কেন যে আমার সেই তুমি আজ স্তব্ধ, অতল স্পর্শী ম্লান আলো-আঁধারের লুকোচুরির খেলার প্রচ্ছায়া। না, সহজ সরল হৃদয়ের শব্দাবলী উপলব্ধির অচেনা যত যন্ত্রণা ধ্বনি শরবিদ্ধ মৃত লাশের শীতল ঘরের মাঝে আর---- আর কেন বেঁচে থাকা? না, বোঝানো যাবে না; বোবা পৃথিবীর বুকে সুপ্ত যন্ত্রণার আগ্নেয়গিরীর ছড়ানো লাভা নিয়ে আমি এবং আমার ভেতরটা বিচ্ছিন্ন ঘুড়ির মত আলাদা পড়ে আছে---- না, বোঝানো গেল না।