এইতো সেদিন একাগ্রচিত্তে শুনতেছিলাম চাঁদ দেখতে গিয়ে আমি তোমায় দেখে ফেলেছি কোন জোসনায় বেশী আলো এই দুটানাই পড়েছি। গানের সাথে বাস্তবতার কী অদ্ভুত মিল সেদিন তোমাকে না দেখলে বুঝতে-ই পারতাম না। সত্যি-ই- কী মানুষ এত সুন্দর হয়। সত্যিই কি বিধাতার সৃষ্টি এত সুন্দর? তার প্রকৃতির মত নির্ভেজাল মুখখানিতে ছিল মায়া মন্ত্র? ভীরু চোখের নব উচ্ছাসে ছিল ভালবাসার আহবান? কাঁপা ঠোঁটের তৃপ্তি হাসিতে ছিল কোমল মোহনীয়তা? আমি ছিলেম উল্লসিত, বিমোহিত, উদ্বেলিত কিন্তু জীবনের নিমজ্জিত সোপানে তাকে ভাসাই কোথা পাই সে নব প্রাণ। জীবনের এক মহা ক্ষণে মাত্র কয়েক মিনিটের জন্য আমার অন্ধকার আকাশে যে পূর্ণতার শশী উদিত হয়েছিল যার মোহিনী জোস্নায় হেরিয়াছিলাম স্বর্গপ্রাণ সুখের ইন্দ্রজালে আচ্ছাদিত হয়েছিলাম ক্ষণকাল স্বপ্নের লীলাভুমিতে হারিয়ে গিয়েছিলাম মহাকাল। আবার কয়েক মিনটের ব্যবধানে বৈশাখী কাজল দিয়ে সেই জোসনা হারিয়ে গেল অজানা এক পৃথিবীতে। সহসা স্বপ্নের লীলাভুমি থেকে ছিটকে পড়ে আবার যাত্রা শুরু করলাম অর্থহীন পথে। আজ জীবন গাড়ী সময়ের মহা কাল অতিক্রম করে অনেক দুর তারপরেও স্মৃতির দর্পনে বার বার ভেসে উঠে সেই লাবন্যময় মাধুর্যে ভরা শশীপূর্ণ মুখখানি স্বপ্নের লীলাভূমিতে হারিয়ে যায় মুহুর্তে। ইচ্ছে হয় তার সরস কোমল হাতখানি ধরে হেঁটে বেড়ায় জীবনের আপাময় অধ্যয়গুলিতে। কিন্তু এ স্বপ্ন যে বাস্তবতার রুঢ়তায় অসময়ের আর্তনাদ? তবু ইচ্ছে করে সব জলাঞ্জলি দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসে থাকি তার পাশে চিরকাল অপূর্ণ কামনায় চেয়ে থাকি প্রতিক্ষণ। জানি আমার এ পুজা শুধুই অন্তসারশূণ্য এক পদক্ষেপ তবুও ইচ্ছে হয় নিজে ক্ষয়ে ক্ষয়ে আলো দিয়ে যাবো তার পৃথিবীতে যে আলোয় সে চিনে নিতে পারবে তার কাংখিত পথ। আর আমি না হয় ভালবাসার অন্ধ সুখ নিয়ে তার প্রেমময় সুন্দর পৃথিবী থেকে অনেক দুরে নাম হীন, গন্ধহীন, অচেনা এক বৃক্ষ হয়ে রয়ে যাবো চিরকাল।