সোমবার, 03 আগষ্ট 2015 23:56

ঠাঁই চাই সবার অন্তরে নির্বাচিত

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(2 টি ভোট)
                ঠাঁই চাই সবার অন্তরে
কে এম আলাউদ্দীন

সন্মানিত
সুশৃঙ্খল এ সভা মঞ্চের সভাপতি
এ জীবন্ত বাগানের ফুটন্ত গোলাপ
বন্ধুরা আমার----

আমি, আলাউদ্দীন
এ নামের আলখেল্লা পরে দাঁড়িয়ে রয়েছি
যার অর্থের যথার্থ শাসন মেনে
পথ চলা কখনো হলোনা----
কেউ কি তা পারে?

দীর্ঘ পথ
পয়ষট্টি হাজার-লক্ষ-কোটি কিংবা আরো
ঢের বেশী মৃত মূহুর্তের পিচ ঢালা পথ---
কোন প্রকাশ্য এককে তারে
মাপা যায় না, কখনো যাবে না----
জীবনের পথ জানা যায় শুধু, মাপা যায় না।

ঢেউ তালে নাচে উত্তাল-তরঙ্গ-ঝড়, যত
ভাঙা-গড়া খেলা আর নষ্ট বুড়ি গঙ্গার
জলে ভাসমান নীল সভ্যতা দেখে দেখে
এখন বেলা শেষে গন্তব্যে দাড়িয়ে রয়েছি।
তবু, বরিশাল থেকে ঢাকা, গাড়ির
ধোঁয়া-মাখা হাসি-কান্নায় মুখরিত
পথের দুরত্ব মেপে কি ভাবে
হিসেব কষে বলে দেব?
কতটুকু এগোলো জীবন?

সে শৈশব থেকে কৈশোর, যৌবন আর
পৌঢ়ত্বের এবড়ো-থেবড়ো রক্তাক্ত পথ মাড়িয়ে
অপেক্ষা কাতর এই খেলা ঘরে যেন আমি
একা জীবন্ত পাথর।

চারদিকে হাজারো চোখের উল্লাস, তবু
উপলব্ধির সীমায় কেউ নেই
কিছু নেই, জীবনের মঞ্চ যেন
একেবারে ফাঁকা।
কবি গান গায়----
পাথর হব
জ্বালিয়ে ইচ্ছে-সুখ।
কবর হব
রবে না স্বপ্ন আশা
রবে না কোন দুখ।

আমার চেতনা দ্বীপে সমস্ত অবয়ব জুড়ে
চৌচির আকাশের ফাটলে ফাটলে, মুখে
খন্ড খন্ড বয়োবৃদ্ধ শুভ্র মেঘ, যেন
মায়ের শান্তি-আঁচলে ঢাকা এ দূর্জয় বাংলার
হাজারো সবুজ হাত---
বেলা শেষে তৃষার্থ মরুর চোখ হয়ে খুঁজছে
মেঘ ভরা ঝর্ণার ঢল।

দেয়াল ঘেরা জীবনে সীমায় সীমায়
বিকির্ণ আলোর মেলায়
আমার চোখ---- 
খাঁচা বন্দী অসহায় পাখী।
না, মনে হয়
পূর্বেও এখানে কেউ ছিল না, পরেও
আমার অস্তিত্বের সাথে কেউ আর এখানে রবে না।

আমি, আমার দেশ-কাল-লোকালয়, উজ্জ্বল-উচ্ছল কবিতার বিষন্ন ক্লান্ত নিস্তব্ধ শব্দসহ
আমার সময়ের স্বচ্ছ সরোবরে, না ফেরার
অসীম অস্তিত্বে ভাসিয়ে দিলাম।

সেই নিরেট পুরনো বয়সী পাহাড় কেটে 
থরে থরে সাজিয়ে, উপরে, উর্ধ্বে
আরো উর্ধ্বে উঠছি কেবল----
আর কত উচ্চতায় জীবনের সীমা?

এবার ফিরতে হবে
এ নিরব ক্লান্ত পরিশ্রান্ত
সাজানো আলোর কাতরতা
দৃষ্টির নির্মমতা, থেমে যাওয়া প্রবাহের
সকল সম্ভার নিয়ে একান্তে নিরবে ফিরে যেতে হবে।

তবু আশা জাগে----
তা হলে আবার শুরু হোক মুগ্ধকর তারুন্যের কোলাহল,
ভেঙ্গে যাক সময়ের দাসত্বের নিরব শৃঙ্খল, পথ চলা শুরু
হোক, আবার
জাগ্রত হোক ভেতরের মুখরিত সুস্থ মানুষ।

হয়তো এ সময়ের ভিন্ন এক রঙীন জলসায়
অনন্ত সময়ের কোন এক মিলন মেলায়
আবার দেখা হবে, কথা হবে
স্বপ্নের সবগুলো শান্তি বাতায়ন,
খোলা থাক---

বন্ধুরা,
ঠাঁই চাই সবার অন্তরে
এবার বিদায়
আশেষ ধন্যবাদ
শুভেচ্ছা 
সালাম।
#বরিশাল, ২২/০৭/১৫            
            
881 বার পড়া হয়েছে
শেয়ার করুন
কে এম আলাউদ্দীন

কে এম আলাউদ্দিন বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামে পহেলা মে ১৯৫৩ ইং সনে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল হামিদ মিয়া, মাতা মরহুমা রাবেয়া খাতুন। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সকলের বড় । শৈশবকাল হইতেই তিনি লেখা প্রতি ঝোঁক ছিল। তিনি বরিশাল এপেক্স হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডি.এইস.এম.এস. ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ৫০ সহস্রতমিক পদ্ধতিতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে আসছেন। সদা হাস্যোজ্জল ব্যক্তি তিনি। আলোর মুখোমুখি নামে তার একটি কবিতার বই ১৯৮৫ সনে প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমানেও তিনি নিয়মিত ভাবে লিখে চলেছেন, সাহিত্যের একজন সেবক হিসেবে এখনও তিনি সক্রিয়। তিনি বর্তমানে ৭৭৫, সদর রোড, শাকুর ম্যানসন (ক্যাপ্টেন নজিব উদ্দিন ক্লিনিক সংলগ্ন) বরিশাল শহরে বসবাস করছেন।

5 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.