মঙ্গলবার, 17 ফেব্রুয়ারী 2015 10:12

একুশ অধিকার আদায়ের সংগ্রামী অস্ত্র নির্বাচিত

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(0 টি ভোট)
                একুশ আমার নির্বাক বুক---
যার শেকড়, দ্রাবিঢ়ীয় সভ্যতার
মানবিক মূল্যবোধে প্রোথিত,
যার শেকড়ে শেকড়ে আর্যদের
দর্পিত অশান্ত ছোবল 
যার শেকড়ে অস্তিত্বশীল অনেক সভ্যতার
সুখ দুখ বেদনা ও বিশ্বাস
যার শেকড়ে বহু দাম্ভিক খমতার
নির্ভেজাল কলঙ্কের ছাপ। 

আমার মা এবং বাংলাদেশ 
এখনো যন্ত্রণায় কাতরায়
একুশ একুশ বলে আর্তনাদ করে।
আমার বোনের লাল-শাড়ী---
ও’তো রফিক, সালাম ও বরকতের রক্তে রাঙ্গানো,
বেলেল্লা খেয়ালে তা’দিয়ে নেশার রং মহল 
সাজাবার স্পর্ধা কারো নেই।
একুশ আমার স্ত্রীর আবরণ, 
স্নীগ্ধ ঐতিহ্যের একান্ত প্রণয়, ঘাসের সবুজ
এবং চৈতন্যের সক্রিয় অধিকার।

ওদের আত্মা, একুশ এবং বাংলাদেশ আজ ফেরার
সাজানো সভ্যতায় ওদের সুখ নেই
ওরা আপন ঐতিহ্য ঘরে আশ্রয় চায়।
বঞ্চিতের হা-হাকারে হা-অন্ন শ্রমিকের ঘাম হয়ে
ঝরছে একুশ, মানুষত্ব, সভ্যতা, আদর্শ ও বিশ্বাস।
একুশের পতাকায় বিক্ষুব্ধ মাতম—
রফিক, সালাম, বরকত আরো অনেকের
সবার আত্মা অসহ্য নির্যাতনের শিকার,
মুক্তির চাতক চোখ স্থীর, শান্তি চায়।
হাড্ডিসার বস্তির উদোম শিশু, একুশ একুশ বলে
শ্লোগানের কঙ্কাল নিয়ে
আনন্দে আত্ম হারা, পথ হারা—
যেন ওরা নিজেরাই একটি শ্লোগান
একুশ যেন ওদের কাছে
ভিক্ষের একটি আনন্দ মুদ্রা।

একুশের শব্দ, পোষ্টার ও সাংষ্কৃতিক অনুষ্ঠানের আনন্দ,
অধিকার বঞ্চিত মানুষের দীর্ঘশ্বাসের চলচ্ছবি,
উর্ধাকাশে উজ্জ্বল বেলুন ফাটার আর্তনাদ।
একুশ মানবিক হাওয়ায়, সবুজ মাঠে 
সেজদায় কাঁদে---ভাষার মর্য্যাদা চায়, 
শান্তির নীড় চায় এবং নিজেই 
হতে চায় অধিকার আদায়ের 
একটি সংগ্রামী অস্ত্র।

বরিশাল/ ’৯০            
            
6872 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ সোমবার, 07 ডিসেম্বর 2020 14:03
শেয়ার করুন
কে এম আলাউদ্দীন

কে এম আলাউদ্দিন বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামে পহেলা মে ১৯৫৩ ইং সনে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল হামিদ মিয়া, মাতা মরহুমা রাবেয়া খাতুন। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সকলের বড় । শৈশবকাল হইতেই তিনি লেখা প্রতি ঝোঁক ছিল। তিনি বরিশাল এপেক্স হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডি.এইস.এম.এস. ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ৫০ সহস্রতমিক পদ্ধতিতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে আসছেন। সদা হাস্যোজ্জল ব্যক্তি তিনি। আলোর মুখোমুখি নামে তার একটি কবিতার বই ১৯৮৫ সনে প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমানেও তিনি নিয়মিত ভাবে লিখে চলেছেন, সাহিত্যের একজন সেবক হিসেবে এখনও তিনি সক্রিয়। তিনি বর্তমানে ৭৭৫, সদর রোড, শাকুর ম্যানসন (ক্যাপ্টেন নজিব উদ্দিন ক্লিনিক সংলগ্ন) বরিশাল শহরে বসবাস করছেন।

5 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.