এই পৃষ্ঠা প্রিন্ট করুন
সোমবার, 04 মে 2015 10:44

আত্মার প্রেম-১

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(3 টি ভোট)
                দৃশ্য-০১। রাত। সবুজের বেড।

(হসপিটালের একটি ওয়ার্ড। ওয়ার্ডে দুই সারিতে সাজানো ক’টি বেড। প্রত্যেকটি বেডেই রুগী। ওয়ার্ডের এক পাশে একটি টেবিল ও টেবিলের উপর একটি টেলিফোন। দু’টি চেয়ার ও একটি গোল টেবিল। রুগীদের ঔষুধ ও প্রয়োজনীয় কাগজ-পত্র রাখার জন্য একটি আলমারী। আলমারীর ভিতর প্রাথমিক চিকিৎসার যন্ত্রপাতি ও একটি অত্যাধুনিক অক্সিজেন সিলিন্ডার। রুগীর উহ্‌ আহ্‌ চিৎকার। একজন শিক্ষানবীশ ডাক্তার তার নিত্য নৈমিত্তিক কাজ করে যাচ্ছে। পাশের দু’ নম্বরের রুগীটাই বেশী মারাত্মক।)

সবুজঃ (দু’ নম্বর বেডে শায়িত) আহ্‌, উহ্‌, ওম, ইস্‌, মাগো, আহ্‌, উহ্‌, ওম, ইস্‌। মা - মাগো এক গ্লাস পানি-----------------। (ডাক্তার এক গ্লাস পানি নিয়ে তার হাতে দেয় এবং পাশে দাঁড়িয়ে থাকে)।

ডাক্তারঃ আপনার বেশী পানি পান করা নিষেধ। প্লিজ অল্প করে খান। 

সবুজঃ (ডক ডক করে পানি পান করে তৃপ্তির ঢেঁকুর দিয়ে) অল্প করে পানি খাব কেন? বেশী পানি খেলে সমস্যা কি? 

ডাক্তারঃ কি সমস্যা আপনি বুঝেন না। আপনার মূত্রথলি অপারেশন করা হয়েছে?  

সবুজঃ অপারেশন ‘ত সেই কবে হয়েছে? এখনও পানি খেতে নিষেধ কেন?

ডাক্তারঃ (সবুজের কথার যথাযথ উত্তর না দিয়ে) আপনি ঘুমিয়ে থাকুন-----------।

সবুজঃ ঘুম তো আসছে না, কি করে ঘুমাবো। 

ডাক্তারঃ চোখ দু‘টো বন্ধ করে ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

সবুজঃ প্লিজ আপনি আমার পাশে বসুন। আপনার সাথে গল্প করতে করতে ঘুমিয়ে পড়ব। (ডাক্তার পাশে বসে)। আচ্ছা আপনি এই হসপিটালে আসলেন কেন? অন্য কোন ভাল হসপিটালে চাকরী নিতে পারলেন না?

ডাক্তারঃ এ হসপিটালে কেন চাকরী নিয়েছি। সে কথা অন্য সময়ে বলব। এখন আপনি ঘুমানোর চেষ্টা করুন।

সবুজঃ (হঠাৎ আধো আলো-আধো ছায়া পরিবেশে সাদা পোশাক পরিহিত ভয়ংকর ছায়ামূর্তি প্রবেশ করে। {ছায়ামূর্তির বিবরণ-সাদা পোশাক এবং সাদা কাপড়ে মুখ ঢাকা, দু‘হাত রক্তমাখা, টকটকে লাল চোখ, মুখের দু‘ধারে প্রবাহিত রক্তের নালা}। তীব্র বাতাসের ঝটকা হাওয়ায় টেবিলে রাখা উপকরণগুলো ঝনঝন শব্দ করে কিন' টেবিল থেকে উপকরণগুলো মেঝেতে পড়ে না। উপরোক্ত দৃশ্যটুকু শুধুমাত্র সবুজের চোখে ভাসে অতঃপর সে ভয়ে কুকড়িয়ে যায় এবং প্রলাপ বকতে থাকে কিন্তু ডাক্তারের চোখে ছায়ামূর্তি আসে না।) না, না, এদিকে আসবে না, আমাকে স্পর্শ করবে না। আমি তোমাকে আমার শরীর থেকে এক ফোটা রক্তও দেবো না।

ডাক্তারঃ (বিস্ময় দৃষ্টিতে) আপনি এমন করছেন কেন? কি হয়েছে আপনার? কে আপনার রক্ত চাচ্ছে? (সবুজ ডাক্তারের কথার কোন উত্তর দিতে পারে না, তার আগেই অবচেতন অবস্থায় বেড থেকে মেঝেতে পড়ে যায়। অবশেষে ডাক্তার সবুজকে টেনে টুনে পুনরায় বেডের উপর তোলে এবং একটি হুলস্থুল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়)।            
            
866 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ সোমবার, 04 মে 2015 13:58
শেয়ার করুন
 নাজমুল কবির

নিভৃতচারি কবি যিনি তাঁর মসির আঁচড়ে সামাজিক অবক্ষয়ের বাস্তব চিত্র অঙ্কন করে পাঠক সমাজে বেশ সমাদৃত হয়েছেন। কবি নাজমুল কবির প্রকৃত পক্ষে পহেলা জানুয়ারী উনিশশত ষাট সালে নাটোর জেলার বড়াইগ্রাম থানার বড়াইগ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। নিষ্ঠুর দারিদ্রতাকে জয় করে তিনি দেখিয়েছেন নিজের দৃঢ় আত্ম-প্রত্যয়ের দুঃসহ যন্ত্রনা। তিনি ছোট বেলা থেকেই লেখালেখি পছন্দ করতেন এবং কাপাসিয়া পাইলট হাই স্কুলে অধ্যয়নরত থাকাকালীন সময়েই লেখায় হাতে খড়ি। কাপাসিয়া পাইলট হাই স্কুল হতে এস. এস. সি. এবং কাপাসিয়া কলেজ থেকে এইচ. এস. সি. কৃতিত্বের সহিত পাশ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগদান করেন। ঢাকায় চাকুরীরত থাকাকালীন অবস্থায় তাঁর লেখা কবিতা সেনাবাহিনী কর্তৃক প্রকাশিত সেনাবার্তায় প্রকাশিত হয় এবং ঐ সময়েই সেনাবাহিনীর গোয়েন্দা পরিদপ্তর ও আই.এস.পি. এর অনুমতিক্রমে বাংলাদেশ বেতার ও টিভির তালিকাভূক্ত গীতিকার হন। তাঁর লেখা গান রেডিও ও টিভিতে নব্বই এর দশকে প্রচারিত হয়েছে। তিনি একাধারে একজন সাহিত্যিক ও অপরদিকে গাজীপুর২৪ডমকম প্রত্রিকার সম্পাদক এবং দৈনিক অপরাধ তথ্য পত্রিকার গাজীপুর জেলার ব্যুরো প্রধান। নবীন কবিদের প্রতি অগাধ ভালোবাসা যার নিত্য দিনের সঙ্গী। প্রকাশিত গ্রন্থসমূহঃ (১) হৃদয়ের মাঝখানে দেয়াল (২) এক বিন্দুতে ভালোবাসা (৩) নির্ঝর ভালোবাসা (৪) কবিতার কারুকাজ (৫) প্রম আসেনি (৬) ভুতের বাসা (৭) মেঘ বালিকার স্বপ্ন (৮) হোমিও মতে চিকিৎসা, হোমিও চিকিৎসা বিষয়ক বই (৯) দ্রোহের অগ্নি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত হয়েছে। এ বারের বইমেলায় যৌথ কাব্যগ্রন্থ আলোর বিকাশসহ ৬ টি যৌথ কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থ তাঁর নিজস্ব শৈলী মাধুর্যতার পরিচয় মেলে। এবার বইমেলায় প্রকাশিত হবে 'শূন্য জীবন পুণ্যে ভরো' একক কাব্যগ্রন্থ।

নাজমুল কবির এর সর্বশেষ লেখা

7 মন্তব্য