মঙ্গলবার, 15 সেপ্টেম্বর 2020 21:04

এসিডে পোড়া সুরভি নির্বাচিত

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(2 টি ভোট)
                এসিডে পোড়া সুরভি-(ছোট গল্প)
===================

নবম শ্রেণীর ছাত্রী সুরভি, ক্লাসে লেখাপড়ায় সব চেয়ে ভালো ছাত্রী, যেমন ছিলো মেধাবিনী তেমনি ছিলো তার রূপের মাধুর্য। আশেপাশের দু চার গ্রামে যদি রূপবতী মেয়েদের তালিকা করা হতো, তাহলে সুরভীর নামটা তালিকার প্রথমেই লিখতে হতো। হত দরিদ্র পরিবারের দ্বিতীয় কন্যা সুরভি আর এক ছোট ভাই, বাবা রিকশা চালিয়ে সংসার চালায়, বড় বোনের বিয়ে হয়েছে ২ বছর হলো,
এ সংসারে সুন্দরী হওয়াও যে অভিশাপ তার প্রমাণ এই ১৪ বছরে পা রাখা সুরভি, স্কুলে আসতে যেতে প্রায়ই গ্রামের কফিল মেম্বরের বখাটে ছেলে বিরক্ত করতো, সুরভিকে, জোর করে বেশ কয়েকবার ধর্ষণের চেষ্টাও করেছে, 
    প্রভাবশালী মেম্বরের ছেলে,  তাই বিচার দিয়েও কোনো সুফল হবে না ভেবে সুরভি মুখ বুজে সহ্য করে যায় বখাটে শাকিলের এই বিরক্তিকর অমানসিক আচরণ। 
  একদিন বিকেলে, স্কুল ছুটির পরে তার অসুস্থ বান্ধবীকে দেখতে গিয়ে একা বাড়িতে ফেরার পথে কফিল মেম্বরের বখাটে ছেলে শাকিল আর তার বন্ধু মিলে জোর করে টেনে হেচড়ে বাগানের ভিতর নিয়ে যাচ্ছিলো ধর্ষণ করতে, এমন সময় সুরভির চিৎকার শুনে দূর থেকে একজন পথচারী ছুটে আসতেই সুরভিকে ছেড়ে দিয়ে বখাটে শাকিল আর তার বন্ধু চলে গেলো, 
  সুরভি বাড়িতে এসে মা বাবার সাথে শাকিলের অসভ্য আচরণ সব খুলে বললো, সুরভির বাবা জানে বিচার দিয়ে কোনো লাভ হবে না, যার কাছে বিচার দেবে তার ছেলেই এমন নিকৃষ্ট কাজ করেছে, আর মুখ বুজে থাকলেও হবে না। দিন দিন শাকিলের অত্যাচার বেড়েই চলেছে, আরো অনেক মেয়েকে শাকিল জোর করে ধর্ষণ করেছে, শালিশ দরবারে সকলের সামনে ক্ষমা চাওয়া আর হাসি মুখে ক্ষমা করে দেয়া, পরের দিন আবার একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি, তবুও সুরভির বাবা শাকিলের বাবাকে গিয়ে সব জানালো, এলাকার আরো মান্যগণ্য কয়েক জনকে বললো, বিকেলে শালিস বসলো, বিচারের রায় হলো, সুরভির কাছে ক্ষমা চাইবে, আর কোনো দিন সে সুরভিসহ অন্য কোনো মেয়েকে বিরক্ত করবে না। সেদিন বিচারের পর থেকে বেশ কয়েকদিন আর সুরভির সামনে পরেনি অসভ্য শাকিল। আজ অনেক দিন বাদে সুরভির সামনে পরলো, একটা বিশ্রী শব্দ ছুড়ে দিলো সুরভির কানের ভিতর, 
কিরে সুরভি, কেমন আছিস, ও দুটো তো সেদিনের সার পেয়ে অল্প কয়দিনে বেশ বড় হয়েছে দেখছি, 
ভয়ে সুরভির গা শিউরে উঠলো, ওড়না টেনে আরো আবৃত করে নিলো বুকের যৌবন, 
  ঠিক হঠাৎ বাঘের সামনে পড়লে যেমনটি হয়, বেশ কয়েক গজ দূরত্বে থাকার পরেও যেনো মনে হচ্ছে এখনই কোনো পাগল কুকুর কামড়ে ধরছে তাকে। কুকুরের স্বভাব পরিবর্তন হয় না কোনো কালে, 
সুরভি চুপচাপ নিরব মাটির দিকে তাকিয়ে হেটে যাচ্ছে। দূর থেকে তাকালে মনে হচ্ছে সুরভি পথের বালুকণাগুলো একের পর এক গুনে যাচ্ছে, বা কাটাবনে সতর্কের সাথে পা ফেলে হেটে যাচ্ছে। 
  পিছন থেকে আবার শব্দ ভেসে আসলো, আমি তোর এই রূপে আগুন জ্বালিয়ে দেবো, তোকে দেখে যেনো সকলে ভয় পায়। সুরভির বুকটা কেঁপে উঠলো আরো কয়েকবার, শাকিলের হুমকি শুনে, কোনো কথা না বলে নিরব মূর্তির মতো ভাষাহীন সামনে হাঁটতে লাগলো, কতক্ষণ পরে পেছনে আর কারো শব্দ অনুভব হলো না, তাকিয়ে দেখলো বিষাক্ত প্রাণীটা নেই, কিছুটা স্বস্তিকর হলো সুরভির ভিতর বাড়ি। 
ক্লাসের বেশ কয়েকজন সুরভিকে প্রপোজ করেছিলো, সুরভির এক জবাবে তারা শামুকের মতো চুপসে গিয়েছিলো, জবাবটা ছিলো, (ভালোবাসা মানেই আমার কাছে মনে হয়, প্রেমিকার দেহ ভোগের ধান্দা ছাড়া আর কিছু নয়) এর প্রতি উত্তর কারো কাছ থেকে পায়নি কখনো,
  রাত্র ১২টা ২০ মিনিট, চৈত্রমাসের পূর্ণিমারাত, চাঁদের আলো ছড়িয়ে আছে সারা অন্ধকারের বুকে, দিনের মতোই ফুটফুটে রাতের বুক, গাছের প্রতিচ্ছবি দেখা যাচ্ছে ধবল মাটির বুকে, খোলা জানালা দিয়ে চাঁদের আলো পড়ছে সুরভির শরীরে, সাথে মৃদু শীতল বাতাস। 
  হঠাৎ করে জানালা থেকে আসা আগুন জলে, ভিজে গেলো সুরভির মুখের সম্পূর্ণ অংশ, বুকের কিছু অংশে গিয়েও ধাউ ধাউ করে জ্বলে উঠলো এসিডের কামড়। চিৎকারে সকলে জড়ো হলো, এসিড মারলো কে এতো রাতে, বুঝার কিছুই বাকি রইলো না, মুখ বাঁধা কেউ দৌড়ে পালিয়ে গেলো। অজ্ঞাত অপ্রমাণিত এই দশা।
হাসপাতলে নিয়ে ভর্তি করা হলো সুরভিকে, সুরভি সুস্থ হয়ে বাড়িতে ফিরে এলো, তার মুখ দেখে চেনার উপায় ছিলো না যে এই সেই রূপবতী সুরভি, যে কেউ হঠাৎ করে সুরভিকে দেখলেই ভয়ে কেঁপে উঠতো, সুরভি কাউকে নিজের মুখ দেখাতো না, বান্ধবীরাও এক এক করে দূরে সরে গেলো, সুরভির মুখের দিকে কেউ তাকাতো না। অন্য দিকে ফিরে সকলে কথা বললো, আর এই দৃশ্য দেখে সুরভির চোখের জলে বুক ভিজে যেতো। সিথানের বালিশ দিন রাত সুরভির চোখের জল শুষে শুষে ভিজে পুরো হতো। 
  সুরভির প্রবল ইচ্ছে সে পড়াশুনা করবে, সে আবার স্কুলে যেতে শুরু করলো, স্কুলের সকল ছাত্র-ছাত্রী ওকে দেখে ভয় পেতো, ক্লাসে কেউ সুরভির কাছে বসতো না, ক্লাসের শেষ বেঞ্চে সুরভি একা বসতো, শিক্ষক ও কখনো ওর কাছে গিয়ে দাড়াতো না, একদিন হেড মাস্টার তার কক্ষে ডেকে নিয়ে বললো, 
তোমাকে দেখে অন্য ছাত্র-ছাত্রী ভয় পায়, তুমি কাল থেকে আর স্কুলে আসবে না। 
  যে শিক্ষক সব সময় সুরভির খোঁজ খবর নিতো, বাবার মতো আদর করতো, তার মুখে এমন কথা শুনে সেখানেই দাঁড়িয়ে অশ্রু জলে ফ্লোর ভিজিয়ে মাথা নত করে বেড়িয়ে এলো, 
  সেদিনের পর থেকে আর সুরভি স্কুলে যায় না। ঘরকোনা হয়ে বসে থাকে সব সময়। বাইরের কারো সাথে দেখা করেনা সুরভি, আয়নায় কবে সেই নিজের মুখ দেখেছে তাও মনে নাই, একদিন নিজের মুখ দেখে নিজেই অবাক হয়েছিলো, সারাদিন কেঁদে কাটালো সুরভি। 
বিকেলে সুরভির বাবা হাসতে হাসতে ঘরের ভিতরে প্রবেশ করেই সুরভিকে ডাকলো, 
মা সুরভি, কই তুই এদিক আয়... 
আজ খুশির খবর আছে, 
জ্বী আব্বা, এই তো আমি, সুরভির মুখে আদর করে হাত বুলিয়ে বললেন, শোন মা, যার কেউ নাই এই জগত সংসারে তার আল্লাহ্‌ আছেন। আল্লাহ্‌ উচিৎ বিচার করেছেন। 
কি বিচার?
কফিল মেম্বরের সেই জানোয়ার ছেলে, মোটর সাইকেল এক্সিডেন্ট করে এমন অবস্থা হয়েছে ওর চেহারা দেখে এখন কেউ চিনতে পারবে না। হাসপাতালে নিতে নিতেই মারা গেছে, গ্রাম থেকে একটা বালামুসিবত আল্লাহ্‌ তুলে নিয়ে গেছেন। ওর মৃত্যুতে গ্রামের সকলেই খুশি। 
  অনেক দিন বাদে আজ বাবার দিকে তাকিয়ে হাসি দিলো সুরভি। 
বেশ কয়েকদিন কেটে গেলো এভাবে। একদিন সুরভির বোনের স্বামী এলো ঢাকা থেকে, সুরভিকে নিয়ে যেতে। সুরভির বোনের একটা বেবী আছে ২ বছর বয়েস, উদ্দেশ্য সারাদিন বাসায় থাকবে আর আপন ভাগ্নিকে দেখাশুনা করবে। 
সুরভি ঢাকায় এসেও বাইরে তেমন বের হতো না, আর বের হলেও বোরখা পড়ে মুখ ভালো করে ঢেকে বের হতো। যেনো কারো চোখে তার ঝসানো মুখ না প্রকাশ পায়। 
সুরভির বোন ও বোনের স্বামী দুজনেই গার্মেন্টসে চাকরি করে, সুরভি ঢাকায় এসে বেশ ভালোই আরাম বোধ করছে, আশে পাশের বাসার ভারাটিয়ারা প্রথম প্রথম বিরক্তির চোখে দেখলেও পরে ধীরে ধীরে মানিয়ে নিয়েছে তারা। মাস খানেক পরে একদিন সুরভির ভগ্নীপতি বাসায় ফিরলো, সুরভি ভেবেছে হয়ত শরীর খারাপ তাই বাসায় চলে এসেছে, এসেই খাটে শুয়ে পড়লো, সুরভিকে বললো তার শরীর খুব ব্যথা করছে, একটু টিপে দিতে, সুরভি সরল মনে তার শরীর টিপে দিতে লাগলো, এক পর্যায়ে নানান অযুহাত দেখিয়ে সুরভির সব কিছু লুটে নিলো তার বোনের স্বামী। এভাবে মাসের পর মাস তার দেহ ভোগ করতে লাগলো, লোভী বোনের স্বামী, বোনকে বলেও লাভ হলো না, বোন হলো অন্ধ স্বামীভক্ত। 
কয়েক মাস পরে সুরভির শরীরে বিশেষ পরিবর্তন দেখা গেলো, সুরভি বুঝতে পারলো তার এই ঝলসানো নির্যাতিত শরীরের মাঝে আরো এক শরীর ধীরেনধীরে বেড়ে উঠছে। সুরভিকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে বন্ধ করে দিলো আর এক পাপ বেড়ে ওঠার নাড়ী। 
এভাবে প্রায় প্রতিদিন তার বোনের স্বামী বন্ধুদের নিয়ে এসেও পালাক্রমে তার দেহ ভোগ করতো। সুরভি রাজি না হলে তার উপর চলে অমানসিক নির্যাতন। আপন বোন সেও টাকার লোভে অন্ধ হয়েছে, বোনের প্রতি কোনো মায়া নেই, ডিম পাড়া সোনার হাস হলো সুরভি। সুরভি মুখ বুজে সব নির্যাতন ঝলাসানো শরীরে সইতে থাকে অশ্রুসিক্ত হয়ে থাকে সব সময়। 
একদিন দুপুরে কাষ্টমার নিয়ে বাসায় এসে দেখে, সকল কোলাহল অত্যাচার নির্যাতন ধর্ষণ থেকে মুক্তি পেতে সুরভি ফ্যানের সাথে প্রাণহীন ঝুলে অপেক্ষা করছে। সাদা ৫ খন্ড মার্কহীন কাপড়ের। সুরভির পায়ের সোজাসুজি একটা চিরকুট পরে আছে। তাতে লেখাছিলো।
বোন,
আমি আবারো অবৈধ সন্তানের মা হতে চলেছি। ওরা যখন আমায় নিয়ে আনন্দে মাতে আমার পেটে প্রচন্ড ব্যথা পাই, আমার মাঝে যে বেড়ে উঠছে তাকেও আবার হত্যা করতে হবে, আমি বেঁচে থাকলে এভাবে আরো অসংখ্য শরীরের জন্ম হবে যারা পৃথিবী দেখার আগেই ডাস্টবিনে চলে যাবে। তার চেয়ে আমি নিজেই নিজের মুক্তি দিলাম। বোন, যদি পারিস, আমার এই পাপের শরীর জলে ভাসিয়ে দিস, পবিত্র মাটিতে দাফন দিলে মাটিও আমায় ঘৃণায় উগড়ে তুলে ফেলে দিবে, তোরা ভালো থাকিস।

( সমাপ্ত)            
            
715 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ বুধবার, 16 সেপ্টেম্বর 2020 20:49
শেয়ার করুন
এস. আই. জীবন

এস. আই. জীবন, পিতা মোঃ মোশারফ হাওলাদার, গর্ভধারিণী মোসাম্মাৎ মজিরন বেগম। বরিশালের কীর্তনখোলার শাখা নদী বাইলাখালীর তীরবর্তী চরকরঞ্জী গ্রামে অতি সাধারণ এক পরিবারে ১৯৮৭ সালে নভেম্বর মাসের দুই তারিখে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই কবির লেখালেখি শুরু, লিখেছেন ছোট গল্প, কবিতা ও উপন্যাস। কবি এস. আই. জীবন একাধারে কবি ও উপন্যাসিক। কবি হিসেবে সাহিত্যে তার পরিচিতি থাকলেও কবির প্রথম পথচলা শুরু হয় উপন্যাসের মধ্য দিয়ে। তার বয়েস যখন ষোল, তখনই প্রকাশিত হয় তার লেখা প্রথম উপন্যাস " ভালোবাসা শুধুই ভুল" ২০০৩ সালে, এর পর তার লেখা আরো কিহছু বই প্রকাশ হয়। তার মাঝে বিশেষ উল্লেখযোগ্য "পথচলা পথের সন্ধানে" "হৃদয়ের রক্তক্ষরণ (উপন্যাস)" চন্দ্রপরী(উপন্যাস) " উড়নচণ্ডী স্বপ্নগুলো" "কাজলা দিদি" (উপন্যাস) বর্তমানে তিনি প্রবাসী। মালয়েশিয়ায় কর্মরত আছেন। কীর্তনখোলা কাব্যগন্থে ছন্দের বিভিন্ন আঙ্গিকের কবিতা স্থান পেয়েছে, ছন্দ প্রিয় পাঠক মহলসহ দেশ ও সমাজের উপকারে আসবে তার এই কাব্যগ্রন্থ আমাদের একান্ত বিশ্বাস। আলোর পথে (উপন্যাস) প্রকাশের অপেক্ষায়। কবি ও উপন্যাসিক এস. আই. জীবনের সার্বিক সাফল্য কামনা করি।

12 মন্তব্য

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes বৃহষ্পতিবার, 14 সেপ্টেম্বর 2023 14:47 লিখেছেন HectorWes

    Beneficial facts. Thank you!
    writing a service level agreement template write a college essay for me online essay writers write an essay for me cheap people who write essays for you psychology essay writing service spanish essay writer help me write my english essay essay writer for you cheapest essay writers

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes বুধবার, 13 সেপ্টেম্বর 2023 10:15 লিখেছেন HectorWes

    You've made your position very well.!
    is essay writing service legal example thesis do research papers need a thesis define thesis masters thesis writing service quick essay writing service writing a scholarship essay mba essay writing service spongebob writing essay best essay writing service in pakistan

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes রবিবার, 10 সেপ্টেম্বর 2023 22:45 লিখেছেন HectorWes

    You actually explained that effectively!
    uk assignment writing service reviews thesis statement for healthcare expository essay thesis buy thesis online ai thesis statement essay writing service near me writing essays service hsbc premier will writing service chinese essay writing service 6th grade essay writing worksheets

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes শনিবার, 09 সেপ্টেম্বর 2023 15:05 লিখেছেন HectorWes

    Thanks. A good amount of content!
    outline writing service writing your dissertation dissertation paper writing services i hate my dissertation doctoral dissertation writing help are essay writing services any good english article writing service resume writing service santa rosa ca do essay writing services work essay writing helper free

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes শুক্রবার, 08 সেপ্টেম্বর 2023 07:20 লিখেছেন HectorWes

    Thanks, I value it!
    phd essay writing service pay for paper writing buying a college essay pay for essay essays to buy best free essay writing service top assignment writing service uk writing an apology letter to a customer for bad service professional essay writing services personal statement writing service reddit

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes শুক্রবার, 01 সেপ্টেম্বর 2023 04:59 লিখেছেন HectorWes

    You stated this perfectly!
    admission essay service customer service business email writing cheap essay writing service us online essay writing service best essay writing service uk reviews best essay writing service yahoo buy essays order custom essay online order essay paper buy academic essays

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes শুক্রবার, 01 সেপ্টেম্বর 2023 02:19 লিখেছেন HectorWes

    You actually said that very well!
    australian essay writing service reviews help writing a dissertation best dissertation writers phd dissertation phd thesis helper resume writing service new york my essay help college essay tutor near me help writing a paper essay paper helper

  • মন্তব্যের লিঙ্ক HectorWes রবিবার, 06 আগষ্ট 2023 20:29 লিখেছেন HectorWes

    You explained it exceptionally well!
    best online essay writing services academic essay writing who is the best essay writing service

  • মন্তব্যের লিঙ্ক bhejhZe রবিবার, 09 জুলাই 2023 21:30 লিখেছেন bhejhZe

    vardenafil vs viagra I have been doing SERM research on laboratory rats for the last year; but, it has only resulted in me gaining lean body mass

  • মন্তব্যের লিঙ্ক Abrahamslath মঙ্গলবার, 06 সেপ্টেম্বর 2022 21:17 লিখেছেন Abrahamslath

    Cheers! A good amount of tips!
    steps on how to write an essay writers help essay writer

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.