রবিবার, 27 সেপ্টেম্বর 2020 23:49

হৃদয়ের আর্তনাদ - পর্ব ২ নির্বাচিত

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(0 টি ভোট)
                ছোট গল্প পর্ব ২
.
আশরাফুল বিয়ে বাড়ি থেকে ফেরার পথে মাইক্রোবাসে বসে বসে নাম অজানা মেয়ের অনুভূতিতে বিভোর। কারও সাথে কথা বলে না। বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ করে কলেজ হোস্টেলে যায়। সামনে মাস্টার্স পরীক্ষা, পড়ার টেবিলে মন বসতে  চায় না। অন্ধকার রুমে  শুয়ে শুয়ে কল্পনার স্বপ্ন রাজ্যে যেন, বলাকার ডানামেলে নীল আকাশে উড়তে থাকে। চিন্তা করে মেয়েটিকে জীবন সঙ্গী করে কিভাবে সংসার গড়ে তোলবে। ভাবনার জগতে রাজহংসীর ডানামেলে ভাসতে থাকে মেয়েটি সকালে রান্না শেষ করে যেন, আশরাফুলকে বলবে সাহেব উঠেন, অফিসের সময় হয়ে গেছে। আশরাফুল ঘুমের ভান করে থাকবে, মেয়েটি তার পায়ের পাতায় শুরশুরী দেবে, তবু ঘুম ভাংবে না। নাক ধরে ঢাকবে, এই! উঠ না, সোনা। আশরাফুলের ঘুম যেন আরো বেশি পেয়েছে। মেয়েটি বলবে,দাড়াও দেখাচ্ছি মজা, খুব অলসতা না? তোমার  মাথায় এক কলসি পানি ঢেলে দেব। মেয়েটি যেতেই আশরাফুল হাত ধরে বলবে এভাবে কী ঘুম ভাংগে?
-তো কিভাবে ভাংবে, স্যার?
- একটু, না,মানে, গালে....
-ওরে আমার দুষ্ট....। 
আশরাফুল এ রকম হাজার কল্পনা নিজের মনে  বুনিয়ে চলে। বন্ধুদের সাথে কথা কম বলেন, বাইরে বের হয় না বললেই চলে। আশরাফুলের হঠাৎ পরিবর্তন, একা একা হাসা, সন্ধ্যার পরেই বিছানাতে যাওয়া দেখে, বন্ধুরা বলে, দোস, তুই কার হাতে কুরবানী হয়ে গেলি-রে, দোস্ত? বল না কে সেই সুন্দরী? আশরাফুল হেসে বলেন, না ওসব কিছু না। এভাবেই বেশ ক'দিন কেটে যায়। আশরাফুল চিন্তা করে মেয়েটির পারিবারিক অবস্থা ভাল, আমার সাথে তারা হয়তো বিয়ে দেবে কী'না....। তাহলে মেয়েটিকে পেতে হলে দরকার নিজের যোগ্যতা অর্জন করা। পরীক্ষা পর্যন্ত অপেক্ষা করি। তাকে পাওয়ার জন্য ভাল রেজাল্ট অর্জন করা জরুরি। সে পরিকল্পনায় আশরাফুল পড়াশোনাতে মনোযোগী হয়।
.
মাস্টার্স পরীক্ষা শেষ করে, আশরাফুল নিজ বাড়ি চলনবিল এলাকার চলে যায়। ক্ষণে ক্ষণে ভাবতে থাকে কী উপায়ে মেয়েটির কাছাকাছি যেতে পারি। পড়ন্ত বিকালে চলনবিলের জলসমুদ্রে, ডিঙ্গি নৌকাতে একা একা ভাসতে থাকে। মেয়েটির অনুভবে বিভোর হয়ে,কখনো কখনো একা একা জলকেলি খেলা করে। তার কল্পনা এতটাই গভীর  যেন, মেয়েটির উপস্থিতি অনুভব করতে পারে। কখনো কখনো মনে হয় মেয়েটিসহ  ডিঙ্গি নৌকার দুই মাথায় দুইজন বসে হালকা স্রোতে ভেসে চলছে। মাঝে মাঝে গুনগুন করে গান গেয়ে তাকে শোনায়। কখনো কখনো জোৎস্না রাতে ডিঙ্গি নৌকায় বসে চাঁদের সাথে অনুভূতি বিনিময় করে। সিদ্ধান্ত নেয় আর এখানে নয়। মেয়েটির বাড়িতে চলে যাবে। একজন নারীর প্রেম, পুরুষকে পাগল করে দেয়।  ব্যক্তিত্ববোধ ধুলায় মিশে যায়। মনে হয় প্রেমে কোন লজ্জা নেই। তাকে পাওয়ার বাসনা প্রবল হয়ে উঠে। মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে আশরাফুল  বাড়ি থেকে, বেড়ানোর কথা বলে বের হয় মাদারীপুর। (চলবে)            
            
561 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ শনিবার, 03 অক্টোবর 2020 13:36
শেয়ার করুন
মোহাম্মাদ আজিজুল হক

মোহাম্মাদ আজিজুল হক ১৯৮৬ সালে ২ অক্টোবর, নাটোর জেলার গুরুদাসপুর উপজেলার চন্দ্রপুর গ্রামের নন্দকুজা নদীর তীরে, মধ্যবিত্ত এক মুসলিম পরিবারে জম্মগ্রহণ করেন। পিতা আলহাজ্ব মো. আব্দুস সাত্তার, মাতা মোছা. জয়নব বেগম (পরি)- এর চার সন্তানের মধ্যে তিনি সবার বড়। শৈশব থেকেই সাহিত্যের প্রতি তাঁর ছিলো ব্যাপক অনুরাগ। প্রিয় নদী নন্দকুজার ঢেউয়ের তালে, জোৎস্নাস্নাত রাতে ছন্দ খুঁজে পান। দশম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত অবস্থায় তার প্রথম কাব্যগ্রন্থ 'প্রেমাঞ্জলি' প্রকাশিত হয়। তারপর দীর্ঘ সময় সাতিত্য চর্চা থেকে দূরে থাকলেও ২০১৫ সালে, পুনরায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লেখালেখি শুরু করেন। ২০১৬ সালে,একুশে বই মেলাতে তাঁর ছোট গল্প 'দ্বীপান্তর' ২০১৭ সালে একুশে বই মেলায় 'সবুজের বুকে লাল' ও 'আলো ছায়া' কাব্যগ্রন্থ (যৌথভাবে) প্রকাশিত হয়। ২০২০ সালে অমর একুশে বই মেলাতে একগুচ্ছ গল্পনিয়ে 'স্বপ্নদেবী' প্রকাশিত হয়। বর্তমানে তার গবেষণা গ্রন্থ, নিজ জেলা নাটোর নিয়ে 'ঐতিহ্যের লীলাভূমি নাটোর' উপন্যাস 'আমি হেরে গেলাম' প্রবন্ধ 'এসো দুশ্চিন্তা ও বেকারত্বহীন জীবন গড়ি' প্রকাশের অপেক্ষায়। তিনি লেখালেখির সঙ্গে নিবিড় ভাবে জড়িত। তার লেখায় চিরায়ত গ্রামবাংলার সৌন্দর্য ফুটে উঠে, শৈল্পীক শব্দের কাঁরুকাজে। ডিপ্লোমা ইন ডেন্টাল কোর্স ও বি এস এস ডিগ্রী শেষ করে, মানব সেবার ব্রত নিয়ে চিকিৎসা সেবায় তিনি নিয়োজিত আছেন। খেয়ালী মনের মানুষ লেখালেখির মাঝে খুঁজে পান জীবনের আস্বাদন। দাম্পত্য জীবনে তিনি এক সন্তানের (রিফাতুজ্জামান ইমন)-এর জনক। বর্তমান বিভিন্ন পত্রিকায় তাঁর লেখা নিয়মিত প্রকাশিত হচ্ছে। আশা করি তার লেখা পড়ে পাঠক মুগ্ধ হবেন।

3 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.