মাছরাঙার বিয়ে ক'দিন ধরে মাছরাঙা শুধু মাছ শিকার করতে পারছে। অন্যরা তেমন সুবিধে করতে পারছে না। কাকডাকা ভোর থেকে ছোট্ট নদী তুরাগের তীরে বহু আশা করে, বাঁচার তাগিদে অন্যদিনের মতো আজও মাছরাঙার পাশাপাশি বক, সারস, দেশি হাঁস, রাজহাঁস, পানকৌড়ি সকলেই মাছশিকারে এসেছে। মাছরাঙার সাথে দুটি ছানাও আজ এসেছে। নদীর সৌন্দর্য, পাখিদের মাছশিকার ইত্যাদি দেখার জন্য তাদের বায়না ছিল। আজ তাদের জন্য সেই মহেন্দ্রক্ষণ। সকাল থেকেই মাছরাঙা ভালোই শিকার করছিল। বক, সারসপাখির আজ মাথায় হাত। তারা কোনো মাছই ধরতে পারছে না। মৃদুবাতাসে পানিতে ঢেউ বয়ে চলায়, তারা মাছের অবস্থান নির্ণয় করতে পারছে না। কিন্তু জঠরজ্বালা ক্রমে চরম আকার ধারণ করছে। হাঁসগুলো খাবার সংগ্রহে তেমন বাছবিচার না করায় তাদের তেমন অসুবিধে হচ্ছে না। ব্যাঙ, কেঁচো, ছোটমাছ যখন যা পাচ্ছে গোগ্রাসে গলদকরণ করছে। পেটপুরে অলস দুপুরের রোদে গা এলিয়ে কিছুটা বিশ্রামও করে নেয় হাঁসেরা। এদিকে ভদ্র পাখি পানকৌড়িরা বরাবরের মতো ঝটিকা অভিযান চালিয়ে কিছু পুটি, চিংড়ি শিকার করে সবাইকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে। একটা পানকৌড়ি হঠাৎ দেখতে পেল কিছু বক-সারস নদীর ঘাটের এক কোণে বসে কাঁদছে। বৃদ্ধ ঐ পানকৌড়িটি দৌড়ে তাদের কাছে গেল এবং কান্নার কারণ জিজ্ঞাসা করল। বক-সারস তাদের জঠরজ্বালার কথা বলল, কোনো শিকার ভাগ্যে না জোটার কথা শোনাল। পানকৌড়িটি চিন্তা করল, এর বিহিত একটাকিছু করতে হবে। সে সকল পাখিদের পুকুরের ঘাটে জরুরি তলব করল। খোঁজ নিয়ে দেখা গেল মাছরাঙার ঝুলিতে আজ সবচেয়ে বেশি শিকার পড়েছে। পানকৌড়িটি ভাবল, অবশ্যই বক-সারসদের জন্য একটা স্থায়ী সমাধান বের করতে হবে। সে সকলের মতামত নিয়ে একটা যুবক সারসপাখি এবং মাছরাঙার সাথে বিয়ে পাকাপাকি করে ফেলল। মাছরাঙার বিয়ে হলো সারসপাখির সাথে। মনের সুখে মাছরাঙার সাথে বসবাস করতে লাগল সারসপাখি।