বুধবার, 07 মার্চ 2018 09:07

বৃদ্ধাশ্রমে মা

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(0 টি ভোট)
                বৃদ্ধাশ্রমে মা
                ★বৃদ্ধাশ্রমে মা★
                মোঃ মোশাররফ হোসেন

সাজিদের বাড়ি মাদারীপুরের ছোট একটি গ্রামে।সাজিদ যখন খুব ছোট তখন সাজিদের বাবা মারা যায়।বয়স ৩/৪ হবে।সাজিদের বাবা একজন ভ্যান চালক ছিল।জায়গা জমিও তেমন কিছু ছিল না।জমি বলতে একমাত্র থাকার জন্য বাড়ির বিটা টুকুই।স্বামী মারা যাওয়া একমাত্র নাবালক ছেলেটি কে নিয়ে সাজিদের মা খুব অসহায় হয়ে পড়ল।মাথায় যেন রীতি মত আকাশ ভেঙে পড়ল।কি করবে দিশা পাচ্ছিল না। এমন সময় এলাকার কাসেমের বউ তার বাড়িতে ঝিয়ের কাজ করার জন্য অফার দেয়।এমন একটি সুযোগ হাত ছাড়া করতে চায় না।দু মুঠো খেয়ে বাচতে হলে কিছু একটা তো করতেই হবে।কাসেমের বাড়ি কাজ করলে অন্তত কিছু খেতে পাবে। নিজের জন্য না হোক ছেলের মুখের দিক তাকিয়ে হলেও কিছু করতে হবে।এই ভেবে কাজটি করতে রাজি হয়।সারা দিন কাজ করে যা পায় তা দিয়ে মা-ছেলে খেয়ে দিন কাটায়।এখন সাজিদকে স্কুলে ভর্তি করে মা।কষ্ট হলেও ছেলেকে পড়ালেখা করাবে এটা তার ইচ্ছা,প্রয়োজনে মানুষের দ্বারে হাত পাতবে।তাতেও তার লজ্জা নেই।ছেলে বড় হলে তার দুঃখ গুচে যাবে।তাছাড়া সাজিদের মেধাও ভাল।এভাবে দেখতে দেখতে ৫ বছর কেটে গেল।সাজিদ পঞ্চম শ্রেনিতে সমাপনি পরিক্ষায় বৃত্তি পেয়েছে মায়ের স্বপ্ন আরো দৃঢ় হল।সাজিদ কে এবার মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি করল।কাসেম মিয়া নিজে গিয়ে ভর্তি করে দিয়ে আসে।গ্রামের মানুষও তাকে কখুব ভালবাসে,এতিম বলে নয়....। আজ কাসেমের বাড়ি অনেক মেহমান এসেছে মায়ের আজ ফিরতে দেরি হবে। রাত ৮ টা বাজে এখনও কিছু কাজ আছে।মা বাড়ি আসলে খেয়ে সাজিদ ঘুমাবে তাড়াতাড়ি করে কাজ শেষ করে।
-বুবু আমি আজ আসি তাহলে?
-বসো খেয়ে যাও।
-বাসায় সাজিদ....
-আচ্ছা নিয়ে যাও তাহলে।
যা দেয় মা না খেয়ে ছেড়া আচলের নিচে করে ছেলের জন্য নিয়ে আসে।সাজিদও মায়ের গলা
না ধরে ঘুমাতে পারে না।কখনো না খেয়েও মায়ের গলা ধরে ঘুমিয়ে গেছে।আজ মা আসতে দেরি তাই মন খারাপ করে বসে আছে।বাবা তুমি ঘুমোওনি?
মা!
মা এসেছে দেখেই দৌড়ে মাকে জড়িয়ে ধরে।
এর মধ্যে কাসেম মিয়া তার পরিবার নিয়ে শহরে চলে আসে ছেলেদের সংসারে।
সাজিদের মা চিন্তায় পড়ে যায় এখন কি করে চলবে তার সংসার।তবু হাল ছাড়েনি মা। রাস্তায় মাটি কেটে,কারো বাড়ি ঝিয়ের কাজ করে সংসার চালায়।কখনো নিজে না খেয়ে সামন্য অর্জন দিয়ে ছেলে কে খাইয়েছে।ছেলে ভবিষৎ এর কথা চিন্তা করে কিছু জমা করে।হঠাৎ মা অসুস্থ হয়েছে প্রচুর জ্বর। সাজিদ কান্না করছে মা মা বলে।
-কিরে বাবা কান্না করছ ক্যা?
-আমার কিছু হয়নি মাথায় একটু জল পট্টি দে সব ঠিক হয়ে যাবে...
-তোর না পরীক্ষা?তুই পড় বাবা তুই অনেক বড় হবি
-মা তুমি কাজ করো আর আমি পড়ি,আমি আর পড়ব না।
-না বাবা তরে পড়তে ওইবো।আামর কষ্ট অয় অক।
এর মধ্যে সাজিদের মাধ্যমিক পরীক্ষা চলে আসে।ফরম ফিলাপ করতে হবে,পরীক্ষার জন্য টাকা লাগবে।মাও একটু অসুস্থ,মাকে বলার সাহস হয়না সাজিদের।তবু বলে..
মা ঐ শরীর নিয়েই কাজে যায় ঠিক মতো কাজ করতে পারে না..মালিক গালমন্দ করে মানা করে দেয়।এদিকে ফরম ফিলাপের পুরা টাকা জমা হয়নি।হতাশ হয়ে মা ভিক্ষা করতে শুরু করে...ভিক্ষা করে ছেলেকে পড়াতে থাকে।এদিকে ছেলের পরীক্ষার শেষ হয়েছে।দু মাস পর ফলাফল  দিবে।আশা ভাল র‍্যাজাল করব ছেলে।ছেলেকে ঢাকা পাঠাবে পড়াতে তাই এই দু মাস ভাল ভাবে প্রস্তুত হতে বলে।তবু ছেলেকে কাজে যেতে দেয় না।আজ ফলাফল দিয়েছে ভাল ফলাফল করেছে সাজিদ।তাদের স্কুলে প্রথম হয়েছে।
সাজিদ কলেজে ভর্তি হতে ঢাকা চলে আসে।ছেলে কে বিদায় দিতে মা নয়ন জলে ভেসে যায়।তবু হাসি নিয়ে ছেলে কে বিদায় দেয়।সাজিদ ঢাকা ভর্তি হয়ে পড়তে থাকে।এখানে ভালভাবেই পড়া লেখা করছে সাজিদ মাঝে মধ্যে বাড়ি গিয়ে  মাকে দেখে আসে।কিছু টিউশনি করে সাজিদ পড়ালেখার খরচ চালায় এখন আর মায়ের থেকে টাকা নিতে হয় না।এতে করে মা একটু খুশি হয়।মা কিছু টাকা দিতে চাইলেও সে আনে না।এভাবে সাজিদের উচ্চ মাধ্যমিক শেষ হয়।বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পালা কিন্তু বেশ কিছু টাকা লাগবে।কি করবে ভেবে না পেয়ে মাকে বলে মা কিছু একটা দিতে পারলে হবে।মা তার জমানো দশ হাজার টাকা পুরো পাঠিয়ে দেয়। সাজিদ ভার্সিটিতে ভর্তি হয়।এর মধ্য একটি মেয়ে জেরিনের সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে।প্রেম চলে পড়ালেখা চলে।এখন আর আগের মত বাড়ি যায় না।মাকে তেমন কোন খবর দেয় না।এভাবে অর্নাস শেষ করে।এ দিকে জেরিন বিয়ের জন্য চাপ দিচ্ছে। কেবল অর্নাস শেষ হয়েছে বেকার হাতে তেমন কোন টাকাও নেই কি করে বিয়ে করবে।জেরিন একটি চাকুরির খোজ দেয় তবে ঘুষ দিতে হব অনেক টাকা।টাকা পাবে কই?এ কথা জেরিন কে বলতেও পারছে না।বাড়ি যায় মাকে বলে। মা কোথায় পাব এতো টাকা।তাই বাবার শেষ স্মৃতি মায়ের আশ্রয় স্থল বিক্রি করার কথা বলে।মা রাজি না হলে মাকে বুঝিয়ে রাজি করে মাকে নিজের সাথে ঢাকা নিয়ে আসে।চাকুরি হয়...জেরিনকে বিয়ে করে সংসার চলতে থাকে।মায়ের আজ বয়স হয়েছে একটু বেশিই কথা বলে।মাঝমধ্যেই অসুখে ভুগেন।রাত ভর কাশি হয়,এতে ঘুম হয়না।এটা সহ্য করতে পারে না জেরিন।প্রায়ই সাজিদের সাথে ঝগড়া হয় এ নিয়ে।এরমধ্যে সাজিদ একটি মেয়ের বাবা হন।মেয়েটি খুব মিষ্টি।তবে নাতির কাছে তেমন একটা যেতে দেয় না বউমা।আস্তে আস্তে বড় হয় নাতিন। হাটতে শিখে,কথা বলতে শিখে।দাদীর সাথে সময় কাটাতে ভালই লাগে সাজিদের মেয়ে জুই এর।এখন আর যেতে হয় না নাতিন ছুটে আসে।বাবা কিছু আনলে দাদী কে নিয়ে খায়।তবে ব্যাপার টা ভাল লাগে না জেরিনের।শাশুড়ির সাথে এ নিয়ে কথা বলে জেরিন।
-মা,আপনি ওর হাতের খাবার কেড়ে খান?ছি মা..
-বউমা!
-থাক্ থাক্ হয়েছে
-ও বাচ্চা মানুষ..দিলেই খেতে হবে?
আজ আসুক আপনার ছেলে আপনাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসতে বলবো তাই ভাল।ঐখানে থাকবেন খাবেন আর প্যাচাল পারবেন কোন ঝামেলা থাকবে না।এ কথা বলে বউমা চলে যায়।রুমে গিয়ে অঝরে কাঁদতে থাকে মা।জুই আসে দাদী আসো আমরা পুতুল বিয়ে খেলি।এ বলে হাত টানতে থাকে কিন্তু সে যায় না বলে জুই কাঁদতে কাঁদতে চলে যায়। জুই কে কাঁদতে দেখে জেরিন গালাগাল করতে থাকে।বুড়ি মরেও না।আমার রাগ আমার বাচ্চা মেয়ের সাথে দেখায়।মায়ের কান্না আরো বেড়ে যায়।
সাজিদ বাড়ি আসে,
রাতে সবাই এক সাথে খেতে বসে সাজিদের প্লেটে মাছের মাথাটি দিলে মায়ের প্লেটে দিতে চাইলে জেরিন বলে মা তো অনেক খেয়েছে মা বুড়া মানুষ মাথা খেলেই কি মাছ খেলেই কি? এ কথা শুনে মা খাবার রেখে উঠে যায়।
- দাদী দাদী।খাও...
তুমি এমন এ কথা এখন না বললেই পারতে।
বল ছিলাম কি মাকে বৃদ্ধাশ্রমে রেখে আসো, মা সেখানেই ভাল থাকবে।তাছাড়া আমরা তো ঠিক মত মায়ের যত্ন নিতে পারি না।আমি বাসায় কাজ আর জুই কে নিয়ে ব্যস্ত থাকি।তুমি অফিসে.....

সাজিদ আপত্তি জানালে জেরিন বলে আমার সাথে সংসার করতে হলে মাকে বৃদ্ধাশ্রমেই রেখে আসতে হবে....।আমি বুড়ির সাথে সংসার করতে পারব না।সারাদিন বুড়ির ক্যাট ক্যাট ভাল লাগে না।রাতে ঘুমতে পারি না।সাজিদ সারা রাত ঘুমাতে পারেনি।কি করবে ভেবে পায় না।সকাল হলে জেরিন বলে অফিসে যাবার সময়  মাকে নিয়ে যাবে।সাজিদ মায়ের কাছে গিয়ে বলে মা..
তখনি মা বলে ঠিক আছে বাবা আমি তোদের সব কথা শুনছি।আমি তোদের সংসারে বোজা অইতে চাই না।চল আামকে নিয়ে চল....মা!
সাজিদ মাকে নিয়ে যায় বৃদ্ধাশ্রমে রেখে অফিসে যায়।আজ আর আগের মত তৃপ্তির সহিত কাজ করতে পারে না।কোন কিছুই ভাল লাগে না।চোখে শুধু ছোট বেলার কথাগুলো ভেসে ওঠে।অফিস শেষে বাসায় যায়।সকালে জুই স্কুলে গিয়ে ছিল স্কুল থেকে এসে দাদী দাদী বলে কান্না করছে।বাসায় এসে এ দেখে সাজিদ আরো ভেঙে পড়ে।অনেক কিছু বলে শেষ পর্যন্ত কাল পরশু দাদীর কাছে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে জুই কে শান্ত করে।কিন্তু একটা প্রশ্ন থাকে দাদী কোথায়? সাজিদ জবাব দেয় দাদী বৃদ্ধাশ্রমে।কেন?বুড়ো হয়ে গেছে তো তাই।জুই কিছুতেই মিলাতে পারছে না বুড়ো হলেই কি মানুষকে ঐ জায়গায় যেতে হয়?সকাল হলে তাড়াতাড়ি  মাকে ডেকে তুলে 
-মা,মা ও মা উঠো আমাকে স্কুলে নিয়ে যাবে না?
আজ প্রতিদিনের উল্টো।যাকে ডেকে বকে স্কুলে নিয়ে যাওয়া যায় না সে আজ যাওয়ার জন্য পাগল!ব্যাপারটা বুঝতে পারল না,তবে ভাবালো।হালকা নাস্তা করেই বেড়িয়ে পড়ে।যাই হোক স্কুলে দিয়ে আসা হলো।ছটফট করছে কখন স্যার আসবে।ক্লাসে ম্যাডাম আসে..। ক্লাস শেষে জুই,
-ম্যাম...
- কি কিছু বলবে? 
-একটা প্রশ্ন ছিল।বলবো?
-বল..
-বৃদ্ধা আশ্রম কি?
-ম্যাম হতভাগ  হয়ে চেয়ে থাকে।
-কোন জবাব না পেয়ে বলে ও আচ্ছা বৃদ্ধ হলে মানুষ কেন ঐ  জায়গায় যায়?
কথাটা শুনে ম্যাডাম অবাক হয়ে যায় চোখের কোনায় দুফোটা অশ্রু জমে যায়।ম্যাডাম ওর মাথায় হাত বুলায় আর বলে বড় হলে সব জানতে, বুঝতে পারবে। ওর মনে ক্ষুধা মিঠে না।স্কুল শেষ করে বাড়ি যায় ৭ বছরের এই মেয়েটি সারাদিন কি যেন ভাবছে।কখন যাবে দাদীর কাছে কোথায় কেমন আছে দাদী...
রাতে খাবার খাওয়ার সময় হয়েছে কিন্তু জুই খেতে আাসেনা ডাকলে বলে আমার ক্ষুধা নেই।সাজিদ আর জেরিন খেয়ে গেলে জুই সাজিদকে জড়িয়ে কেদে দেয়
আব্বু তুমি আমাকে দাদীর কাছে নিয়ে যাবে।আমার সাথে খেলার কথা বলার কেউ নেই আমার ভাল লাগে না।আচ্ছা কাল।এখন ঘুমাও।পরদিন শুক্রবার অফিস ছুটি কোন কাজ  নেই সারাদিন ঘুমিয়ে তাই বিকেল বেলা জুইকে সাথে নিয়ে সাজিদ বেড়িয়ে পড়ে বৃদ্ধাশ্রমের লক্ষ্যে।এদিকে সারাদিন দাদী দাদী করে পুরো বাড়ি তুলে নিচ্ছে জুই।মায়ের হাতে মারও খেয়েছে।আসতে আসতে বিকাল ৫. ৩০ মিনিট বেজে সময়।বৃদ্ধাশ্রমে ঢুকতেই চোখে বৃদ্ধ বৃদ্ধ লোক বিশেষ করে নারীরাই বেশী।একটু এগিয়ে যেতে সাজিদ শুনতে পায় কে যেন বলছে আল্লাহ আমার বাবা যেখানেই থাকুক ওকে ভাল রেখ,ওদের সংসারে সুখ শান্তি ভরে দিও।আমার দিদি বোনটাকেও ভাল রেখো।আর কেউ নয়।রুমে ঢুকতেই দেখে সাজিদের জনম দুঃখী মা মোনাজাত করে দু হাত তুলে দোয়া করছে।পাশেই বিছানার উপরে একটি অর্ধ সেলাই করা রুমাল তাতে লেখা বাবা তুই কেমন আছোত।সাজিদ চোখের জল ধরে রাখতে পারে না। সাজিদের মনে বিবেক একটা কবিতা বলে...
            মা তুমি কেমন আছো?
            শিশু থেকে করছো বড়
            লালন করছো আদর যতনে।
            তোমায় কত কষ্ট দিচ্ছি
            রেখেছি বৃদ্ধাশ্রমে।
            ভুলনি আমায় কষ্টের মাঝে
            অন্যায় গুলো ক্ষমা করে
            মোনাজাত করছো মঙ্গলে।
            আমার দেখা না পেয়ে
            ঝরছে অঝরে নয়ন জল।
            জানালার পাশে খুজে যাও
            স্মৃতি যত ছিল আমার।
            তোমার হাতের রুমালে
            সুই সুতোয় রঙিন করে
            লিখেছ বাবা আমার নাম।
জুই ডাকছে দাদী দাদী।মোনাজাত শেষ করেই মা সাজিদ কে দেখে খুশিতে আত্মহারা বাবা তুই ক্যামন আছত।কতদিন তোরে দেখি না দিদি বোন তুমি ক্যামন আছো তোমার মা কই মা ক্যামন আছে।সাজিদ বউমা আসেনি।এ বলে নয়নের জল ছেড়ে দেয়।কথা বার্তা শেষেনসাজিদ মাকে নিয়ে যেতে চায়।কিন্তু মা যায় না।বলে আমি এখানেই ভাল আছি।জুই দাদীর হাত ধরে কাঁদতে থাকে আর বলে দাদী চলো না আমার সাথে খেলবে।না মা তোমায় রাগ করবে।না মা রাগ করবে না। চলো।সাজিদ জুইকে নিয়ে চলে যায়।জুই কাদে,সাজিদ কাদে।এদিকে মাও জানালার পাশে গিয়ে কাঁদতে থাকে। মনে বড় আশা ছিল বউমাও বুঝি আসছে  নিয়ে যাবে বাড়ী যাবে আবার নাতিনের সাথে খেলবে।কিন্তু কোথায় কি।মা কাদে আর সেই সাজিদকে ভাবে যে একটি রাত মায়ের গলা না ধরে ঘুমোয় নি।এরমধ্যে বাসায় ফিরে।দেখা হলো তো দাদী কে মন ভরছে।আচ্ছা তুমি অমন করো কেন।দাদীকে সহ্য হয় না তোমার।মা জানো দাদী জিজ্ঞাসা করেছে তুমি কেমন আছো।আচ্ছা মা নানি তো দাদীর থেকে বেশী বুড়ো নানীকে ঐ জায়গায় রাখা হয়নি কেন।ঐখানে রাখলে ভালই হত এক সাথে দুজন কে দেখে আসতে পারতাম তাছাড়া তুমিও যেতে।নানী কে কি ঐখানে রাখবে।ছোট ছোট এই কথা গুলো সবার টনক নাড়িয়ে দিচ্ছিল।জেরিন রাগ হয়ে ওর গালে একটি থাপ্পড় মারে।সাজিদ রাগ হয়ে বলে তুমি ওকে মারলে কেন।ও তো ঠিক কথাই বলেছে।আজ তোমার জন্য আমার মা আমার কাছে নেই। জেরিনও ভাবতে থাকে।তার মনে হতে লাগে এটা যদি তার মা হতো।হঠাৎ জেরিন হাউমাউ করে মা মা করে কেঁদে উঠে।কেউ কিছু বুঝতে পারছে না।জেরিনের জ্ঞান চলে যায়।জ্ঞান ফেরা মাত্র জেরিন বলতে থাকে সাজিদ চলো আমরা মাকে নিয়ে আসি। মা আসবে না।চলো।আমরা মায়ের সাথে অনেক অন্যায় করেছি।প্রয়োজনে মায়ের পা ধরে মাফ চেয় মাকে ফিরিয়ে আনব।এখন তো রাত ৯ টা বাজে। সকালে যাই।না। চলো এখনি যাব।আমরা মাকে অনেক কষ্ট দিয়েছি।তিনজন মিলে রাতেই সিএনজি ভাড়া করে চলে যায়।গিয়ে জেরিন,সাজিদ মাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। আর বলে মা আমরা আপনার সাথে অনেক অন্যায় করেছি আমাদের আপনি মাফ করে দিন। বাড়ি ফিরে চলুন।মাও নয়নে জল ছেড়ে দিয়ে বুকে জড়িয়ে মা বলতে লাগে, না তোমাদের প্রতি আমার কোন রাগ নেই মা।তোমরা আমার ছেলেমেয়ে।তোমাদের ভুল হতেই পারে ও কিছু না।তাহলে চলুন!সাজিদ,জেরিন,জুই আর মা  মিলে বাড়ি চলে আসে।সারাদিন হৈহুল্লায় মেতে থাকে সারা বাড়ি।এখন আর এসব জেরিনের কাছে খারাপ লাগে না।বরং বেশ ভালই লাগে।একদিন মা বাড়ি না থাকলে সারা বাড়ি জেরিনের কাছে শূন্য মনে হয়.....
এটাই ভালবাসা।ভালবাসা সব কিছুই অতিব মিষ্টি।ঘৃনায় আসে না মনে তৃপ্তি।ভালবাসার সবই ভাল সেটা হোক যত কষ্টি।            
            
723 বার পড়া হয়েছে সর্বশেষ হালনাগাদ বুধবার, 07 মার্চ 2018 14:44
শেয়ার করুন
মোঃ মোশাররফ হোসেন

আমার নাম মোঃ মোশাররফ হোসেন।পিতার নাম আঃ মান্নান বেপারী মাতার নাম মজিদা বেগম। ২৫ ডিসেম্বর শরিয়তপুর জেলার জাজিরা থানাধীন বি কে নগর কাজী কান্দি মাতুল আলয় জন্ম গ্রহন করি।পৈত্রিক নিবাস একই থানার পূর্ব নাওডোবা মঙ্গল খার কান্দি।ভাইবোনের মধ্যে আমি দ্বিতীয়। এলাকার চরখাগুটিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেনি পাশ করি।পরে পূ্র্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় ভর্তি হলেও বি কে নগর পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জে এস সি এবং পূ্র্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ে এস এস সি পাশ করি।বর্তমান ঢাকায় জিনজিরা পি. এম. পাইলট স্কুল এ্যান্ড কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক চূড়ান্ত বর্ষে। পারিবারিক ও অন্যান্য কারনে পড়ালেখা বাঁধা প্রাপ্ত হয়।নিজ চেষ্টায় পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ায় পড়ালেখার গতি ধীরস্থির।এছাড়াও আমার এখন বেশি পড়তে ভাল লাগে না।তবে সাহিত্য: জীবন কাহিনী,গল্প, উপন্যাস, ছোট গল্প, স্মৃতিচারন মুলক ও স্বাবলম্বী ভাষায় লেখা বই পড়তে বেশ ভাল লাগে।আমার স্বপ্ন ছিল অনেক কিন্তু সৃষ্টি প্রদত্ত কিছু গুন ও পারিপার্শ্বিক কারনে সবার সব সম্ভব হয় না।এখন আমার স্বপ্ন সাংবাদিক হবো এবং পাশাপাশি লেখক।ছোটবেলা চাচাতো ভাইয়ের মুখে তার বন্ধুর ডাইরি ভর্তি লেখার গল্প শুনি আর স্বপ্ন দেখি আমিও লিখব।সেই স্বপ্ন থেকেই আমার কলম গতিশীল। তাছাড়া আমার লেখনির পিছনে আরো একজনের কথা না বললেই নয়, সে হলো আমার আপন বন্ধু, বন্ধু সুলভ বোন মোসাঃ রুমা আক্তার।যার উত্সাহ আমার শক্তি হিসেবে কাজ করে। মা-বাবা, বড় ভাইয়ের ভালবাসাই আমার জীবনের সম্পদ।

1 মন্তব্য

  • মন্তব্যের লিঙ্ক Unrella শুক্রবার, 13 অক্টোবর 2023 10:42 লিখেছেন Unrella

    statins, rifampicin organic anions from the blood into the hepatocytes 10, 11 buy cialis online no prescription That s our job as humans

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.