কান্তারের পথ ছেড়ে সন্ধ্যার আঁধারে সে কে এক নারী এসে ডাকিল আমারে, বলিল, তোমারে চাই: বেতের ফলের মতো নীলাভ ব্যথিত তোমার দুই চোখ খুঁজেছি নক্ষত্রে আমি— কুয়াশার পাখ্নায়— সন্ধ্যার নদীর জলে নামে যে-আলোক জোনাকির দেহ হতে— খুঁজেছি তোমাকে সেইখানে— ধূসর পেঁচার মতো ডানা মেলে অঘ্রাণের অন্ধকারে ধানসিড়ি বেয়ে-বেয়ে সোনার সিঁড়ির মতো ধানে আর ধানে তোমারে খুঁজেছি আমি নির্জন পেঁচার মতো প্রাণে। দেখিলাম দেহ তার বিমর্ষ পাখির রঙে ভরা: সন্ধ্যার আঁধারে ভিজে শিরীষের ডালে যেই পাখি দেয় ধরা— বাঁকা চাঁদ থাকে যার মাথার উপর, শিং-এর মতন বাঁকা নীল চাঁদ শোনে যার স্বর। কড়ির মতন শাদা মুখ তার, দুইখানা হাত তার হিম; চোখে তার হিজল কাঠের রক্তিম চিতা জ্বলে: দখিন শিয়রে মাথা শঙ্খমালা যেন পুড়ে যায় সে-আগুনে হায়। চোখে তার যেন শত শতাব্দীর নীল অন্ধকার; স্তন তার করুণ শঙ্খের মতো— দুধে আৰ্দ্ৰ— কবেকার শঙ্খিনীমালার; এ-পৃথিবী একবার পায় তারে, পায়নাকো আর।