গগনে উদীত রবি সুপ্ত শশধর, মেঘমালা সবে সাজি যেন ফুলদল! গর্জে বিজলী-বজ্র ক্রুদ্ধ ধেনু রবে, সহসা ছুটিল ঝড় শুষ্ক মর্ত্য বুকে। অদৃষ্ট-চিন্ত পথিক;ভীরু অন্তর- বৃক্ষসম কম্পিছে সদা থরথর! ভীত পথিক;খুজি ক্ষুদ্র আশ্রয়- অলক্ষ্যে জঁপিয়া ইষ্ট-নাম, প্রভুর তরে আরতি তাহার- মোরে ভিক্ষা দাও হে প্রাণ! আরতি তাহার হইলো মঞ্জুর বটবৃক্ষের বরে! পথ-কিনারে দাঁড়ায়ে বৃক্ষ মানব সেবার তরে। প্রেম-ভরি বৃক্ষ পথিকে করিলো ছাউনি দান, ঝঞ্ঝার সনে রণ সংগ্রামে, পথিকে দানিল প্রাণ। লভিয়া আশ্রয় পুলকিত হৃদে- পথিক স্মরিল ঈশ্বরে, প্রণাম রইলো তোমাতে প্রভু, ভিক্ষে দিলে গো মোরে! দেহে অবসাদ,হিম সমীরণে; আঁখি মুদে নিদ্রা-মজি বটবৃক্ষ তলে। টুটিলো তন্দ্রা তাঁহার ক্ষণকাল পরে- উঠিল সূর্য্য কিরণ ঈশান-নৈঋত ভরে। ঈষৎ হাসিল পথিক বঙ্কিম অধরে- বাঁচিল প্রাণ! চলি ধীরপায়ে মম গৃহপানে! সহসা চমকিলো পথিক দেখি বটবৃক্ষ- ভাবিছে এ কোন বিটপি ফলিছে পথ-ধারে? ফল নাহি তার,শোভা নাহি যার- কি হেতু রাখিব তারে পথ কিনারে? পদে পদে ইহা দেবে শুধু বাধা- নির্দেশিবে ভূল পথ ক্লান্ত পথিকে। কহিল মৃদু রবে- বঙ্কিম পথখানা হইবে সরল- এই বৃক্ষ সরাইয়া দিলে! শানিত কুঠার হস্তে উদ্যত পথিক- ছেদিবে বৃক্ষমূল! ভূলি সদ্য অতীত সহসা- জিংঘাসা পিয়াসে বদ্ধমূল! সচকিত বৃক্ষ শুধালো পথিকে- কে তুমি মম ছায়াতলে দাঁড়িয়ে? ক্ষণকাল আগে প্রেম কৃপা ভরে- দিলুম আশ্রয়;নিদ্রা সুখ তব তরে! যাহার বরে তোর বাচিল প্রাণ- কিভাবে বধিবে তার পরাণ? দেব অভিশপ্ত বৃক্ষ আমি, তোমাতে সঁপেছি কোমল প্রেম- ত্যাগিয়া মম সর্বস্বত্ব। বিষ্ণু বরে মানুষ তুমি! সঁপিলে কঠোর কুঠার- ইহাই কি তোমার মনুষ্যত্ব?