শান্তি নগর ইউনিয়ন-এ এক জন কবিরাজ বাবা ছিল।কবিরাজ বাবার এক গরিব ছোট ভাই ছিল,নাম ছিল তার করিম মিয়া।কবিরাজ বাবা নিয়মিত রোগিদেরকে চিকিত্সা দিত।কবিরাজ বাবার কবিরাজী ব্যবসায় অনেক টাকা পয়সা আয় হত।কবিরাজ বাবা প্রচুর অর্থ ব্যয় করে একটি বিল্ডিং ঘর করল।কবিরাজ বাবার পরিবারের সূখের জীবন অতিবাহিত হচ্ছে।
এক দিন কবিরাজ বাবার ছোট ভাই করিম মিয়ার ঘরে খাবার মত কোন খাদ্য ছিল না।অনাহারে করিম মিয়ার পরিবারের সবাই মরতে ছিল।করিম মিয়া তার বড় ভাই করিবাজ সাহেবের কাছে গেল কিছু খাবার আনতে।করিম মিয়া কবিরাজের কাছ থেকে কিছু চাইল,কবিরাজ সাহেব তার ছোট ভাই করিম মিয়াকে কিছুই দিল না এবং করিম মিয়াকে ফিরিয়ে দিল।
আহ,করিম মিয়া মনে কষ্ট নিয়ে,পেটের ক্ষুধা নিয়ে এবং পরিবারের অভাবের চিন্তা মাথায় নিয়ে পথ চলতেছে।হঠাত্ করিম মিয়া দেখতে ফেল,এক বৃদ্ধ লোক পথের ধাঁরে কিছু ভারি জিনিস নিয়ে বসে আছে।বৃদ্ধ লোকটি করিম মিয়াকে বলল,তুমি আমার এই জিনিস গুলো আমার বাড়ীতে পৌছে দিয়ে আসলে আমি তোমাকে কিছু স্বর্ণ দেব।করিম মিয়া রাজি হল এবং বৃদ্ধের বাড়ীতে বৃদ্ধের জিনিস গুলো পৌছে দিল।বৃদ্ধ কথা মত স্বর্ণে একটি ভার করিম মিয়ার হাতে দিল।
করিম মিয়া স্বর্ণের ভারটি নিয়ে বাজারে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিল।পথে গ্রামের সর্দার সাহেব করিম মিয়ার হাতে স্বর্ণের ভারটি দেখে বলল,করিম মিয়া_তোমার হাতের স্বর্ণের ভারটি আমাকে দিয়ে দাও।আমি তোমাকে একটি যাদুর চাকা দেব,তুমি যাদুর চাকাটিকে ঘুরিয়ে দিয়ে যা চাইবে তাই যাদুর চাকা থেকে বের হবে।করিম মিয়া রাজি হয়ে স্বর্ণের ভারটি সর্দারকে দিয়ে দিল এবং যাদুর চাকাটি করিম মিয়া মাথায় করে তার বাড়ীতে নিয়ে আসল।
করিম মিয়া বাড়ীতে এসে বউ বাচ্চাদের সাথে নিয়ে যাদুর চাকাটিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বলল,
চাকা ঘুর চাউল বাহির কর।সঙ্গে সঙ্গে যাদুর চাকা থেকে চাউল বের হতে লাগল।যাদুর চাকা থেকে চাউল,ঢাল,করিচ,ধঁনে,মশলা ইত্যাদি সহ যা চাই তা বাহির হত।করিম মিয়ার অভাব দূর হয়ে গেল।
করিম মিয়া বাকি খাবার গুলো বাজারে বিক্রি করে প্রচুর টাকা আয় করতে লাগল।করিম মিয়া এক সময় কবিরাজের চেয়েও বেশি টাকা,পয়সা ওয়ালা হয়ে গেল।করিম মিয়া বিলাস বহুল একটি বাড়ী তৈরী করল।
এক দিন কবিরাজ বাবা করিম মিয়ার ঘরে এসে চাকাটি দেখল।করিম মিয়া তখন খাবার জিনিস বিক্রি করতে বাজারে গেল।এই সুযোগে কবিরাজ বাবা যাদুর চাকাটি চুরি করে তাঁর বাড়ীতে নিয়ে আসল।
"আমরা যদি যাদুর চাকাটি আমাদের ঘরে ব্যবহার করি,তাহলে সবাই জেনে যাবে.সুতরাং আমরা অন্য কোথাও চলে যাই,এটাই ভাল হবে।এই কথা কবিরাজ বাবার বেগম সাহেবা কবিরাজ বাবাকে বলল।কবিরাজ বাবা তাঁর বিবির কথায় একমত হল।
কবিরাজ বাবা সহ_পরিবার একটি দ্বীপের উদ্দেশ্যে বাড়ী থেকে রওনা দিল।দ্বীপটিতে যেতে হলে নৌকা করে যেতে হবে।তাই করিবাজ বাবা বউ,বাচ্চা এবং যাদুর চাকাটি সহ নিয়ে নৌকায় ওঠল।
নৌকা চলতেছে।সাগরের কিছু ভাগ অতিক্রম করল এবং দ্বীপের কাছাকাছি আসল।কবিরাজ বাবা চাকাটিকে পরীক্ষা করে দেখার জন্য যাদুর চাকাটিকে ঘুরিয়ে দিয়ে বলল,"ঘুর যাদুর চাকা,লবণ বের করে দেখা"।সাথে সাথে যাদুর চাকাটি থেকে লবণ বের হতে লাগল।কবিরাজ বাবার জানা ছিল না,কি ভাবে যাদুর চাকাটিকে বন্দ্ধ করতে হবে।এই জন্য যাদুর চাকাটি থেকে লবণ বের হতে হতে নৌকা ভরাট হয়ে নৌকাটি সহ কবিরাজ বাবার বউ,বাঁচ্চা সবাই সাগরে ডুবে মারা গেল।
কিছু দিন পর কবিরাজ বাবার সহ তাহার বউ,বাচ্চার মৃত দেহ পানিতে ভাসতে ভাসতে সাগরের তীরে এসে পৌছল.এবং লাশ গুলোর র্দুগন্দ্ধে শান্তি নগর এলাকার আবহাওয়া দূষিত হয়ে গেল।লাশ দেখতে লোক জন আসে নাকে কাপড় দিয়ে।
"লোভ করল কবিরাজ,
জীবন হল সর্ব নাশ"।
[এই জন্যেই তো অতীতে শ্রদ্ধেয় লেখক বা কবি'রা বলে ছিলেন_লোভে পাপ,পাপে মৃত্যু।আমি বলি"কবিরাজ বাবা,স্বরণ রেখ এই কথা"]।
জামশেদ(বদরী).