ছাত্র জীবন মধুর জীবন সবাই তা জানে।ছাত্র জীবনেই গঠে যায় হাজার রকমের স্মৃতি।মাদ্রাসায় কোন এক সময় অনুষ্টান চলতেছে।আমেনা বেগম আমার পুফাত বোন,আবার ক্লাসমিট।হঠাত্ সে এসে বলল আমাকে,জামশেদ তুর ইয়ে পান খাবে(আমার মনের মানুষের নাম ধরে),আমি বললাম,আচ্ছা ঠিক আছে আমি আনতেছি।চলতেছি বাজারের দিকে(বাজারের পাশে মাদ্রাসা)।আবার আমেনা আমাকে ডাকিয়ে বলিল পানে মিষ্টি দিতে।গেলাম জায়রা খাকুর দোকানে।সে সময় বদরখালী বাজারে জায়রা খাকুর দোকান জন প্রিয় ছিল।(এখন হয়তো জায়রা খাকু আর নাই)।স্কুল,মাদ্রাসার ছাত্র/ছাত্রী সবাই মিষ্টি জর্দার পান পচন্দ করত।মিষ্টি জর্দার ছয়টা পান নিয়ে আসিলাম।আমেনার হাতে পাঁচটা মিষ্টি পানের কেলি দিলাম।একটি পানের কেলি আমেনা খাবে,আরেকটি খাবে মোর প্রিয়া।বাকি তিনটা অন্যদের জন্য।একটা আমি নিজেই খাইলাম।০৫থেকে ১০ মিনিট পর আমেনা বেগম একটি পানের কেলি নিয়ে পিরে আসিল।আমি বললাম,কিরে আমেনা কি হইল,সে কি বলিল?আমেনা আমাকে বলল,সে তুর পান খাইত নয়।তাঁর সন্দেহ হইল,আমি হয়তো তাঁর মিষ্টি পানে তাঁর প্রেম পাইতে দুষ্টামি করে মন্ত্র করিতে পারি।আমেনাকে জিঙ্গেস করলাম,পানের কেলি কি তাঁর হাতে নিয়ে ছিল?সে বলিল হ্যাঁ নিয়েছে খুলে দেখেছে,আবার তুরে খাইতে বলছে,তাঁর হাতে লাগার কারণে সেই তাঁর হাতের মিষ্টি মাখা পানটিও আমি খাইলাম।আবার মন্ত্র-তন্ত্র আমার মনের কল্পনাতেও ছিল না।কারণ,
আমি জানতাম,
মন্ত্রের প্রেমে,যন্ত্রণা কত!
.
.
.
এক দিন হঠাত্ গ্রামে বন্যার পানি আসল।অনেকের অনেক মূল্যবান জিনিস পত্র পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে ছিল।ভালবাসার মানুষটির বাড়ীর পানির মটরটি(বৈদ্যুতিক পানির পাম্প)নষ্ট হয়ে গেল।দোকানে এনে ঠিক করলাম কোন রকম।আবার মটরটা ঠিক আগের স্হানে পিটিং করতে গেলাম।পিটিং হইল শেষ।এবার হাত মূখ পরিস্কার করে এসে বসলাম,তাঁর পড়ার টেবিলে।কারণ নাস্তা দেবে খাইতে।তাঁর অনুমতি না নিয়ে দেখা শুরু করলাম,তাঁর কিতাব(বই)গুলো।বাহ কি যে সুন্দর!তাঁর বাঁকা হাতের টানা লেখায় তাঁর নাম দেখা কিতাব/বইয়ের উপর।খাইতে দিল চিড়া কলা।চিড়া গুলো ছিল সরকারের দেওয়া ত্রান(অনুদান),বুঝতে বাকি রহিল না আমার।চিড়ার সাথে সেই ধানের তুষ(চামড়া)পাওয়া গিয়া ছিল।যাক খাইতেছি আর মুচকি হাঁসতেছি.কলা তিনটা আমি একাই খেয়ে করলাম শেষ।আমার অবস্তা দেখে আরো হাঁসল তাঁর বাড়ীর সেই ছোট্ট পিচ্ছি রযিন হুজুরটি(সে হয়তো তাঁর ছোট ভাইকে পড়াত)।এইবার দিল পানের প্লেট,বদরখালী বাজারের সেরা,মহেশখালীর মিষ্টি পান তাঁর বাড়ীতে খাই,সেই দিন বুঝিতে পারিলাম,তাঁর বাবা পয়সা ওয়ালা।পান একের পর এক করে সব পান খাওয়া হইল শেষ।আবার দুই তিনটার মত দিল।রযিন হুজুর আবারো হাঁসে আর বলে!আপনার লজ্জা নাই?উত্তরে আমি বলিলাম(আসতে করে তাঁর কানে যাতে না যায়),আছে আছে মাঝে মধ্যে,তবে তাঁর বেলায় নাই।সর্বশেষ পানটি খাওয়ার সাথে সাথে বুকে যন্ত্রণা হইল শুরু,যা এখনও পর্যন্ত পান খাইলেই বুকে যন্ত্রণা শুরু হয়।ভালবাসার মানুষ বীষ দিলে তাও খাইতে হয়।তাই দুঃখ করি না,ভয়ও করি না।আল্লাহ কারিম
জামশেদ (বদরী).