বিরান মরুর পথ-----
অবশেষে পলাতক মানুষের দল
আবার কি ঘর পাবে? জীবনের গান
যৌবনের লোকালয়ে আবার কি ফিরে পাবে ভাষা?
এক ঝাঁক স্বপ্ন নিয়ে, আসবে ফিরে সজল, রহিম, বাবু,
সকিনা ও জরিনার কোলের ছেলেরা,
ওঠবে কি চাঁদ সাধের এ আঙ্গিনায়? বাংলার নদীগুলো
তারা-ফুলের হিল্লোলে মাতোয়ারা করবে কি গ্রাম-গঞ্জের
নিরন্ন মানুষের হাজারো ক্ষুধার্থ চোখ,
ভরে ওঠবে শূণ্য শানকি গুলো!
----কালুরা হালট কিনবে।
----সুজন ছাড়িয়ে নেবে বন্ধকী জমিন।
----রমিজ নতুন বউ নিয়ে ধুমধামে তুলবে আপন ঘরে।
আহা! শ্রমলব্ধ মানুষের সব আশা
সব সুখ স্বপ্নের আবির
বাংলার প্রাণে প্রাণে
একাকার হয়ে মিশে গেলে,
ঋণভারে জর্জরিত
বাংলার সোনালী ধান
নড়ে ওঠে মুক্তি নেশায়।
আহা! কোন সে নিয়ম?
লক্ষ কোটি মানুষের জীবন্ত স্বপ্নে
আগুন ধরিয়ে দিলো? নিজ দেমাগের বিনিময়ে
লুন্ঠন করলো সব, লক্ষ কোটি মানুষের
মুক্তির আশা ও বিশ্বাস।
পৃথিবীর প্রতিটি ঘরের শান্তি এখন ফেরার---
ডুবে যাচ্ছে চাঁদ, জটিল অন্ধকারে হারিয়ে যাচ্ছে
মানুষের চিন্তা ও কর্মচঞ্চলতা।
বাংলাদেশ জরিনার জমানো খুচরো পয়সার মত
রোজ হিসেব কষতে কষতে ক্লান্ত, এখন সখিনারা
সন্ধে বাতি জ্বালিয়ে-ই নিভিয়ে দেয়, কেবলই
অন্ধকার বিছানায় দ্রব্য মূল্যের উর্ধ্বগতির
জাবর কাটে সারা রাত, আর অজ্ঞাতে
অভাবের জীর্ণ শাড়ীর ভেতর থেকে
হাহাকার করে ওঠা যৌবন, স্বামীর জন্য প্রসারিত বাহু----
মরুর শুন্যতা নিয়ে বার বার ফিরে আসে,
ফিরে আসতে হয়।
অস্ত্রে অস্ত্রে ভরে যাচ্ছে মরুভুমি, পাহার, সবুজ বন,
নগর-ভবন আর নদীর নিয়ম---
মিনার থেকে ঝরছে
যন্ত্রণা-চোখ ---
মানুষের শান্তি আয়োজন।
#বরিশাল,১৯৯০
(কয়েকটি শব্দ পরিবর্তিত)