‘মনে রাখোনি আমায়’ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী- আমার হৃদপিন্ডে মাথা রেখে কান পেতে শোনো আমার শিকড়ের শব্দ শুনতে পাচ্ছো ? ধুক ধুক শব্দ? কি বললে কোনো শব্দ নেই! তবে অপেক্ষা করো আমি মৃত্যুর স্বর্গ থেকে জীবনের নরকে আমাকে টেনে নেই। খুব কষ্ট হচ্ছে আমার পৃথিবীর নরক যন্ত্রণার, তবু তুমি কান পেতে শুনবে বলে আত্মাটা হাত দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে ফিরে এসেছি আবার| এখন কি আমার হৃদ-স্পন্দন তোমার হৃদ-স্পন্দনে শিকড়ের গন্ধ পাচ্ছে? অপেক্ষার করো হয়তো জেগে উঠবে আমার মৃতদেহ তোমার ভালোবাসার প্রাণের জাগরণে, একটু কান পেতে আঁচ করো কিছুক্ষন শব্দ বাজছে আবার থেমে গিয়ে আবার বাজছে না থেমে গেছে চিরকাল কাঁচা মাংসের তূলে তুলে লজ্জাবতীর আঁচলে কিংবা যাঁতাকলে ? তুমি তো বেঁচে ছিলে তুমিও কি মরে গেলে ? আমার মখমলের শরীর, বুকে জন্মের দাগ সব কি ভুলে গেলে ? এমন তো কথা ছিলনা; তোমার সেই রেশমি চুরির হাতের স্পর্শে শরীরের কুঁচ কুঁচে কালো লোমগুলো খাড়া হয়ে যেত যখন তখন সব কি ভুলে গেলে নাকি বেনারসির জ্বল জ্বলে আবেগে ? তোমার চোখে এখন কেবল নতুন সংসারের স্বপ্ন কথা তো এমন ছিলনা, তোমাকে না পেয়ে গলায় দড়ি দিলাম তুমিতো বলেছিলে আমি না থাকলে তুমিও চলে যাবে আমার সাথে না ফেরার দেশে ছদ্মবেশির বেশে | মিথ্যে মিথ্যে সব মিথ্যে তোমার সাজানো প্রেমে ভেসে গেছে আমার যৌবন হায় বিধাতা আমাকে আবার নিয়ে যাও মৃতদের মিছিলে প্রেয়সী যে ভুলে গেছে তার আগের মহানায়ককে তার মহাপ্রস্থানে | আজ আমি পচা লাশ, পরে থাকবো চিরকাল হয়তো নির্জন গোরস্থানে অথবা শবদেহ পুড়বে মনের আগুনের নিরুত্তাপ স্মশানে | সব ছিল তোমার খেলা, মন গড়া অভিনয় ? আমি নেই তুমিও স্বার্থপরের মতো ভুলে গেছো আমাকে, যে মরেছিল শুধু তোমাকে না পাওয়ার বোবা কান্নায় নিস্তব্ধ দুপুরে | একদিন উঠোন ভরা প্রেম ছিল, মন ভরা যৌবন ছিল, রং ছিল রস ছিল ঢং ছিল, আজ কিছু নেই, সব হয়ে গেলো দুঃসহ যন্ত্রনা কার পাপে যাকে ধরা চায়না স্পর্শ করা যায়না শুধু অনুভব করা যায় অধরার মতো নিস্তব্ধ স্বর্গে কিংবা নরকে | চলে যাচ্ছি আর আসবোনা কখনো ফিরে তোমার পৃথিবীতে আর আমার মতো যারা আজও বেঁচে আছে তাদের বলবো বলে যাবো নিরন্তর তোমরা আমার মতো মরণা, কারণ মানুষ মরে গেলে তার কোনো দাম থাকেনা, কেউ তাকে মনে রাখেনা, সে শুধু হয়ে যায় ফ্রেমে বাধা ছবি |