এই পৃষ্ঠা প্রিন্ট করুন
রবিবার, 06 সেপ্টেম্বর 2020 13:59

কাজলা দিদি নির্বাচিত

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(1 ভোট)
                বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই,  
 মাগো আমার শোলক-বলা কাজলা দিদি কই?  
 পুকুর ধারে লেবুর তলে থোকায় থোকায় জোনাক জ্বলে  
 ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না একলা জেগে রই-  
 মাগো আমার কোলের কাছে কাজলা দিদি কই?  
 সেদিন হতে কেন মা আর দিদিরে না ডাকো;-  
 দিদির কথায় আঁচল দিয়ে মুখটি কেন ঢাকো?  
 খাবার খেতে আসি যখন, দিদি বলে ডাকি তখন,  
 ওঘর থেকে কেন মা আর দিদি আসে নাকো?  
  
 আমি ডাকি তুমি কেন চুপটি করে থাকো?  
 বল মা দিদি কোথায় গেছে, আসবে আবার কবে?  
 কাল যে আমার নতুন ঘরে পুতুল-বিয়ে হবে!  
 দিদির মত ফাঁকি দিয়ে, আমিও যদি লুকাই গিয়ে  
 তুমি তখন একলা ঘরে কেমন করে রবে,  
 আমিও নাই-দিদিও নাই- কেমন মজা হবে।  
 ভুঁই চাপাতে ভরে গেছে শিউলি গাছের তল,  
 মাড়াস্ নে মা পুকুর থেকে আনবি যখন জল।  
 ডালিম গাছের ফাঁকে ফাঁকে বুলবুলিটি লুকিয়ে থাকে,  
 উড়িয়ে তুমি দিও না মা, ছিঁড়তে গিয়ে ফল,-  
 দিদি এসে শুনবে যখন, বলবি কি মা বল!  
 বাঁশ বাগানের মাথার উপর চাঁদ উঠেছে ওই-  
 এমন সময় মাগো আমার কাজলা দিদি কই?  
 লেবুর ধারে পুকুর পাড়ে ঝিঁঝিঁ ডাকে ঝোপে ঝাড়ে’  
 ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না, তাইতে জেগে রই  
 রাত্রি হলো মাগো আমার কাজলা দিদি কই?            
            
570 বার পড়া হয়েছে
শেয়ার করুন
যতীন্দ্রমোহন বাগচী

যতীন্দ্রমোহন বাগচী (২৭ নভেম্বর, ১৮৭৮ - ১ ফেব্রুয়ারি, ১৯৪৮) ছিলেন একজন বাঙালি কবি ও সম্পাদক। তিনি নদিয়া জেলার জমশেরপুরে জমিদার পরিবারে (বর্তমান বাগচী জমশেরপুর) জন্মেছিলেন। তার পৈতৃক নিবাস বলাগড় গ্রাম, হুগলি। তিনি তার প্রথম ডিগ্রি কলকাতার ডাফ কলেজ (এখন স্কটিশ চার্চ কলেজ) থেকে নিয়েছিলেন। তিনি বহু সাহিত্যিক পত্রিকায় গঠনমূলক অবদান রেখেছেন। ১৯০৯ থেকে ১৯১৩ পর্যন্ত মানসী পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। ১৯২১ এবং ১৯২২ সালে তিনি যমুনা পত্রিকার যুগ্ন সম্পাদক হিসেবে কাজ করেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৪৮ পূর্বাচল পত্রিকার মালিক এবং সম্পাদক ছিলেন। তার রচনায় তার সমকালীন রবীন্দ্র সাহিত্যের প্রভাব লক্ষ্য করে যায়। তাকে রবীন্দ্র পরবর্তী বাংলা সাহিত্যের একজন প্রধান সাহিত্যিক হিসেবে বিবেচনা করে হয়। পল্লী-প্রীতি যতীন্দ্রমোহন বাগচীর কবিমানসের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য। "পথের পাঁচালী"র বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কবি জীবনানন্দ দাশের মত তার কাব্যবস্তু নিসর্গ-সৌন্দর্যে চিত্ররূপময়। গ্রাম বাঙলার শ্যামল স্নিগ্ধ রূপ উন্মোচনে তিনি প্রয়াসী হয়েছেন। গ্রাম জীবনের অতি সাধারণ বিষয় ও সুখ-দুঃখ তিনি সহজ সরল ভাষায় সহৃদয়তার সংগে তাৎপর্যমণ্ডিত করে প্রকাশ করেছেন।

যতীন্দ্রমোহন বাগচী এর সর্বশেষ লেখা

1 মন্তব্য