কোন এক পবিত্র আত্মার খোঁজে প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী তোমাকে দেখে অনেক চেনা মনে হল খুব চেনা, যেমন চেনা আমার ভিতর আর বাহিরটা হরদম তবু কেমন যেন একটা ব্যবধান, সময়ের কোন এক ফেরারি আসামির বিক্ষুব্ধ উপাখ্যানের মতো, পুরোনো কোন সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের পিপাসার্ত দুঃশাসনের জীবন্ত বুনো বিড়ালের হিংস্র আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত , প্রতিদিন নিরন্তর লড়াইয়ের ভোঁতা কাকাতুয়ার বিরহের আঘাতে আহত; বলীদান যেন অন্য কোন দুই দিগন্তের দুই বাসিন্দার অচেনা সারগম | চোখে কাজল কানে তোমার হীরামতির দুল হাতে তোমার রেশমি চুড়ি, খোঁপায় ছিল শিশির সিক্ত কান্না ভেজা রক্তগঙ্গার রাঙা জবা ফুল | আমি হাসলাম তুমি হারিয়ে গেলে কোন এক নির্জন বনভূমিতে তারপর আবার স্বপ্ন তোমার পায়ের নুপুর আর নস্টালজিয়া প্রজাপতির চিত্ত হরণ দুপুর | সেতারের সুর আর তোমার রোমান্টিকতা হাস্যময়ী লাস্যময়ী নীল পিরিতির গভীরতা থমকে গেলো রংধনুর ধূসর ছায়াতে; যেন হেটে চলা পথের দরিয়ার জাতে বজ্জাতে, বাঁকা কোমড়ের হেলে দুলে উঠা ঝাপসা দেওয়ালের বুনো হরিনকে যেমন শিকারি শিকার করে তীরের আঘাতে তেমনি দুমড়ে মুচড়ে গেল; যত্ত সব হারামজাদাদের হারাম নেশায় পূর্বপুরুষের হালখাতা থেকে মৃত্যুপুরীর দালালদের খোশ মেজাজি কালোজামের অভিশপ্ত পেশায়, হীরা খুঁজে কয়লা পেল, লাজ সরম সব শব দেহ হয়ে জিন্দা লাশের শরবত খেলো | যৌবন তোমার চাঁদনী রাতে হল চন্দ্রগ্রহণ যেমন মৌমাছি ফুল থেকে নিংড়ে নিংড়ে; বানায় বদমায়েশের বদহজম দাসী, তোমার সর্বনাশ আর আমার সারাজীবনের ফাঁসি, আর ওদের মরণ কামড়রের ঘুপটি মেরে বসে থাকা শয়তানদের হাসি তুমি আচমকা জমকালো রঙের শহরে হয়ে গেলে পরবাসী; আর আমি ভিমরুলের চাকে আছড়ে পড়ে পুড়ে পুড়ে হলাম শুকুনির ছেঁড়া কাঁথার হৃদকম্পনে, সংগোপনে সমর্পণে ছেঁড়া পাতার মিটিমিটি জ্বলে থাকা খণ্ডিত আত্মার সর্বগ্রাসী , জাহান্নামের পাপীর দরজায় হেঁটে চলা কোন এক বিন উদাসী, চর্যাপদের ঝলমলে রক্তের অক্ষরে লেখা বিরহীর বাঁশি | আজ আবার অনেকদিন পর কফিনের ভিতর মুখটা তোমার, দেখে হলাম বিন্দাস বেশুমার কিন্তু নির্মম সময় আর দেবদাসের বনবাস হয়ে যায় বরফ পাথর, জল পড়ে, কষ্টের টান ধরে অদ্ভুত শুকনোপাতার বিড়ম্বিত ইতিহাস বিদায় জানায় আর বলে এটাই তো জীবনের নির্মম পরিহাস | আর নির্দয় হয়ে বলে, তোমার পরীর আজ আর জৌলুস নেই নেই অহংকারের নুপুর, গানের সুর আর স্বপ্ন রাঙা মধ্য দুপুর, আজ মরচে ধরেছে ওই মরা লাশের রূপে আর খুব সুরতে | তবু প্রাণ আসে, রংধনু উঠে বায়বীয় বাতাসে, যদি বদলে ফেলা যায় কলংকিত দিন কালরাত্রি আর শুরু হয় যাত্রা আবার নতুন প্রজম্মের, মুক্তির ঝাঁঝালো শ্লোগানে, আর জীবনের গানে | জয় তোমাদের হবে হবেই যদি ভেঙে ফেল ঘুনেধরা নর পিশাচদের কোন এক হিমাদ্রির হিমঘরে, আলোকিত সন্ধ্যার একটু পরে, ঐ শয়তানদের নির্বাসিত করে নরকের লংঘিত খোয়াড়ে, আর জল্লাদদের রক্ত চক্ষুর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পাপদের দীর্ঘসারির দুয়ারে | তবু কি ভাসবে জীবন, তোমাকে আবার দেখবার সাধ নিয়ে, অপূর্ণতার সিঁড়ি বেয়ে আর কোন ছন্দপতন দুর্বৃত্তের নৃত্যের জোয়ারে, আজও অপেক্ষা থাকবে অনন্তকাল মৃত্যুরও মহাপ্রস্থানের পরে |