মঙ্গলবার, 10 অক্টোবর 2017 20:14

কোন এক পবিত্র আত্মার খোঁজে নির্বাচিত

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(0 টি ভোট)
                কোন এক পবিত্র আত্মার খোঁজে
প্রকাশঃ সেপ্টেম্বর ১৫, ২০১৭


অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী

তোমাকে দেখে অনেক চেনা মনে হল
খুব চেনা, যেমন চেনা আমার ভিতর আর বাহিরটা হরদম
তবু কেমন যেন একটা ব্যবধান,
সময়ের কোন এক ফেরারি আসামির বিক্ষুব্ধ উপাখ্যানের মতো,
পুরোনো কোন সমুদ্রের উত্তাল ঢেউয়ের পিপাসার্ত দুঃশাসনের জীবন্ত
বুনো বিড়ালের হিংস্র আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত ,
প্রতিদিন নিরন্তর লড়াইয়ের ভোঁতা কাকাতুয়ার  বিরহের আঘাতে আহত;
বলীদান যেন অন্য কোন  দুই দিগন্তের দুই বাসিন্দার অচেনা সারগম |

চোখে কাজল কানে তোমার হীরামতির দুল
হাতে তোমার রেশমি চুড়ি,
খোঁপায় ছিল শিশির সিক্ত কান্না ভেজা
রক্তগঙ্গার রাঙা জবা ফুল |
আমি হাসলাম তুমি হারিয়ে গেলে কোন এক নির্জন বনভূমিতে
তারপর আবার স্বপ্ন তোমার পায়ের নুপুর
আর নস্টালজিয়া প্রজাপতির চিত্ত হরণ দুপুর |


সেতারের সুর আর তোমার রোমান্টিকতা
হাস্যময়ী লাস্যময়ী নীল পিরিতির গভীরতা
থমকে গেলো রংধনুর ধূসর ছায়াতে;
যেন হেটে চলা পথের দরিয়ার জাতে বজ্জাতে,
বাঁকা কোমড়ের হেলে দুলে উঠা ঝাপসা দেওয়ালের
বুনো হরিনকে যেমন শিকারি শিকার করে তীরের আঘাতে
তেমনি দুমড়ে মুচড়ে গেল;
যত্ত সব হারামজাদাদের হারাম নেশায়
পূর্বপুরুষের হালখাতা থেকে মৃত্যুপুরীর
দালালদের খোশ মেজাজি কালোজামের
অভিশপ্ত পেশায়,
হীরা খুঁজে কয়লা পেল, লাজ সরম সব শব দেহ হয়ে
জিন্দা লাশের শরবত খেলো |

যৌবন তোমার চাঁদনী রাতে হল চন্দ্রগ্রহণ
যেমন মৌমাছি ফুল থেকে নিংড়ে নিংড়ে;
বানায় বদমায়েশের বদহজম দাসী,
তোমার সর্বনাশ আর আমার সারাজীবনের ফাঁসি,
আর ওদের মরণ কামড়রের ঘুপটি মেরে বসে থাকা শয়তানদের হাসি
তুমি আচমকা জমকালো রঙের শহরে হয়ে গেলে পরবাসী;
আর আমি ভিমরুলের চাকে আছড়ে পড়ে
পুড়ে পুড়ে হলাম শুকুনির ছেঁড়া কাঁথার
হৃদকম্পনে, সংগোপনে সমর্পণে
ছেঁড়া পাতার মিটিমিটি জ্বলে থাকা খণ্ডিত
আত্মার সর্বগ্রাসী ,
জাহান্নামের পাপীর দরজায় হেঁটে চলা
কোন এক বিন উদাসী,
চর্যাপদের ঝলমলে রক্তের অক্ষরে লেখা বিরহীর বাঁশি |

আজ আবার অনেকদিন পর
কফিনের ভিতর মুখটা তোমার,
দেখে হলাম বিন্দাস বেশুমার
কিন্তু নির্মম সময় আর দেবদাসের বনবাস
হয়ে যায় বরফ পাথর, জল পড়ে, কষ্টের টান ধরে
অদ্ভুত শুকনোপাতার বিড়ম্বিত ইতিহাস
বিদায় জানায় আর বলে এটাই তো জীবনের নির্মম পরিহাস |
আর নির্দয় হয়ে বলে,
তোমার পরীর আজ আর জৌলুস নেই
নেই অহংকারের নুপুর,
গানের সুর আর স্বপ্ন রাঙা মধ্য দুপুর,
আজ মরচে ধরেছে ওই মরা লাশের রূপে
আর খুব সুরতে |

তবু প্রাণ আসে, রংধনু উঠে বায়বীয় বাতাসে,
যদি বদলে ফেলা যায় কলংকিত দিন কালরাত্রি
আর শুরু হয় যাত্রা আবার নতুন প্রজম্মের,
মুক্তির ঝাঁঝালো শ্লোগানে,
আর জীবনের গানে |
জয় তোমাদের হবে হবেই
যদি ভেঙে ফেল ঘুনেধরা নর পিশাচদের
কোন এক হিমাদ্রির হিমঘরে,
আলোকিত সন্ধ্যার একটু পরে,
ঐ শয়তানদের নির্বাসিত করে নরকের লংঘিত খোয়াড়ে,
আর জল্লাদদের রক্ত চক্ষুর সামনে দাঁড়িয়ে থাকা পাপদের
দীর্ঘসারির দুয়ারে |

তবু কি ভাসবে জীবন, তোমাকে আবার দেখবার
সাধ নিয়ে, অপূর্ণতার সিঁড়ি বেয়ে
আর কোন ছন্দপতন দুর্বৃত্তের নৃত্যের জোয়ারে,
আজও অপেক্ষা থাকবে অনন্তকাল
মৃত্যুরও মহাপ্রস্থানের পরে |            
            
618 বার পড়া হয়েছে
শেয়ার করুন
অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী ঢাকা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, গাজীপুর এ দীর্ঘদিন যাবত শিক্ষকতা পেশায় নিয়োজিত আছেন। শিক্ষা ও গবেষণার ক্ষেত্রে তিনি যেমন অবদান রেখে চলেছেন তেমনি সৃষ্টিশীল লেখার ক্ষেত্রেও তাঁর পদচারণা। তিনি মনে করেন বিজ্ঞান চর্চা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি একে অন্যের পরিপূরক। তিনি একাধারে শিক্ষাবিদ, গবেষক, গল্পকার, প্রাবন্ধিক, কবি, গীতিকার, নাট্যকার, সমাজ সংস্কারক ও সাংস্কৃতিক কর্মী। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দর্শনে বিশ্বাসী এই মানুষটির ছোটবেলা থেকেই লেখায় হাতেখড়ি। কৈশোর ও তারুণ্যে তিনি বাংলা একাডেমি, খেলাঘর, কঁচিকাচার মেলা সহ বিভিন্ন সংগঠনে কাজ করেছেন। এই সময় তাঁর প্রবন্ধ, কবিতা বিভিন্ন পত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। প্রকৌশল বিদ্যা অধ্যায়নের সময় তিনি প্রগতিশীল কর্মী হিসেবে কাজ করে সহিত চর্চা করে গেছেন। এ সময় তাঁর লেখাগুলো বিশ্ববিদালয়ের ম্যাগাজিনে এখনও সংরক্ষিত আছে। এছাড়াও অনেকদিন ধরেই তিনি দেশ ও বিদেশের বিভিন্ন জাতীয় পত্রিকা ও ম্যাগাজিনে লিখে চলেছেন। বাংলা ও ইংরেজি দুই সাহিত্যেই তাঁর সমান দক্ষতা রয়েছে। সমাজ, রাষ্ট্র, প্রকৃতি, বিজ্ঞান, শিক্ষা, পরিবর্তন, সম্ভাবনা ও মানুষ তাঁর লেখার মূল উপজীব্য বিষয়। তিনি একজন ভাল বক্তা। বিভিন্ন টিভি চ্যানেলের টক্ শো সহ বিভিন্ন সৃজনশীল অনুষ্ঠানে তাকে অতিথি হিসেবে দেখা যায়। ভারতরে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় তথ্যমন্ত্রী অজিত কুমার পাঁজা কলকাতা দূরদর্শনের একটি প্রতিযোগিতায় তাঁর প্রেরিত প্রবন্ধে মোহিত হয়ে নিজ হাতে পুরস্কার তুলে দেন। অনুষ্ঠানটি সরাসরি সে সময় সম্প্রচারিত হয়। এই খবরটি আজকাল, সংবাদ, বাংলাবাজার সহ বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়। এছাড়া তিনি ফিলিপিন্স, চীন, বি-টিভি সহ দেশ বিদেশের বিভিন্ন পুরুস্কারে ভূষিত হন। বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট ও বঙ্গবন্ধু প্রকৌশলী পরিষদের একজন কর্মী হিসেবে তিনি কাজ করে চলেছেন।

অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান চৌধুরী এর সর্বশেষ লেখা

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.