টাকা পাথর টাকা মন্টু অফিস থেকে ফিরতেই বেবী তার হাতে একটা একশ টাকার নোট ধরিয়ে দিয়ে বলল, "একটা চলনসই পেন কিনে আনো আগে ; রোজ রোজ লোকের পেন ঝাড়তে তোমার লজ্জা করে না !" "সে ঠিক আছে, আনবো'খন ! টাকাটা কোথায় পেলে?" "খানিকটা পরিশ্রম, খানিকটা বুদ্ধি খরচ করে!" "হেঁয়ালি ভাল্লাগে না, সোজাসুজি বল" "পুরাতন খবরের কাগজ আর তার ভেতরে ওজনদার কয়েকটা পাথর পুরে" । মন্টু হেসে বলল "বেচারা পুরোনো কাগজওয়ালাকেও তুমি ঠকাতে ছাড়ো না" । কিন্তু মন্টুর হাসি দীর্ঘস্থায়ী হলো না পরক্ষনেই মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়ে, " হায়, হায় করেছো কি !" বেবী অস্থির হয়ে ছুটে আসে, "কি হলো, কি হলো?" "হায়, হায়, সর্বনাশ ! তুমি কি করেছো !" "কি হয়েছে কি?" "হায় হায় ওর মধ্যে আমার তেরো হাজার টাকা ছিল, সব খোয়া গেল। অফিসে আমি দশ-বিশ করে করে সে টাকা জমিয়ে ছিলাম । কত লোকের নামের বানান ভুল করে আবার টাকা নিয়ে ঠিক করে দিয়েছি । কি পরিশ্রমটাই না আমাকে করতে হয়েছে রোজ রোজ !" "মন্টু দা বাড়িতে আছেন?" মন্টু নিজেকে সামলাতে সামলাতে দরজা খোলে, "জিয়াউদ্দিন !" "হ্যাঁ দাদা, এটা বোধহয় আপনার" । "ঠিক বলেছিস" । হারানো মানিক ফিরে পাওয়ার খুশিতে ডগমগ মন্টু ঝটপট মোড়কটা হাতে নিয়ে পকেট থেকে একটা দশ টাকার নোট ধরিয়ে বলে, "ভাই, এটা রাখ, চা খেয়ে নিস" । জিয়াউদ্দিন কে জেয়াউদ্দিন করে প্যাঁচে ফেলে মন্টু বিশ টাকা আদায় করেছিলো, তা থেকে দশ টাকা গচ্চা গেলেও মোটের উপর দশ টাকা থাকবে । "না দাদা আপনি রাখেন, আপনার কাজে লাগবে । আপনার জিনিস টা ফেরত দিলাম, ভাবির কটা জিনিস আর ফেরত দিলাম না" ।
শেয়ার করুন
প্রকাশিত বিভাগ অনুগল্প
সেখ কামারুল ইসলাম
পশ্চিমবঙ্গের হাওড়ার হাটুড়িয়া গ্রামের অধিবাসী । মূলতঃ প্রবন্ধ লিখলেও মাঝে মধ্যে ছোট গল্প-কবিতা লেখেন । টেলিকম টেকনোলজিতে স্নাতকোত্তর সেখ কামারুল ইসলাম বর্তমানে লোকো পাইলট হিসেবে ভারতীয় রেলওয়েতে কর্মরত । সমাজসেবার নানান কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সঙ্গে সাহিত্য সেবাও করে চলেছেন ।
সেখ কামারুল ইসলাম এর সর্বশেষ লেখা
মন্তব্য করুন
Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.