হানেমানের অর্গাননের সহজ পাঠ
ডাঃ কে এম আলাউদ্দীন
অনুচ্ছেদ-১, অর্গাননঃ
চিকিৎসকের একমাত্র লক্ষ্য ও কর্তব্য১ রোগীকে স্বাস্থ্যে২ পুনরায় সংস্থাপন৩, যাকে বলা হয় আরোগ্য সাধন৪ করা।(The physicians high and only mission1 is to restore3 the sick to health2, to cure4, as it is termed.)
মন্তব্যঃ হানেমানের ১নং অনুচ্ছেদ পুরো অর্গাননের মূল বক্তব্যকে ধারণ করে আছে। বলা যায়, মোট ২৯১টি অনুচ্ছেদের মধ্যে, অর্গাননের ২৯০টি অনুচ্ছেদই ১নং অনুচ্ছেদের বুকে নিরবে ঘুমিয়ে আছে, এ যেন বিন্দুতে সিন্দু, ঝিনুকে মহা সমুদ্র। আলোচনার প্রসস্থ স্থান এটা নয়।আমার লেখা একটি পুস্তিকার অংশ বিশেষ এখানে উল্লেখ করা হল।
১। চিকিৎসকের একমাত্র লক্ষ্য ও কর্তব্য১ ( The physicians high and only mission1) না জেনে চিকিৎসা পথে অগ্রসর হওয়া কোন পদ্ধতির চিকিৎসকবৃন্দেরই কাম্য হতে পারে না। এ বিষয়গুলো ১—৮নং অনুচ্ছেদে সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।
২। রোগীকে স্বাস্থ্যে২(the sick to health2)ফিরিয়ে আনতে হলে সর্ব প্রথম আমাদেরকে জানতে হবে স্বাস্থ্য কি, কি ভাবে তা বিশৃঙ্খল হয়, রোগ উৎপত্তির কারন, রোগী কে ইত্যাদি, যার বর্ণনা রয়েছে ৯-২৩নং অনুচ্ছেদে। এ সব ভালোভাবে না জেনে পথ চলার অর্থ অন্ধের হাতি দেখার মত, যা এক জন চিকিৎসকের কাম্য হতে পারেনা।
৩। পুনরায় সংস্থাপন৩(to restore3)করা এক জন চিকিৎসকের মৌলিক কাজ। স্বাস্থ্য স্বাভাবিক ছিল, বিশৃঙ্খল হয়েছ,কার? নিশ্চই রোগীর। অবশ্যই তাকে তার পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনতে হবে। বিভিন্ন চিকিৎসকবৃন্দ এ কথাটি ভালোভাবে অনুধাবন না করে নিজ নিজ খেয়ালে বিভিন্ন পদ্ধতিতে চিকিৎসা করে নিস্ফল আত্ম তৃপ্তি লাভ করে থাকেন। এ প্রসংগে অর্গাননে অনুচ্ছেদ ২৪-৭০ পর্যন্ত বিশদ আলোচনা করা হয়েছে।
৪। আরোগ্য সাধন৪(to cure4)এমন একটি কাজ যা আবিষ্কার করতে হানেমানকে অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষার পর তিনি রোগী আরোগ্য বিষয়ে বাস্তব, প্রায় পূর্ণাঙ্গ, নীতিমালাসমূহ পেশ করেন, যা তিনি অর্গানন ৭১—২৯১ অনুচ্ছেদে উল্লেখ করেছেন।
অতপরঃ ১নং অনুচ্ছেদের আলোকে বলা যায়, রোগ নয়, রোগীর চিকিৎসাই আসল কথা। রোগী সেই যার দেহ ও মন আছে, যা বিশৃঙ্খল হলেই মানুষটি রুগ্ন হয় এবং চিকিৎসকের একমাত্র লক্ষ্য-উদ্দেশ্য হলো—রোগীকে জেনে, হোমিও নিয়ম নীতি অনুযায়ী তাকে আরোগ্য করা।
এ জন্যই হানেমান এখানে অনুচ্ছেদ-১ এর পাদটিকায় স্পষ্ট ভাষায় উল্লেখ করেছেনঃ
"জীবন প্রক্রিয়ার আভ্যন্তরীণ প্রকৃতি এবং দেহের অদৃশ্য অভ্যন্তরে যে রোগসমূহের সৃষ্টি হয় তার সম্বন্ধে কল্পনাপূর্ণ মতবাদ এবং অনুমানের ভিত্তিতে তথাকথিত পদ্ধতিসমূহ রচনা করা চিকিৎসকের ব্রত নয় (এভাবে বহু চিকিৎসক উচ্চাভিলাসের বশবর্তী হয়ে তাঁদের মেধা ও সময় নষ্ট করে থাকেন)। যখন পীড়িত মানব সাহায্যের আশায় অসহায় ভাবে ধুঁকতে থাকে তখন অজ্ঞ লোকদের, দুর্বোধ্য ভাষায় রোগের অদ্ভুত বৈচিত্র ও তাদের নিকটতর কারণ (যা চিরকালই অজ্ঞাত থাকে) সম্বন্ধে অসংখ্য ব্যাখ্যা ও জটিল ব্যঞ্জনার মাধ্যমে অবাক করে দেয়া- যা চিকিৎসকের কাম্য নয়। এরূপ পান্ডিত্যপূর্ণ কল্পনা আমরা অনেক দেখেছি (যাকে তত্ত্বমূলক চিকিৎসা পদ্ধতি বলা হয় এবং যার জন্য বিশেষ বিশেষ পদবীসমূহের সৃষ্টি করা হয়েছে)। এখন সময় এসেছে, নিজেদের যারা চিকিৎসক বলে পরিচয় দেন, পীড়িত মানুষগুলোকে কেবল গালগল্প দ্বারা প্রতারণা করার পরিবর্তে রোগ মুক্তির সত্যিকার কাজে এবার তাঁরা এগিয়ে আসুন।"(পাদটীকা-১; সূত্র-১)
(চলবে)
###
কে এম আলাউদ্দীন
কে এম আলাউদ্দিন বরিশাল জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার অম্বিকাপুর গ্রামে পহেলা মে ১৯৫৩ ইং সনে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম আব্দুল হামিদ মিয়া, মাতা মরহুমা রাবেয়া খাতুন। ৩ ভাই ও ৪ বোনের মধ্যে তিনি সকলের বড় । শৈশবকাল হইতেই তিনি লেখা প্রতি ঝোঁক ছিল। তিনি বরিশাল এপেক্স হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজ হতে ডি.এইস.এম.এস. ডিগ্রি অর্জন করেন। বর্তমানে তিনি ৫০ সহস্রতমিক পদ্ধতিতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা করে আসছেন। সদা হাস্যোজ্জল ব্যক্তি তিনি। আলোর মুখোমুখি নামে তার একটি কবিতার বই ১৯৮৫ সনে প্রকাশিত হয়েছিল। বর্তমানেও তিনি নিয়মিত ভাবে লিখে চলেছেন, সাহিত্যের একজন সেবক হিসেবে এখনও তিনি সক্রিয়। তিনি বর্তমানে ৭৭৫, সদর রোড, শাকুর ম্যানসন (ক্যাপ্টেন নজিব উদ্দিন ক্লিনিক সংলগ্ন) বরিশাল শহরে বসবাস করছেন।
কে এম আলাউদ্দীন এর সর্বশেষ লেখা
5 মন্তব্য
- মন্তব্যের লিঙ্ক বুধবার, 05 জুলাই 2023 20:16 লিখেছেন toWdCFTtG
What to do this time around best place to buy cialis online
- মন্তব্যের লিঙ্ক মঙ্গলবার, 24 ফেব্রুয়ারী 2015 01:52 লিখেছেন মোঃ খোরশেদ আলম
খুব ভাল লাগল ভাইয়া।
- মন্তব্যের লিঙ্ক সোমবার, 23 ফেব্রুয়ারী 2015 21:27 লিখেছেন সার্জেন্ট মোঃ নাজমুল কবির (অবঃ)
অর্গাননের কথা ভালো লিখেছেন, বেশ ভালো হয়েছে।
মন্তব্য করুন
Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.