বৃহষ্পতিবার, 26 ফেব্রুয়ারী 2015 23:17

ও প্রিয়

লিখেছেন
লেখায় ভোট দিন
(1 ভোট)
                ওগো প্রিয়,
তোমায় একটা উপমা দেয়া হলো না এখনও, না না এখনও পারিনি
এমন একটা সম্ভাষণ যাতে তোমায় এক লহমায় আলাদা ভাবে চিনে নেয়া যায়।
অনেকটা পোষা গিরিবাজের ডানায় মেখে রাখা গাঢ় লাল রঙ কিংবা
পায়ের পাতায় পরিয়ে দেয়া একটা ইউনিক নাম্বার, যেন এই তুমিটা তুমি।
দুগ্ধ ফেনীল সমুদ্রে এলোমেলো নৌকার মত তিল গুনে গুনে টিপটিপ আলোতে
বলেছিলাম তোমায় আজ থেকে তুমি হলে নক্ষত্র মেয়ে।
দুঃখের প্রহরে শুনিয়েছিলে কণ্ঠ তোমার আমার কানে কানে
তাই তোমায় মেনেছিলাম বান্ধব বলে, তোমার কণ্ঠের বন্ধু আমি ।
তুমি আদর করে বিগত অনাগত সকল প্রহরের
সকল আকর্ষণ ও আকাঙ্ক্ষার ভালবাসা নিয়ে লুটিয়ে পড়ো বুকের কাছে
তাই তোমায় বলেছিলাম আদরের স্পন্দিতা।
তুমি দেখিয়েছিলে ঘোর লাগা দুপুরে থৈ থৈ এক নদী জল মোহনা
আদতে সে ছিল এক শতদল সরোবর, এই অপার্থিব ইন্দ্রজালে
দুপুর হতে পারতো স্নিগ্ধ বিকেল, অথচ মরে যাওয়া বিকেলের শাপ নিয়েও
সারাদিন তোমায় ভেবে ভেবে ভালবেসেছি ।
আমার কাছে এখনও পড়ন্ত বিকেলের মায়া মানে তুমি।
এ জীবনের অনেক অনেক অন্ধকারের ভেতর তুমি জ্বেলেছিলে জোছনা আলোকের অগ্নি,
তোমাকেই সাথে করে পুরাবো ভেবেছি তাই আলোতে যাবার বাসনা।
তুমি মৃতপ্রায় এক জোড়া ম্লান চোখে দিয়েছ এনে প্রজাপতির বসত বাড়ি।
তুমি প্রতিবার রঙধনু হয়ে এসেছো কান্নার বিকেলে, দিগন্ত জোড়া হোমাগ্নি আলোর বিপরীতে।
অকস্মাৎ আসো জলকণা মেখে গায় আবার বিনা কারণে হারিয়ে যাও শুন্য আধারে ।
মেখে তুমি রঙের ফাগ লাজ মাখা মুখে সাত রঙে দিলে জীবনের বর্ণনা।
তুমি উচ্ছলতা এনেছ বন্ধ জানালার শার্সিতে পর্দার আড়াল হতে তবু
ভেসে গেছে ভেঙে গেছে মৃত শব্দেরা।
কথামালা পাহাড়ের ভেতর থেকে ঝর্ণা হয়েছে ক্রমশ চুমুর স্রোতস্বিনী।
মোহনায় মোহনায় সভ্যতা, ঘাটে ঘাটে জীবন পসারি তারই মাঝে
সবুজ গড়েছে দিগন্ত জোড়া বনানী, ফাগুনের লীলা পেয়েছে বৈধতা শুষ্ক বৃক্ষ হতে।
যখন তোমার তুমি ঝর্ণা হয়ে এলে,
তুমি ক্লান্ত শ্রান্ত ত্বকে দিলে বিপ্রতীপ দংশন অমৃত সমান সঞ্জীবনী নিয়ে মুখে,
ছেয়ে গেল, গেয়ে গেল জীবনের গান তারা- লোহিত কণিকায়, দক্ষিণ বাহুতে, বুকের কিনারে।
তুমি ক্ষুদ্র তুচ্ছ আমায় দিলে সান্ত্বনা, জীবনেরে এনে দিলে ঝকঝকে কবিতার ঝরঝরে বর্ণনা।
দুঃখ সেবন আর দহরম মহরম বিলাসিতা ভোকাট্টা করে উড়িয়ে দিলে আকাশে আকাশে।
তুমি এসে বুকের ওমের পরিবাহিতায় মিশিয়ে নিলে টেলিপ্যাথির প্রটোকল,
বাজো অষ্টপ্রহর বচনে বাচনে, স্পন্দনে।
তুমি সুর, তুমি লহরী, তুমি স্বরলিপি, তুমি সুখের মাদল আমার ভয়াল মৌনতায়।
লেখাজোখাহীনভাবে দিয়ে দিলে অষ্ট পরগণার জায়গীরদারী,
তুমি তাই মহারাণী।
তুমি চাইলেই নিলামে তুলে দিতে পারি বেঁচে থাকার সব অধিকার ও উপকরণ।
ওগো প্রিয়, তবু তোমায় উপমায় সাজাতে পারিনি এখনও
দৃশ্যমান কোন সংজ্ঞায় দিতে পারিনি তোমার তুলনা আজও,
ওগো প্রিয়।
6184 বার পড়া হয়েছে
শেয়ার করুন
এই বিভাগে আরো: « এক মাত্রা ছাই ফু- ২৩ »

3 মন্তব্য

মন্তব্য করুন

Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.