পলাশ।সদা প্রাণচঞ্চল।খুনসুটি করতেই বেশি ভালবাসে।ওর এই চটপটে স্বভাবের দরুন ওর প্রিয় বন্ধু ঈশান ওকে প্রায়ই পরামর্শ দেয়,“দেখ পলাশ,তুই দিন দিন বড় হচ্ছিস, স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে কলেজের পাঠ চুকাতে যাচ্ছিস আর তুই কিনা এখনো ছেলেমানুষি ছাড়তে পারলি না”।পলাশ একগাল হেসে বলে,“আমি আমার এই স্বভাব বদলাতে চাইনা।আমি যেমন আছি তেমনই ভালো, খুব গম্ভীর একটা ভাব নিয়ে থাকলেই হয়না।আমি চাই, সবাই তার আসল চরিত্রটিই অন্যের সামনে প্রকাশ করুক”। পলাশ হাসিখুশি,বেখেয়াল ভাব নিয়ে থাকলেও মাঝে মাঝেই অদ্ভুত সব বিষয় নিয়ে পন্ডিতের মত প্রশ্ন করে।এই তো সেদিন ওর বন্ধুরা গল্পে মত্ত ছিল।হঠাৎ পলাশ এসে হাজির।এরপর তাদের সামনে এক মিলিয়ন ডলারের ! এক প্রশ্ন ছুড়ে দিল।আচ্ছা“পজিটিভ আপ্রোচ” মানে তোরা কি বুঝিস?কৌশিক সাথে সাথেই বলল,“শোন পলাশ,ধর তোর গালে কেউ একটা থাপ্পড় দিল, আর তুই সেটিকে নেগেটিভ হিসেবে না নিলেই তো এটা পজিটিভ আপ্রোচ”। সবাই তো হো হো করে হেসে উঠল।মাছুম,অণু,ঈশান অবশ্য নিজেদের পান্ডিত্য জাহির করার যথাসার্ধ চেষ্টা করল।তাতে যা বোঝা গেল তাদের কথায় পলাশ এর কান ভারী হলেও মন ভরেনি।এতো গেল “পজিটিভ আপ্রোচ” এর ব্যবচ্ছেদ। এর কিছুদিন আগে কলেজের লাইব্রেরিতে বসে পড়ছিল ঈশান।হঠাৎ পলাশ এসে হাজির।ঈশানকে পেয়েই বলল,“বের হ কথা আছে”।ঈশান নিশ্চিত যে,নতুন কোন “আপ্রোচ” পলাশের মাথায় এসেছে।লাইব্রেরী থেকে বেড়িয়েই পলাশ বলল, “আচ্ছা দোস্ত, “গুড পারসোনালিটি” বলতে তুই কি বুঝিস কিম্বা কিভাবে ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন মানুষ হওয়া যায়”? ঈশান বলল, “মহৎ মানুষের আত্মজীবনী পড় এবং যাদের ব্যক্তিত্ব তোর ভাল লাগে তাদের ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ কর, তাদের সাথে কথা বল,ভালো ফল পাবি আশা করি”।ঈশানের পরামর্শ পলাশের বেশ পছন্দ হল।তাই আর কথা না বাড়িয়ে একটা রিক্সা নিয়ে সোজা মেসের দিকে রওনা হল। ঢাকা শহরের সবচেয়ে বড় কবরস্থান আজিমপুর কবরস্থান,যা পাড়ি দিয়ে কিনা পলাশকে তার মেসে যেতে হয়।মেসে যাওয়ার পথে প্রতিদিনই কোন না কোন আশরাফুল মাখলুকাতকে না ফেরার দেশে যেতে দেখে পলাশ।কখনোবা রিক্সা থেকে নেমে জানাজায় অংশগ্রহণ করে।দু’হাত তুলে দোয়া করে অজানা-অচেনা মানুষটির জন্য।কিন্তু সেদিন বাসায় ফিরেই যেন ভিন্ন একটা বিষয় আবিষ্কার করল পলাশ।ভাবল বন্ধুদের সাথে বিষয়টি শেয়ার করবে। পরের দিন কলেজে গিয়েই পলাশ সাব্বিরকে বলল,“বন্ধু সাব্বির,ঢাকা শহরের একটা বিষয় খেয়াল করেছিস”?সাব্বির বলল,“ ঢাকা শহরের আবার নতুন করে কি হোল রে”?পলাশ বলল, “ঢাকা শহরটা যেন এক প্রাণহীন নগরে পরিনত হয়েছে”।সাব্বির অনেকটা অবজ্ঞার সুরেই বলল,“আরে ব্যাটা সে তো পুরানো কথা”।পলাশ বলল,“দোস্ত,গ্রামের মেঠোপথ দিয়ে যখন একজন মৃত মানুষকে খাটিয়ায় করে না ফেরার দেশে নিয়ে যাওয়া হয় তখন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতার মাঝে মৃত্যূর অনুভূতি একবার হলেও অন্তত দোলা দিয়ে যায়। আর আসার সময় দেখলাম ট্রাকে করে একজন মানুষকে গোরস্থানের দিকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জানিনা এই লক্ষ লক্ষ লোকের মাঝে ঠিক কতজনের মাঝে মৃত্যুর অনুভূতি একবারের জন্যও দোলা দিয়ে গেল”।একরাশ হতাশা নিয়ে পলাশ বলল, দোস্ত ঢাকা শহরে মৃত্যুর অনুভূতিও বদলে গেছে।সাব্বির কিছু বলতে চাচ্ছিল কিন্তু পলাশের অনুভূতি যেন তাকেও কিছুটা প্রভাবিত করল।
শেয়ার করুন
প্রকাশিত বিভাগ ছোট গল্প
আল মামুন উর রশিদ
একটি সুন্দর গল্প মানুষকে হেরার পথ দেখাতে পারে...
আল মামুন উর রশিদ এর সর্বশেষ লেখা
7 মন্তব্য
- মন্তব্যের লিঙ্ক শনিবার, 14 অক্টোবর 2023 05:41 লিখেছেন exellamug
Pregnancy outcome and safety of interrupting therapy for women with endocrine responsive breast cancer POSITIVE buy cialis pro These hormones stimulate androgen secretion by the testicles and the adrenal glands
- মন্তব্যের লিঙ্ক বুধবার, 05 জুলাই 2023 09:16 লিখেছেন jCipWO
finasteride 5 mg for sale There are also many adventurers who metoprolol in spanish seek to hone their skills or seek fame
- মন্তব্যের লিঙ্ক বৃহষ্পতিবার, 21 মে 2015 20:51 লিখেছেন সুজন হোসাইন
খুব ভালো লাগলো গল্পটি
- মন্তব্যের লিঙ্ক বৃহষ্পতিবার, 21 মে 2015 16:44 লিখেছেন সার্জেন্ট মোঃ নাজমুল কবির (অবঃ)
শেয়ার করলে আপনার ছবিটা আসে না, ছবিটা ছোট করে দেবেন, আপনার মুখটা দেখতে পাই না।
- মন্তব্যের লিঙ্ক বুধবার, 20 মে 2015 17:13 লিখেছেন সার্জেন্ট মোঃ নাজমুল কবির (অবঃ)
পলাশের গল্প ভালো লেগেছে, মরার পর মানুষের প্রতি মানুষের দরদ কমে যায়। এটা বাস্তত সত্য
মন্তব্য করুন
Make sure you enter all the required information, indicated by an asterisk (*). HTML code is not allowed.